শুধু অগস্ট মাসেই ৩২ কোটি টাকার বেশি করোনা বিধি ভঙ্গের জরিমানা আদায় হয়েছে দিল্লিতে। ছবি সংগৃহীত
করোনাকে আর তেমন ভয় পাচ্ছেন না দিল্লির মানুষ। সংক্রমণের ধাক্কা কিছুটা কমতেই করোনা বিধি বেমালুম ভুলতে বসেছেন তাঁরা। দিল্লি পুলিশের রেকর্ড অন্তত তা-ই বলছে। জানা গিয়েছে, গত দু’মাসে রাজধানীতে করোনা বিধিভঙ্গের ঘটনা মাত্রা ছাড়িয়েছে। করোনা বিধি না মানার জরিমানা হিসেবে শুধু জুলাই এবং অগস্ট মাসে ৬৮.৫ কোটি টাকা আদায় করেছে দিল্লি পুলিশ।
করেনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে মহারাষ্ট্রের পর দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছিল দিল্লিতেই। অথচ তার কয়েক মাসের মধ্যেই করোনার রক্ষাকবচের প্রতি রাজধানীর বাসিন্দাদের এমন অবহেলা দেখে অবাকই হচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন এই আচরণ আসন্ন বিপদের সূচনা নয় তো!
দিল্লি পুলিশের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শুধু অগস্ট মাসেই ৩২ কোটি টাকার বেশি করোনা বিধি ভঙ্গের জরিমানা আদায় হয়েছে। এর মধ্যে দূরত্ব বিধি বজায় না রাখা, নিয়ম না মেনে জমায়েত করার মতো বিধিভঙ্গের মামলা হয়েছে দেড় লক্ষ। আর তা থেকে জরিমানা এসেছে ২৬.৭ কোটি টাকা। করোনার রক্ষাকবচ না নেওয়ায় হাতে নাতে ধরা হয়েছিল ২৯ হাজার ১০০ জনকে। তাঁদের থেকেও জরিমানা বাবদ ৫.৬ কোটি টাকা আদায় করেছে দিল্লি পুলিশ। জুলাই মাসে জরিমানার অঙ্ক আরও বেশি ছিল। দিল্লি পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, জুলাইয়ে চালান বাবদ ৩৬. ২ কোটি টাকা আদায় করা হয়েছিল। অথচ মে এবং জুন মাসে পরিস্থিতি এতটা খারাপ হয়নি। জরিমানা বাবদ মে এবং জুনে যথাক্রমে ১৫ কোটি এবং ২৫ কোটি টাকা আদায় হয়েছিল দিল্লিতে। দিল্লিবাসীর করোনা সুরক্ষা না মানার প্রবণতা উদ্বেগের বলেই মনে করছেন স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষকেরা।
টিকাকরণ প্রক্রিয়া পুরোদমে চালু করার পর দিল্লিতে এই মুহূর্তে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা অনেকটাই কম। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া তথ্য বলছে, দিল্লিতে এখন ৪১৫ জন সক্রিয় রোগী রয়েছেন। কোভিড থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার হারও বেশ ভাল। গত ২৪ ঘণ্টায় কেউ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাননি। তবে পরিসংখ্যান এ-ও বলছে গত দু’দিনে দৈনিক সংক্রমণ খুব ধীরে হলেও ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দিল্লিতে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৩৬ জন। এই পরিস্থিতিতে মাস্ক না পরা বা দূরত্ব বিধি বজায় না রাখার মতো অসাবধানতা চলতে থাকলে সংক্রমণ আবার বাড়তে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বস্তুত, এই পরিস্থিতিতে দিল্লি পুলিশের দেওয়া পরিসংখ্যান কিছুটা চিন্তাই বাড়িয়েছে স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষকদের।