Air Pollution

বাতাসের বিষে আয়ুক্ষয়, শীর্ষে দিল্লি-কলকাতা

শহরগুলির মধ্যে প্রথমে রয়েছে দিল্লি এবং তার পরেই কলকাতা। দুই শহরে বাসিন্দাদের আয়ু যথাক্রমে সাড়ে নয় এবং সাড়ে আট বছর করে কমছে বলেও রিপোর্টে বলা হয়েছে।

Advertisement

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২০ ০৪:০৩
Share:

প্রতীকী ছবি

বায়ুদূষণের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয়দের গড় আয়ু কমছে প্রায় ৫ বছর। সম্প্রতি শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউটের গবেষকেরা এই তথ্য বের করেছেন। তবে এই হিসেব বের করা হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত বায়ুদূষণের মাত্রা ধরে। দেশের জাতীয় সূচকের নিরিখে আয়ুষ্কাল কমছে প্রায় ৩ বছর। মার্কিন বিজ্ঞানীদের গবেষণায় উঠে এসেছে, দেশের মধ্যে রাজ্য় হিসেবে সব থেকে খারাপ হাল উত্তরপ্রদেশের। সেখানে গড় আয়ু কমছে প্রায় সাড়ে আট বছর।

Advertisement

শহরগুলির মধ্যে প্রথমে রয়েছে দিল্লি এবং তার পরেই কলকাতা। দুই শহরে বাসিন্দাদের আয়ু যথাক্রমে সাড়ে নয় এবং সাড়ে আট বছর করে কমছে বলেও রিপোর্টে বলা হয়েছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, বাতাসে কার্বন কণা এবং অন্যান্য বিষাক্ত উপাদান শুধু ফুসফুসের ক্যান্সার, শ্বাসনালীর রোগের মতো দুরারোগ্য ব্যাধি তৈরি করে না, রক্তে মিশে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের উপরে প্রভাব ফেলে এবং সেগুলির কর্মক্ষমতা হ্রাস করে।

বস্তুত, এ দেশে বায়ুদূষণের সমস্যা নিয়ে বারবারই দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন পরিবেশকর্মীরা। দেশের রাজধানী শহর দিল্লিতে বায়ুদূষণের বিপদ চাক্ষুষও করেছেন দেশবাসী। কলকাতাতেও বায়ুদূষণ নিয়ে রীতিমতো সরব পরিবেশকর্মীরা। বায়ুদূষণের দাপট কমাতে ন্যাশনাল ক্লিন এয়ার প্রোগ্রাম (এনসিএপি) ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। পশ্চিমবঙ্গের এনসিএপি-র নোডাল সায়েন্টিস্ট অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘দেশের বায়ুদূষণের উৎস চিহ্নিত করে তা দ্রুত ৩০-৪০ শতাংশ কমানোই লক্ষ্য। বায়ুদূষণ কমলে মানুষের গড় আয়ু বাড়বে এটা বিভিন্ন গবেষণাতেই দেখা গিয়েছে।’’ মার্কিন গবেষকেরাও বলছেন, ভারতীয় রাজ্য ও শহরগুলি যদি জাতীয় মাত্রাতেও দূষণ বাঁধতে পারে তা হলেও আয়ুক্ষয় ঠেকানো সম্ভব।

Advertisement

পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য বিজ্ঞানী স্বাতী নন্দী চক্রবর্তী পথেঘাটে দূষণের পাশাপাশি বাড়িঘরের ভিতরের দূষণের কথাও তুলে ধরছেন। তিনি বলছেন, ‘‘লকডাউনে গাড়িঘোড়া কম চলায় দূষণ কমেছে ঠিকই। কিন্তু আমাদের দেশে দরিদ্র মানুষেরা কাঠ, কয়লার মতো জ্বালানি ব্য়বহার করেন। তার থেকে যে ধোঁয়া বেরোয় তা কিন্তু আয়ুর উপরে অনেক বেশি প্রভাব ফেলে।’’ তাঁর মতে, ঘরের ভিতরের বায়ুদূষণ নিয়ে সার্বিক ভাবে সচেতনতা কম এবং তা ঠেকাতে পরিকাঠামোগত উন্নতির উপরেও অনেক কম জোর দেওয়া হচ্ছে। আয়ু বাড়াতে হলে এ দিকেও সমান নজর প্রয়োজন।

রিপোর্টটি শুধু ভারত নয়, পুরো বিশ্বের নিরিখে তৈরি করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বায়ুতে ক্রমবর্ধমান বিষকণার জেরে পৃথিবীতে মানুষের গড় আয়ু গড়ে ২ বছর করে কমছে। এই গবেষণায় বিভিন্ন দেশের বায়ুদূষণের তথ্য একটি সূচক বা ইনডেক্স তৈরি করা হয়েছে। সেই সূচকের স্রষ্টা এবং শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক মাইকেল গ্রিনস্টোনের মতে, বর্তমানে করোনাভাইরাসের সমস্যাকে পৃথিবীতে যেমন গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে, বায়ুদূষণের বিপদও তার থেকে কম নয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement