তিলোত্তমা কলকাতা। ছবি- শাটার্স স্টক
বিভিন্ন রিপোর্টে দাবি করা হচ্ছে, আগামী পঞ্চাশ বছরের মধ্যেই বিশ্বের প্রায় এক কোটি মানুষ গ্রাম বা মফঃস্বল ছেড়ে বড় শহরে বসতি স্থাপন করতে পারেন। তার জন্য এই সময়ের মধ্যে বিশ্বের নানা প্রান্তে ১৪টি বড় শহর তৈরির প্রয়োজনীয়তা দেখা দিতে পারে। কিন্তু এই নতুন নগরায়নের ফলে খাদ্য এবং জলসংকট আরও বাড়বে বলে দাবি করা হল একটি রিপোর্টে। মূলত অর্থনীতি এবং শান্তিস্থাপন সংক্রান্ত বিষয়ে কাজ করা একটি সংস্থার তরফে প্রকাশিত ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন শহরে জনসংখ্যা প্রায় ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে চলেছে। এর ফলে শহরগুলি সুস্থ জীবনযাপন করার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলি থেকে বঞ্চিত হবে। খাদ্য এবং জলের জোগান, অপরাধের হার-সহ মোট পাঁচটি মানদণ্ডে ‘অস্থির’ শহরগুলির ভবিষ্যত অবস্থা পর্যালোচনা করে দেখেছে সমীক্ষক সংস্থা। শহরগুলির তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা, পাকিস্তানের লাহোর, ভারতের দিল্লি, কলকাতা এবং আমদাবাদ।
রিপোর্টে এ-ও বলা হয়েছে, সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতির শিকার হবে, আফ্রিকার সাহারা মরুভূমি সংলগ্ন অঞ্চলগুলি। তারপরেই থাকবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার শহরগুলি। তার কারণও ব্যাখা করেছে সমীক্ষক সংস্থাটি। তাদের তরফে স্টিভ কিলিলিয়া বলেন, আগামী ৫০ বছরে নগরায়ন, শহরের জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে গোটা বিশ্বই মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এই দু’টি অঞ্চল। স্টিভের মতে, বিশ্বের এই শহরগুলিতে মূলত স্বল্প উপার্জনের মানুষেরা বাস করেন। তাই পরিবর্তিত জলবায়ুর সঙ্গে লড়াই করার জন্য আর্থিক এবং সামাজিক যে রসদ প্রয়োজন, তা জোগাড় করতে সক্ষম হবেন না এই শহরের বাসিন্দারা। ফলে এই শহরগুলিতে খাদ্য সংকট, অপরাধের হার, সামাজিক বৈষম্য বাড়বে বলে দাবি করেছেন তিনি।
রিপোর্টে সব চেয়ে ‘অস্থির’ এবং ‘ভারসাম্যহীন’ শহর বলা হয়েছে কঙ্গোর কিনশাসাকে। তালিকার একদম উপর দিকে রয়েছে কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবি, নাইজেরিয়ার লাগোস। এই সব শহরগুলিতে অর্ধ শতকের মধ্যে জনসংখ্যার হার ৮০ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে বলে দাবি করা হয়েছে। তবে প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর আফ্রিকার দেশগুলি কিছু ক্ষেত্রে পরিবর্তিত জলবায়ুর সঙ্গে লড়াই করতে পারে বলে আশার কথা শোনানো হয়েছে। তবে কলকাতার মতো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার শহরগুলিকে নিয়ে ‘উদ্বেগ’ প্রকাশ করা হয়েছে এই রিপোর্টে।