ভাগ্য ফিরিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। ছবি: টুইটার
সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে এখন খুবই পরিচিত 'বাবা কি ধাবা'-র দম্পতি। সম্প্রতি বৃদ্ধ-বৃদ্ধার জীবনটাই বদলে গিয়েছে। করোনাকালে ধাক্কা খাওয়া ধাবার ব্যবসা আবার জমে উঠেছে। এ বার অনেক দিনের চোখের সমস্যা থেকেও মুক্তি মিলতে চলেছে। দিল্লির একটি হাসপাতাল বিনামূল্যে তাঁদের চোখের চিকিৎসার উদ্যোগ নিল। কান্তা প্রসাদ এবং বাদামি দেবীর একটি করে চোখের ছানি অপারেশন ঠিকঠাক হয়েছে বলে টুইট করে জানিয়েছে শার্প সাইট আই হসপিটাল। অন্য চোখের অপারেশনও হবে খুব তাড়াতাড়ি।
উত্তর দিল্লির মালব্য নগরের শিবালিক কলোনি। এখনেই এক হনুমান মন্দিরের উল্টো দিকে রয়েছে 'বাবা কি ধাবা'। আশি বছরের কান্তা প্রসাদ স্ত্রী বাদামি দেবীকে নিয়ে এই দোকানটা চালান প্রায় ৩০ বছর ধরে। ডাল, ভাত, সবজি, পরোটা। মেনু যেমন কম, দামও কম। মোটামুটি ৩০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে খাওয়া যায় ছোট্ট এই দোকানে। আর সেই দোকান চালিয়ে সংসারও চলে যাচ্ছিল বৃদ্ধ-বৃদ্ধার। কিন্তু লকডাউন মুশকিলে ফেলে দেয়। বেশ কিছু দিন বন্ধ থাকার পরে চালু হলেও তেমন ক্রেতাই জুটছিল না।
সম্প্রতি গৌরব ভাসান নামে এক ফুড ব্লগার কান্তা প্রসাদের দোকানে আসেন এবং ভিডিয়ো করেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলতে বলতেই চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি বৃদ্ধ। বলেন, সারাদিনে আয় খুব জোর ৫০ টাকা। দেখান, বাক্সে মাত্র কয়েকটা ১০ টাকার নোট। কাঁদতে কাঁদতে কথা বলার ভিডিয়োটাই ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। ভিডিয়োটি টুইটারে প্রথম পোস্ট করেন বসুন্ধরা তনখা শর্মা নামে এক মহিলা। এর পরে সেটা ছড়িয়ে পড়তে থাকে। তার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেন্ডিং হয়ে যায় ভিডিয়োটি। রবিনা টন্ডন, রনদীপ হুড়া, স্বরা ভাস্কর, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, সোনাম কপূর, সুনীল শেট্টি-সহ অনেক সেলিব্রিটিও শেয়ার করেন ভিডিয়োটি। সকলেই সকলকে মালব্য নগরের হনুমান মন্দিরের উল্টো দিকে 'বাবা কি ধাবা'-য় যাওয়ার আমন্ত্রণ জানাতে থাকেন। ভিডিয়ো দেখে ধাবায় চলে আসেন দিল্লির ক্ষমতাসীন আম আদমি পার্টির বিধায়ক সোমনাথ ভারতী। এর পরেই জমে ওঠে 'বাবা কি ধাবা'। বাড়ি বাড়ি রেস্তরাঁর খাবার পরিবেশনকারী সংস্থা জোমাটোও পাশে দাঁড়ায়। সংস্থা জানায়, 'বাবা কি ধাবা' এ বার জোমাটোর তালিকায় থাকবে। শুধু তাই নয়, ডেটিং অ্যাপ টিন্ডার ইন্ডিয়াও ডেট ডেস্টিনেশন হিসেবে 'বাবা কি ধাবা'-র নাম রেকমেন্ড করে।
আরও পড়ুন: শুরুর দিকে ফল না-ও মিলতে পারে, করোনা টিকার কার্যকারিতা নিয়ে সন্দিহান ব্রিটেন
এখানেই থামেনি এই দম্পতির ভাগ্য ফেরার কাহিনি। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে জানতে পেরেই তাঁদের চোখের ছানি অপরেশনের উদ্যোগ নেন সমীর সুদ নামে এক চিকিৎসক। তিনিই দায়িত্ব নিয়ে কান্তা প্রসাদ ও বাদামি দেবীর একটি করে চোখের অপারেশন করেন। বসানো হয়েছে ইন্ট্রা অকুলার লেন্স।