Delhi High Court

আয় করতে পারেন অথচ কাজ করেন না, সেই স্ত্রী বিচ্ছেদের পর খোরপোশ চাইতে পারেন না: আদালত

আদালতে মামলাকারীর আইনজীবী জানান, মাসিক ৩০ হাজার টাকা করে তাঁর মক্কেলকে খোরপোশ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই অঙ্ক অনেক বেশি। তাঁর মক্কেলের অনেক দায়িত্ব।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৩ ১৫:২৮
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

আয় করতে পারেন। তাঁর সেই যোগ্যতা আছে অথচ কোনও চাকরি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এমন স্ত্রীরা বিচ্ছেদের পর স্বামীর কাছে খোরপোশ দাবি করতে পারেন না। একটি মামলার শুনানিতে এমনই পর্যবেক্ষণ দিল্লি হাই কোর্টের। আদালত বলে, যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও কোনও স্বামী বা স্ত্রীর আর্থিক বিষয়ে সঙ্গীর বোঝা হওয়া উচিত নয়।

Advertisement

সম্প্রতি দিল্লি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এক যুবক। পরিবার আদালতে তাঁর বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছে। বিচারক নির্দেশ দিয়েছেন, মামলার নিষ্পত্তি হওয়া পর্যন্ত স্বামীকে খোরপোশ দিতে হবে। এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে যান যুবক। তাঁর যুক্তি, তাঁর স্ত্রী উচ্চশিক্ষিতা। তিনি আগে চাকরি করতেন। কিন্তু এখন কোনও কাজ করেন না। ইচ্ছে করলে তিনি নিজেই আয় করতে পারেন। তা ছাড়া যে পরিমাণ অর্থ খোরপোশ হিসাবে তাঁকে দিতে বলা হচ্ছে, সেটা তাঁর পক্ষে যথেষ্ট বেশি।

আদালতে মামলাকারীর আইনজীবী জানান, মাসিক ৩০ হাজার টাকা করে তাঁর মক্কেলকে খোরপোশ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই অঙ্ক অনেক বেশি। তার পর আদালতে তিনি তথ্য দিয়ে জানান, তাঁর মক্কেলের স্ত্রী দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক। পরে তিনি একটি হাসপাতালের রিসেপশনে কাজ করতেন। বেতন পেতেন ২৫ হাজার টাকার আশপাশে। অন্য দিকে, তাঁর মক্কেলের মাসিক বেতন ৫৬,৪৯২ টাকা। তাঁর বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা আছেন। বোনেরা রয়েছেন। তাঁদের সবার দায়িত্ব নিতে হয়। তা ছাড়া, একটি ঋণ রয়েছে। মাসে মাসে তার সুদ গুনতে হয়। এমতাবস্থায় কী ভাবে তাঁর মক্কেল এতগুলি টাকা দেবেন?

Advertisement

অন্য দিকে, মহিলার পক্ষের আইনজীবী আদালতে দাবি করেন, তাঁর মক্কেল সমাজকর্মী হিসাবে কাজ করেন। কিছু দিন যে হাসপাতালে কাজ করতেন, সেখান থেকে কোনও পারিশ্রমিক তিনি নেননি। দুই পক্ষের সওয়াল এবং জবাবের পর ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, পরিবার আদালত খরপোশের যে অঙ্ক দিতে বলেছে, তার সপক্ষে কোনও যুক্তি দেওয়া হয়নি। তা ছাড়া ওই যুবককে পারিবারের অন্য সদস্যদের ভার নিতে হয়। এর পর হাই কোর্ট বলে, ‘‘স্বামী বা স্ত্রী উপার্জনে সক্ষম। কিন্তু তিনি চাকরি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং বিচ্ছেদের পর প্রাক্তন সঙ্গীর কাছে খোরপোশ চাইছেন, এটা সমীচীন নয়।’’

পরে দুই পক্ষের অবস্থা বিবেচনা করে ৩০ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে খোরপোশের অঙ্ক ২১ হাজার করে আদালত। তবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি এবং মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে প্রতি বছর এই খোরপোশের অঙ্কের সঙ্গে দেড় হাজার টাকা যোগ হবে বলে জানিয়েছে আদালত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement