Delhi High Court

সিএজি নিয়ে কোর্টে ভর্ৎসনায় অস্বস্তিতে আপ

ভোটের মুখে হাই কোর্টের ভর্ৎসনায় অস্বস্তিতে আপ নেতৃত্ব। পাল্টা রণকৌশলে প্রথমে জাঠেদের সংরক্ষণ দাবি করে সরব হন ও পরে বিকালে নির্বাচন কমিশনের কাছে গিয়ে প্রচারের অভিমুখ ঘোরানোর কৌশল নেন কেজরী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:৪০
Share:

— প্রতীকী চিত্র।

আবগারি দুর্নীতি পিছু ছাড়ছে না আম আদমি পার্টি নেতৃত্বের। এই দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার অভিযোগে ইতিমধ্যেই জেলে দীর্ঘ সময় কাটাতে হয়েছে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল ও উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়াকে। এ বার সেই আবগারি নীতি সংক্রান্ত কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) রিপোর্ট কেন দিল্লি বিধানসভায় সময়ে পেশ করা হয়নি, তা নিয়ে দিল্লি সরকারকে আজ তিরস্কার করেছে দিল্লি হাই কোর্ট। রিপোর্ট বিধানসভায় জমা না দেওয়ার পিছনে আপ নেতৃত্বের প্রকৃত মনোবাসনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে হাই কোর্ট। বিজেপি সূত্রের দাবি, ওই রিপোর্টে যা অভিযোগ রয়েছে, তা প্রমাণ হলে কেজরীওয়ালের দীর্ঘ কারাবাস নিশ্চিত। পাল্টা কৌশলে আজ দিল্লির জাঠ সমাজ কবে ওবিসি সংরক্ষণের সুযোগ পাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কেন্দ্রকে আক্রমণ শানিয়েছেন কেজরীওয়াল।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন আমলাদের আপত্তি সত্ত্বেও ত্রুটিপূর্ণ আবগারি নীতি তৈরি করার অভিযোগ উঠেছে কেজরীর বিরুদ্ধে। পরে সেই নীতি বাতিল হলেও ত্রুটিপূর্ণ নীতি, স্বজণপোষণ-সহ একগুচ্ছ অভিযোগে প্রথমে জেলে যান অর্থমন্ত্রী মণীশ ও তার পরে মুখ্যমন্ত্রী কেজরী। পরে অবশ্য জামিনে মুক্তি পান দু’জনেই। এ বার সেই আবগারি নীতি সংক্রান্ত সিএজি রিপোর্ট কেন সময়ে বিধানসভায় পেশ করা হয়নি, সে প্রশ্ন তুলল দিল্লি হাই কোর্ট। ওই রিপোর্ট পেশে দেরি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন বিজেপির সাত বিধায়ক। আজ সেই মামলায় আদালত বলে, দিল্লি সরকারের উচিত ছিল সময়ে রিপোর্ট বিধানসভার স্পিকারের কাছে জমা দেওয়া। কিন্তু যে ভাবে রিপোট পেশ করা নিয়ে সময় নষ্ট করা হয়েছে, তাতে সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। বিজেপি নেতা সুধাংশু ত্রিবেদী বলেন, ‘‘আপ নেতারা কি নিজেদের সংবিধানের চেয়ে বড় ভাবতে শুরু করেছেন? কোনও নিয়ম যে মানা হয়নি তা দিল্লি হাই কোর্টের বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট।’’

ভোটের মুখে হাই কোর্টের ভর্ৎসনায় অস্বস্তিতে আপ নেতৃত্ব। আজ পাল্টা রণকৌশলে প্রথমে জাঠেদের সংরক্ষণ দাবি করে সরব হন ও পরে বিকালে নির্বাচন কমিশনের কাছে গিয়ে প্রচারের অভিমুখ ঘোরানোর কৌশল নেন কেজরী। দিল্লির সত্তরটি আসনের মধ্যে অন্তত কুড়ি থেকে পঁচিশটি আসনে জাঠ সমাজ নির্ণায়ক শক্তি। তাঁদের ভোট নিশ্চিত করতে আজ জাঠেদের ওবিসি সংরক্ষণ দেওয়ার বিষয়টি কেন কেন্দ্র মেনে নিচ্ছে না, তা নিয়ে সরব হন কেজরী। লক্ষ্য ওবিসি সংরক্ষণের মতো বিষয়টি তুলে ধরে জাঠেদের সমর্থন নিজেদের পক্ষে আনা।

Advertisement

এর সঙ্গেই আজ বিকালে নির্বাচন কমিশনে গিয়ে আপের আহ্বায়ক কেজরী অভিযোগ করেন, তাঁর নয়াদিল্লি কেন্দ্রের ভোটারদের প্রভাবিত করতে বিজেপি প্রার্থী প্রবেশ বর্মা মদ, নগদ অর্থ ছাড়াও বিছানার চাদর, জুতো, সানগ্লাস বিতরণ করছেন। কমিশনের কাছে তিনি অভিযোগ করেন, এ ধরনের খয়রাতি বিতরণের ঘটনা সম্পর্কে জেলাশাসক অবহিত থাকলেও তিনি কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য কমিশনের কাছে আবেদন
করেন কেজরী।

কমিশনের কাছে এ দিন সার্বিক ভাবে ভোটার তালিকায় কারচুপি নিয়েও সরব হন কেজরী। পাশাপাশি পটপরগঞ্জের আপ প্রার্থী অবধ ওঝা তাঁর নাম উত্তরপ্রদেশের গ্রেটার নয়ডার ভোটার তালিকার পরিবর্তে দিল্লির পটপরগঞ্জের ভোটার তালিকায় পরিবর্তন করার দাবি করেছিলেন। ওই আবেদন দীর্ঘ সময় ধরে আটকে থাকায় তিনি পটপরগঞ্জ কেন্দ্র থেকে মনোনয়ন জমা দিতে পারছিলেন না।

আজ কমিশন কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে তদ্বির করেন আপ নেতৃত্ব। পরে কেজরী দাবি করেন, ‘‘কমিশন একটি নির্দেশিকা জারি করে ওঝার ভোট গ্রেটার নয়ডার পরিবর্তে পটপরগঞ্জের তালিকায় তোলার অনুমতি দিয়েছে। এর ফলে অবধ ওঝার প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমার প্রশ্নে কোনও অসুবিধা রইল না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement