ছট পুজোর অনুষ্ঠানে বিধিনিষেধের প্রতিবাদে দিল্লি বিজেপির সদস্যেরা। বুধবার নয়াদিল্লির যমুনা ঘাটে। ছবি: পিটিআই।
করোনা আবহে দিল্লিতে নদী ও অন্য জলাশয়গুলিতে ছটপুজো নিষিদ্ধ করেছে অরবিন্দ কেজরীবালের সরকার। এ নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছে বিজেপি। এই প্রেক্ষাপটেই আজ কেজরীবাল সরকারের পদক্ষেপকে খারিজ করতে রাজি হল না দিল্লি হাইকোর্ট। আদালত বলেছে, দিল্লিতে করোনার তৃতীয় ঢেউ চলছে। এই সময়ে বড় জমায়েত হলে করোনা আরও ব্যাপক ভাবে ছড়াতে পারে। এই সংক্রান্ত মামলাটি সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন বিচারপতিরা।
করোনা পরিস্থিতিতে ছটপুজোর সময়ে নদী, পুকুর ও অন্য জলাশয়গুলিতে লোকসমাগম আটকাতে বিভিন্ন রাজ্য সরকার বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। কেজরীবাল সরকার নির্দেশ দিয়েছে, দিল্লিতে নদী কিংবা অন্য জলাশয়, মন্দির অথবা সর্বসাধারণের ব্যবহারের জায়গায় ছটপুজো করা যাবে না। আম আদমি পার্টির সরকারের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছে বিজেপি। দলের পূর্বাঞ্চল মোর্চা এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে কেজরীবালের বাড়ির বাইরে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। আপ নেতারা অবশ্য কটাক্ষ করে বলছেন, ছট উৎসব পালন করতে বিজেপিকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের অনুমতি নিয়ে আসতে হবে। তা হলেই উৎসবের যাবতীয় ব্যবস্থা করে দেবে দিল্লি সরকার।
এই পরিস্থিতিতে ছটে বিধিনিষেধ আরোপকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে গিয়েছিল ‘দুর্গা জনসেবা ট্রাস্ট’। ছটে অন্তত এক হাজার মানুষের জমায়েতের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছিল তারা। বিচারপতি হিমা কোহলি ও বিচারপতি সুব্রহ্মণ্যম প্রসাদের বেঞ্চ মামলাকারীর উদ্দেশে বলেছে, ‘‘দিল্লি সরকার বিয়েতে ৫০ জনের বেশি জমায়েতের ছাড়পত্র দিচ্ছে না। আর আপনারা মাত্র ১০০০ জনের অনুমতি চাইছেন। কী ভাবে?’’ বিচারপতিরা জানিয়ে দেন, ছটের বিধিনিষেধ নিয়ে দিল্লির বিপর্যয় মোকাবিলা কতৃপক্ষ যে নির্দেশ দিয়েছে, তা বাস্তব পরিস্থিতি মেনেই হয়েছে। বিচারপতিরা মামলাকারীকে বলেন— মনে হচ্ছে, আপনারা কোভিড পরিস্থিতির মধ্যে বসবাস করছেন না।
দিল্লি সরকার কড়া অবস্থান নিলেও উত্তরপ্রদেশে নদী ও অন্য জলাশয়ে ছটপুজোয় নিষেধাজ্ঞা নেই। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ অবশ্য বাড়ির ভিতরে থেকেই ছটপুজো করার জন্য মানুষের কাছে আর্জি জানিয়েছেন। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারও ছট উৎসবের সময়ে করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রাখতে জনগণের উদ্দেশে আহ্বান জানিয়েছেন।
তবে ঝাড়খণ্ডে হেমন্ত সোরেনের সরকার প্রথমে নদী, জলাশয়গুলিতে ছটপুজো নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিলেও এখন তা থেকে সরে এসেছে। এ ব্যাপারে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সরকারের উপর চাপসৃষ্টি করেছিল। মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, কনটেনমেন্ট জ়োনের বাইরে যে কোনও জলাশয়ে ছটপুজো করা যাবে। তবে সেই সময়ে করোনা-বিধি মেনে চলতে হবে। তবে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যবাসীর কাছে আর্জি জানিয়েছেন, তাঁরা যেন বাড়িতে থেকে ছট উৎসব পালন করেন। ঝাড়খণ্ড সরকার অবশ্য ছট উপলক্ষে জলাশয়ের পাশে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা, স্টল তৈরি, বাজি পোড়ানোতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেনি।
মুম্বইয়ে সমুদ্র, নদী কিংবা জলাশয়ের পাশে ছটের সময়ে জমায়েতে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।