হামলায় নিহত আপ কর্মী অশোক মান (চিহ্নিত)।
দিল্লিতে বিপুল জয়ের উচ্ছ্বাসে যখন ভাসছিল আম আদমি পার্টি (আপ) ও তার দলের কর্মী-সমর্থকরা, ঠিক তখনই এল দুঃসংবাদটা। মঙ্গলবার রাতে তখন সাড়ে ১০টা। আপ বিধায়ক নরেশ যাদবের কনভয় লক্ষ্য করে পর পর কয়েক রাউন্ড গুলি চালায় এক দুষ্কৃতী। সেই হামলাতেই মৃত্যু হয় বিধায়কের গাড়িতে থাকা এক কর্মীর। যদিও বরাতজোরে বেঁচে গিয়েছেন নরেশ।
এই ঘটনায় এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দক্ষিণ-পূর্ব দিল্লি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার ইঙ্গিত প্রতাপ সিংহ জানিয়েছেন, হামলাকারী এক জনই ছিল। আটক হওয়া ওই ব্যক্তিকে জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে যে, নরেশ যাদব নয়, হামলার লক্ষ্য ছিলেন অশোক মান। পুলিশের দাবি, ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরেই এই হামলা। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। পরে ঘটনাস্থল থেকে ৫-৬টি কার্তুজের খোলও উদ্ধার করে পুলিশ।
ঠিক কী হয়েছিল?
মেহরাউলি থেকে এ বারের ভোটে জিতেছেন নরেশ যাদব। জয় নিশ্চিত হওয়ার পরই তিনি কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে দক্ষিণ দিল্লির কিষাণগড়ের একটি মন্দিরে পুজো দিতে গিয়েছিলেন। হুডখোলা একটি গাড়িতে চেপে মন্দিরে গিয়েছিলেন নরেশ। তাঁর ঠিক পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন অশোক মান নামে ওই কর্মী। রাত তখন সাড়ে ১০টা। পুজো দিয়ে ফেরার সময় আচমকাই ভিড়ের মধ্যে থেকে এক দুষ্কৃতী বিধায়কের গাড়ি লক্ষ্য করে পর পর গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় অশোকের। আরও এক জন কর্মী আহত হন। সম্পর্কে তিনি অশোক মানের ভাইপো। তবে এই হামলায় অল্পের জন্য বেঁচে যান নরেশ।
আরও পড়ুন: বিভাজনকে হারিয়ে জন-প্রিয়তার রাজনীতির জয় দিল্লিতে
আরও পড়ুন: ‘শাহ-হীন বাগে’র মঞ্চে প্রতিবাদী মৌনব্রত
এখানেই বিধায়কের কনভয়ের উপর গুলি চলে।
দলের এক কর্মীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে আপ। দলের তরফ থেকে টুইট করে বলা হয়, “আজ আমরা পরিবারের এক সদস্যকে হারালাম। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি।” নরেশ যাদব এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “ঘটনাটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। জানি না এই হামলার পিছনে কী কারণ রয়েছে। ৪ রাউন্ড গুলি চলেছে। যে গাড়িতে আমি ছিলাম, সেই গাড়ি লক্ষ্য করেই হামলা চালানো হয়েছে। এই ঘটনায় আমারও মৃত্যু হতে পারত! আমি নিশ্চিত পুলিশ যদি সঠিক তদন্ত করে তা হলে হামলাকারীকে চিহ্নিত করতে পারবে।”
এই ঘটনার পর রাজধানীর আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আপ নেতা সঞ্জয় সিংহ। তিনি বলেন, “অশোক মানের মৃত্যু এবং নরেশ যাদবের কনভয়ের উপর হামলাই প্রমাণ করে দিচ্ছে দিল্লির আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কতটা অবনতি হয়েছে।”
মঙ্গলবার ছিল দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগণনার দিন। ৬২টি আসন পেয়ে বিপুল ভাবে জয়ী হয়েছে আম আদমি পার্টি। মাত্র ৮টি আসন পেয়ে ধরাশায়ী হয়েছে বিজেপি।