ছবি: এএফপি।
রাজধানীতে শূন্য হাতে কংগ্রেস। আর ‘যুদ্ধ’ শুরু দলে। আগুন থামাতে আসরে নামলেন রাহুল গাঁধী।
হ্যাটট্রিক করা অরবিন্দ কেজরীবালকে অভিনন্দন জানাতে গত কালই টুইট করেন রাহুল। কেজরীবালকে ফোনও করেন সনিয়া গাঁধী। মেরুকরণের চেষ্টাকে হারিয়ে দেওয়ার জন্য পি চিদম্বরমও টুইটে ‘স্যালুট’ জানিয়েছেন দিল্লিবাসীকে। কিন্তু টুইটারে সেই চিদম্বরমকেই নিশানা করেছেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কন্যা ও কংগ্রেস নেত্রী শর্মিষ্ঠা। চিদম্বরমের উদ্দেশে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘বিজেপিকে হারানোর কাজ কী আউটসোর্স করে দিয়েছে কংগ্রেস? যদি ‘না’ হয়, তা হলে কংগ্রেসের বিপর্যয়ে উদ্বেগ না দেখিয়ে কেন আপ-এর জয়ে উৎসাহিত হচ্ছি? আর যদি ‘হ্যাঁ’ হয়, তা হলে তো প্রদেশ কংগ্রেস তুলে দিলেই হয়।’’ তরজা এখানেই শেষ হয়নি। এআইসিসি নেতা পি সি চাকো পাঁচ বছর ধরে দিল্লির দায়িত্বে। কিন্তু কংগ্রেসের হারের দায় আজ তিনি চাপিয়ে দেন প্রয়াত নেত্রী শীলা দীক্ষিতের উপর। বলেন, ‘‘২০১৩ সালে শীলা দীক্ষিত মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময়েই কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্ক চলে যায় আপের কাছে।’’ মুম্বই থেকে তাঁকে পাল্টা আক্রমণ করেন নবীন নেতা মিলিন্দ দেওরা। বলেন, ‘‘দিল্লির পরিবর্তনের মুখ শীলা দীক্ষিত। মৃত্যুর পর তাঁর সম্পর্কে এমন কথা দুর্ভাগ্যের।’’ শীলার দীর্ঘ দিনের সহযোগী এবং বর্তমানে কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরা পরিসংখ্যান দিয়ে দেখান, শীলা থাকার সময় কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্ক ছিল ২৪%। তিনি দায়িত্ব থেকে সরার পরেই তাতে ধস নামে।
আরও পড়ুন: চুক্তি হলেই এনআরসি তথ্য ওয়েবসাইটে ফেরাবে উইপ্রো
দিল্লিতে এ বার শীলার নামেই ভোটে লড়েছে কংগ্রেস। অথচ ভোটের সময় তাঁর ছেলে সন্দীপ দীক্ষিতকেই কোণঠাসা করে রাখা হয়েছিল। গত কাল ফলপ্রকাশের পর থেকে কংগ্রেসের পদাধিকারীদের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন তিনিও। পরিস্থিতি দেখে রাহুল গাঁধী হাল ধরেন। দলকে সাংবাদিক বৈঠক করতে বলেন। ইস্তফা দিতে বলেন পদাধিকারীদের। পরে দলের অবস্থান স্পষ্ট করে মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘জয়ের পর কেজরীবালকে সকলেই অভিনন্দন জানাতে পারেন। কিন্তু যে ভাবে কংগ্রেস নেতারা একে অন্যকে দোষারোপ করছেন, তা মঞ্জুর করে না এআইসিসি। নেতারা নিজেদের ভূমিকা ও দায়িত্ব বুঝতে পারলে দোষারোপের পালাও বন্ধ হবে। শীলা দীক্ষিতকে নিয়ে কোনও অভিযোগ বরদাস্ত করা হবে না।’’ এর পরিণতি, তিন নেতা ইস্তফা দিয়েছেন সনিয়া গাঁধীর কাছে। দিল্লিতে প্রচারের দায়িত্বে থাকা কীর্তি আজাদ আগেই জানিয়েছিলেন ইস্তফার কথা। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সুভাষ চোপড়া পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন। চাকোও ইস্তফা দিয়েছেন। রাহুলের তৎপরতায় চাকো, সুভাষদের ইস্তফা দ্রুত গৃহীতও হয়েছে। শক্তি সিংহ গোহিলকে বিহারের পাশাপাশি আপাতত দিল্লির দায়িত্ব দিয়েছেন সনিয়া। উত্তরপ্রদেশে প্রচারে থাকা প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাও দিল্লিতে কংগ্রেসের হার নিয়ে বলেন, ‘‘জনতা যা করে, ঠিক করে। এটা আমাদের লড়াই করার সময়। আমরা করব। হারের পর্যালোচনাও করব।’’ রান্নার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে মহিলা কংগ্রেসকে পথে নামার নির্দেশ দিয়েছেন রাহুল। নরেন্দ্র মোদী ‘সংরক্ষণ-বিরোধী’ বলেও দেশজুড়ে প্রতিবাদ হবে।