(বাঁ দিকে) আপের রাজ্যসভার সাংসদ স্বাতী মালিওয়াল। আপপ্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র ।
আপের রাজ্যসভার সাংসদ স্বাতী মালিওয়ালের শারীরিক নিগ্রহের অভিযোগ নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন আপপ্রধান তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে কেজরী জানিয়েছেন, পুরো ঘটনায় দু’পক্ষের দাবি আলাদা। তাই তিনি আশা করেন যে, পুরো বিষয়টিতে সুষ্ঠু তদন্ত করা হবে এবং ন্যায়বিচার হবে। যদিও কেজরীর এই মন্তব্য নিয়ে তাঁকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি স্বাতী।
কেজরীওয়ালের ব্যক্তিগত সচিব বৈভব কুমারের বিরুদ্ধে মারধর এবং শারীরিক নিগ্রহের অভিযোগ তুলেছিলেন স্বাতী। গত ১৩ মে কেজরীর বাসভবনেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। বৃহস্পতিবার পুলিশের কাছে বৈভবের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়। গত ১৮ মে কেজরীওয়ালের বাসভবন থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তাঁকে দিল্লি পুলিশের হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বৈভবের গ্রেফতারির প্রতিবাদে রবিবার দিল্লির সদর দফতর অভিযানের ডাক দিয়েছিল আপ। তবে স্বাতীর অভিযোগ প্রসঙ্গে মুখ খুলতে দেখা যায়নি কেজরীকে। তিনি ‘ব্যস্ত’ ছিলেন লোকসভা নির্বাচনের প্রচারপর্ব নিয়ে। তবে পিটিআই-এর সঙ্গে সাক্ষাৎকারে কেজরী জানিয়েছেন, পুরো ঘটনাটি বিচারাধীন। তিনি এ বিষয়ে মন্তব্য করলে তদন্ত প্রক্রিয়ায় ‘প্রভাব’ ফেলতে পারে। কেজরীর কথায়, ‘‘তবে আমি আশা করি সুষ্ঠু তদন্ত হবে। ন্যায়বিচার পাওয়া উচিত। ঘটনার দু’পক্ষের আলাদা আলাদা দাবি। পুলিশের উচিত দুটো দিকই তদন্ত করে দেখা।’’
অন্য দিকে, কেজরীর এই মন্তব্যের পর তাঁকে নিশানা করেছেন স্বাতী। এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে স্বাতী লিখেছেন, ‘‘নেতা এবং কর্মীদের আমার বিরুদ্ধে প্ররোচিত করে, আমাকে বিজেপির এজেন্ট বলে, আমার চরিত্রহনন করে, ভুয়ো ভিডিয়ো ফাঁস করে, আমাকে দোষী সাজানোর চেষ্টা করে, অভিযুক্তকে ঘরে ঢুকতে দিয়ে এবং প্রমাণ নষ্ট করতে দিয়ে সেই মুখ্যমন্ত্রী বলছেন অবাধ এবং সুষ্ঠু তদন্ত চান, যাঁর বাড়িতে আমাকে মারধর করা হয়েছিল।’’
উল্লেখ্য, পুলিশ ইতিমধ্যেই কেজরীওয়ালের বাসভবনের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। তদন্তের স্বার্থে একাধিক বার কেজরীওয়ালের বাসভবনে গিয়েছে দিল্লি পুলিশের দল। এমনকি, ফরেন্সিক দলও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে যায়। কিছু সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহও করা হয়েছিল। দিল্লি পুলিশ আদালতে জানায়, কেজরীর বাড়ি থেকে যে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে, তার একাংশ ছিল ‘শূন্য’ (ব্ল্যাঙ্ক)। আদালতে আরও জানিয়েছিল, তারা ডিজিটাল ভিডিয়ো রেকর্ডার হাতে পায়নি। সে কারণে ১৩ মে-র ভিডিয়ো ফুটেজ পরখ করে দেখতে পারেনি তারা। দিল্লিতে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে বসানো সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থাকে পাবলিক ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্ট (পিডব্লিউডি)-এর অধীনে। সেই ফুটেজই সংগ্রহ করা হয়েছে বলে খবর।
স্বাতীর অভিযোগকে হাতিয়ার করে আপের বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছে পদ্মশিবির। পাল্টা বিজেপির বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্র’ করার অভিযোগ তুলছে আপ।