দল থেকে বরখাস্ত হলেন দিল্লিতে বিজেপির যুবমোর্চার সভাপতি বাসু রুখর। — ফাইল ছবি।
দিল্লিতে বিজেপির যুব সংগঠনের সভাপতিকে বরখাস্ত করল দল। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ৪০ দিনের মেয়েকে রাস্তায় ফেলে এসে অপহরণের ‘নাটক’ করার। পুলিশ এবং দলীয় পর্যায়ে তদন্ত করে দেখা যায়, অপহরণ তো দূর অস্ত্, পর পর তিন মেয়ে হওয়ায় ছোট মেয়েকে এ ভাবেই ফেলে দিতে চেয়েছিলেন বরখাস্ত হওয়া যুব সভাপতি বাসু রুখর।
দিল্লি বিজেপির কার্যকরী সভাপতি বীরেন্দ্র সচদেব একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। তাতে বলা হয়েছে, বাসুর প্রাথমিক সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে। তাঁকে পার্টি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। দিল্লিতে বিজেপির সভাপতির সই করা চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘‘আপনার ব্যবহার এবং গতিবিধি দেখে আপনাকে এই মুহূর্ত থেকে দলীয় সমস্ত দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে। আপনাকে দল থেকেও বরখাস্ত করা হচ্ছে।’’
গত বুধবার দিল্লি পুলিশে একটি অভিযোগ দায়ের হয়। তাতে বলা হয়, ঝাণ্ডেওয়ালা মন্দিরের কাছ থেকে দু’জন বাইক আরোহী বাসুর মেয়েকে মায়ের কোল থেকে ছিনিয়ে নেন। পরে শিশুটিকে পাওয়া যায় মরিস নগরের একটি মন্দিরের কাছ থেকে। তদন্তে পাওয়া যায়, শিশুর মা ইচ্ছাকৃত সন্তানকে ফেলে দিয়ে চলে যান। দিল্লি পুলিশের এক অভিজ্ঞ আধিকারিক বলেন, ‘‘ছিনতাই বা অপহরণের কোনও ব্যাপার নেই। শিশুর মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, তিনি নিজেই মেয়েকে ফেলে এসেছিলেন। আসলে দম্পতির তিন মেয়ে। শেষ বার বাসু এবং তাঁর পরিবারের প্রত্যাশা ছিল, এ বার হয়তো ছেলে হবে। কিন্তু ৪০ দিন আগে আবার এক মেয়ের জন্ম দেন বাসুর স্ত্রী।’’
জানা গিয়েছে, পর পর মেয়ে হওয়ার বাসুর পরিবার থেকে স্ত্রীর উপর চাপ দেওয়া হচ্ছিল। কেন ছেলে হল না, তা নিয়েও গঞ্জনা শুনতে হত বাসুর স্ত্রীকে। পরিবারের চাহিদা একটি ছেলের। নিত্য গঞ্জনা সইতে না পেরেই বাসুর স্ত্রী সদ্যোজাতকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে চলে আসেন এবং তার পর অপহরণের নাটক করে পুলিশে অভিযোগ করেন। কিন্তু তদন্তে নেমেই মিথ্যার পর্দাফাঁস করল পুলিশ।
বিজেপি সূত্রে খবর, শুধু পুলিশি তদন্তই নয়, দলীয় পর্যায়েও এ ব্যাপারে তদন্ত করা হয়েছিল। দুই তদন্তের রিপোর্ট খতিয়ে দেখার পর দিল্লিতে বিজেপি যুব মোর্চার সভাপতি বাসুকে দল থেকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।