সুখোই-৩০ এমকেআই যুদ্ধবিমান— ফাইল চিত্র।
লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলএসি) উত্তেজনার আবহে দ্রুত বায়ুসেনার শক্তিবৃদ্ধির দিকে নজর দিচ্ছে কেন্দ্র। বৃহস্পতিবার প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের উপস্থিতিতে ‘প্রতিরক্ষা ক্রয় পর্ষদে’র (ডিফেন্স অ্যাকুইজিশন কাউন্সিল বা ডিএসি) বৈঠকে ৩৩টি নতুন রুশ যুদ্ধবিমান কেনার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। এর মধ্যে ১২টি সুখোই-৩০ এমকেআই মাল্টিরোল এয়ার সুপিরিওরিটি ফাইটার জেট এবং ২১টি মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে এ খবর জানিয়ে বলা হয়েছে, ভারতীয় বায়ুসেনার ৫৯টি মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান আধুনিকীকরণের সিদ্ধান্তও হয়েছে।
রাজনাথের সভাপতিত্বে এদিনের বৈঠকে ভারতীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থার (ডিআরডিও) থেকে ২৪৮টি ‘অস্ত্র’ মিসাইল কেনারও সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে। ৩০০ কিলোমিটার পাল্লার এই ‘এয়ার টু এয়ার’ ক্ষেপণাস্ত্রটি ইলেকট্রো-অপটিক্যাল ট্র্যাকিং সেন্সরের সাহায্যে দৃষ্টিসীমার বাইরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। বর্তমানে ভারতীয় বায়ুসেনার সুখোই-৩০, মিগ-২৯ এবং তেজস যুদ্ধবিমান ‘অস্ত্র’ ব্যবহার করে।
আরও পড়ুন: ওলির ইস্তফার দাবি জোরদার দলে, স্থগিত নেপালের পার্লামেন্টের অধিবেশন
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকে এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এদিন ডিএসি’র বৈঠকে ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্য ১,০০০ কিলোমিটার পাল্লার ‘ক্রুজ’ ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির প্রস্তাবটিও ছাড়পত্র পেয়েছে। ডিআরডিও এই ক্ষেপাণাস্ত্রের নকশা প্রস্তুত করা এবং নির্মাণের দায়িত্ব পাবে। সামরিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের ধারণা, ভারত মহাসাগরে চিনা নৌবহরের সাম্প্রতিক তৎপরতা বৃদ্ধি নজরে রেখেই ভারতীয় নৌবাহিনীর ভাঁড়ারে নয়া ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র অন্তর্ভুক্তির এই উদ্যোগ।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বিবৃতি জানাচ্ছে, যুদ্ধবিমান প্রকল্পে আনুমানিক ব্যয়, ১৮,১৪৮ কোটি টাকা। রাশিয়া থেকে ২১টি মিগ-২৯ কেনা এবং ভারতীয় বায়ুসেনার ৫৯টির আধুনিকীকরণের আনুমানিক খরচ ৭,৪১৮ কোটি। অন্যদিকে, রুশ প্রযুক্তিগত সহায়তায় ১২টি সুখোই-৩০ এমকেআই বানাবে বেঙ্গালুরুর রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ‘হ্যাল’ (হিন্দুস্থান অ্যারোনটিস লিমিটেড)। এই প্রকল্পে ব্যয় হবে ১০,৭৩০ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: মধ্যপ্রদেশে ২৮ মন্ত্রীর শপথ, সিন্ধিয়া অনুগামীরাই বেশি
ডিএসি’র এদিনের বৈঠকে ভারতীয় সেনার জন্য দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি মাল্টি-ব্যারেল রকেট লঞ্চার ‘পিনাকা’ কেনা এবং বিএমপি সিরিজের ‘ইনফ্যান্ট্রি কমব্যাট ভেহিকল’গুলির আধুনিকীকরণের প্রস্তাবও ছাড়পত্র পেয়ে গিয়েছে। সব মিলিয়ে ৩৮,৯০০ কোটি টাকার সমরসম্ভার ক্রয় এবং উৎপাদনের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। তাঁর মধ্যে প্রায় ৩১,১৩০ কোটি টাকার বরাত পাবে ডিআরডিও-সহ বিভিন্ন ভারতীয় সংস্থা।