মায়ের মতোই আইনজীবী হয়ে পথ চলা শুরু। তাঁর মধ্যে অনেকেই খুঁজে পাচ্ছেন সদ্যপ্রয়াত নেত্রীকে। তিনি কি পারবেন মায়ের রেখে যাওয়া ব্যাটন হাতে তুলে নিয়ে এগতে? সে দিকে যথেষ্ট প্রতিশ্রুতিময়ী বাঁশুরী স্বরাজ। সদ্যপ্রয়াত প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রীর একমাত্র কন্যা।
১৯৭৫ সালের ১৩ জুলাই জরুরি অবস্থার মধ্যেই বিয়ে করেন সুষমা ও স্বরাজ কৌশল। ১৯৮৪-তে জন্ম তাঁদের একমাত্র সন্তান বাঁশুরী। বিয়ের পর থেকে সুষমা তাঁর স্বামীর পদবী ‘কৌশল’-এর পরিবর্তে নাম ‘স্বরাজ’-কেই নিজের নামের পাশে ব্যবহার করতেন। মায়ের মতো বাঁশুরীও ‘স্বরাজ’ পদবীই ব্যবহার করেন।
রাজনীতিকের পাশাপাশি সুষমা ছিলেন একজন আইনজীবীও। তাঁর স্বামী স্বরাজ কৌশলও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। পাশাপাশি, তিনি দেশের কনিষ্ঠতম অ্যাডভোকেট জেনারেল ছিলেন। মাত্র ৩৪ বছর বয়সে তিনি ভারতের অ্যাডভোকেট জেনারেল হয়েছিলেন। তাঁদের পথেই পা রেখেছেন কন্যা বাঁশুরী। তিনি একজন ক্রিমিনাল ল’ইয়ার।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক বাঁশুরী ব্যারিস্টার ডিগ্রি লাভ করেছেন লন্ডনের ইনার টেম্পল থেকে। বর্তমানে তিনি অ্যাডভোকেট হিসেবে দিল্লি হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে প্র্যাকটিস করেন।
হাই প্রোফাইল বাবা-মায়ের মেয়ে হয়েও বাঁশুরী বিশেষ শিরোনামে আসেননি কোনও দিনই। বরাবর লো প্রোফাইল বজায় রাখতেন। একবারই জড়িয়ে পড়েছিলেন বিতর্কে। আইপিএল চলার সময়ে ললিত মোদী বিতর্কে উঠে এসেছিল বাঁশুরীর নাম। তিনি ললিত মোদীর লিগাল টিমের সদস্য ছিলেন।
একবার মেয়ের জন্য টুইটারে বাগযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিলেন সুষমা স্বয়ং। এক নেটিজেন টুইটারে অভিযোগ করেছিলেন, সুষমা অন্যায় ভাবে নর্থ ইস্ট কোটায় মেয়েকে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পাইয়ে দিয়েছেন। কড়া জবাবে সুষমা জানিয়েছিলেন, তাঁর মেয়ে অক্সফোর্ড-গ্র্যাজুয়েট এবং একজন আইনজীবী।
গত ৬ অগস্ট হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় সুষমার। শেষ মুহূর্তে তাঁর পাশে ছিলেন বাঁশুরী। তিনিই মায়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন।
সম্প্রতি সুষমার স্মরণসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাঁশুরীর মধ্যে সুষমাজির প্রতিফলন দেখি। মায়ের প্রয়াণের পর পরিণত ভাবে নিজের বাবা, পরিবারকে সামলেছেন।’’ সভায় সবার শেষে বলতে এসে কান্নাভেজা কণ্ঠে বাঁশুরী জানিয়েছিলেন, তাঁর সবথেকে বড় বন্ধু, মা।
মৃত্যুর মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে সুষমার শেষ টুইট ছিল ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ নিয়ে। প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে লিখেছিলেন, এই দিনটি দেখার জন্যই জীবনভর অপেক্ষা করে ছিলেন তিনি। সেই প্রসঙ্গে মোদী স্মরণসভায় বলেন, “বাঁশুরীই আমাকে বললেন, এত খুশি ছিলেন তিনি। ভিতরে হয়তো খুব উৎসাহ পেয়েছিলেন। এখন শ্রীকৃষ্ণের চরণে পৌঁছে গেলেন।’’
এই স্মরণসভার পর থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন মহলে উঠতে শুরু করেছে একটি প্রশ্ন। তা হলে কি এ বার বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন সুষমাকন্যা? এখনও অবধি স্বরাজ পরিবার বা বিজেপি, কোনও পক্ষ থেকেই এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।