নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।
তাঁর নিজের দলের লোকেরাই যে বিজেপি সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাবেন, সেটা কি নরেন্দ্র মোদী স্বপ্নেও ভেবেছিলেন? দলিত বিক্ষোভে এমনিতেই কিছুটা ব্যাকফুটে কেন্দ্র। এরই মাঝে এল বিজেপি সাংসদের বিস্ফোরক টুইট। দিল্লি উত্তর পশ্চিমের সাংসদ উদিত রাজের দাবি,২ এপ্রিল ভারত বন্ধের পর থেকেই দলিতদের উপর নির্যাতন বেড়ে গিয়েছে। যে সব এলাকায় দলিতদের উপর নির্যাতন চরমে উঠেছে বলে তাঁর অভিযোগ, তার সবগুলোই কিন্তু বিজেপি শাসিত রাজ্যের মধ্যে পড়ে।
তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের উপর নির্যাতন প্রতিরোধী আইন লঘু করার অভিযোগ তুলে ২ এপ্রিল বিভিন্ন দলিত সংগঠনগুলো যে বন্ধের ডাক দিয়েছিল, তার প্রভাব পড়েছিল দেশের ন’টি রাজ্যে। মৃত্যু হয়েছিল ১১ জনের। যদিও কেন্দ্রের দাবি, তফসিলি জাতি-উপজাতি নির্যাতন প্রতিরোধী আইন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় পুনর্বিবেচনার জন্য তাঁরাই আদালতে গিয়েছেন। ফলে তাঁদের দায়ী করা ঠিক নয়।
দলিতদের পাশে থাকার যে বার্তা মোদী সরকারের তরফ থেকে দেওয়া হয়েছে, তাকে এক রকম চ্যালেঞ্জই জানিয়েছেন বিজেপি সাংসদ উদিত রাজ। বিস্ফোরক টুইটে তাঁর অভিযোগ, ‘‘২ এপ্রিল ভারত বন্ধের পর থেকেই গ্বালিয়র, জয়পুর, মেরঠ, কারোলির মতো জায়গায় দলিতরা সংরক্ষণ বিরোধীদের হামলার মুখে পড়ছেন। নির্যাতন চালাচ্ছে পুলিশও। দলিতদের ভুয়ো মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে।’’
আরও পড়ুন: মুম্বইয়ের ধাঁচে হামলার আশঙ্কা, সতর্কতা গোয়ায়
আরও পড়ুন: বিমানের বরাত পাইয়ে দিতে ছক, আক্রমণে রাহুল
দলের ভিতর থেকে ওঠা এই অভিযোগে মোদী সরকারের উপর চাপ আরও বাড়ল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তবে উদিত রাজ একা নন। গত ২ এপ্রিল মোদীকে লেখা চিঠিতে উত্তরপ্রদেশের নাগিনা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ যশবন্ত সিংহ বলেন, ‘‘গত ৪ বছরে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার দেশের ৩০ কোটি মানুষের জন্য কিছুই করেনি।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, স্রেফ দলিত বলেই তাঁকে সংরক্ষিত আসন থেকে সংসদে আসনে আনা হয়েছে। কিন্তু সাংসদ হিসেবে তাঁকে কাজে লাগানো হয়নি। দলিত বিক্ষোভ যেভাবে ছোঁয়াচে জ্বরের মতো এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ছে, তাতে মোদী সরকারের অস্বস্তি বাড়ছে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।
দিন কয়েক আগে উত্তরপ্রদেশের আরও এক দলিত বিজেপি সাংসদ ছোটেলাল খারওয়ার সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে যোগী আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে বৈযম্যের অভিযোগ করেন। তাঁর দাবি ছিল, বৈষম্যের কথা জানানোয় আদিত্যনাথ তাঁকে তিরস্কার করেছেন। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের ধারণা, একে তো দলিত বিক্ষোভ, তার উপর নিজের দলেরই দলিত সাংসদরাও যেভাবে ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছেন, তাতে মোদী সরকার যথেষ্ট অস্বস্তিতে। বলার সুযোগ পেয়ে যাচ্ছে বিরোধী দলগুলোও।