যোগী আদিত্যনাথ। ছবি পিটিআই।
উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরিতে দুই দলিত নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় সরগরম রাজনীতির ময়দান। যোগী সরকারকে নিশানা করতে আসরে নেমেছে কংগ্রেস, বসপা। দোষীদের এক মাসের মধ্যে সাজা দেওয়ার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
গত বুধবার বিকেলে একটি গাছ থেকে দুই নাবালিকার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ঘিরে শোরগোল পড়ে যায়। দুই নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতর।
বিজেপি-শাসিত উত্তরপ্রদেশে শিশু ও নারীদের সুরক্ষা নিয়ে সরব হয়েছেন কংগ্রেসের প্রিয়ঙ্কা গাঁধী। তিনি বলেছেন, ‘‘লখিমপুরে দুই নাবালিকাকে খুনের ঘটনা হৃদয়বিদারক। তাদের পরিজনরা জানিয়েছেন, নাবালিকাদের প্রকাশ্যে অপহরণ করা হয়েছে।’’ এর পরই যোগী সরকারকে নিশানা করে সনিয়া-কন্যার তোপ, ‘‘সংবাদপত্র ও টেলিভিশনে রোজ মিথ্যা বিজ্ঞাপন দিয়ে এটা প্রমাণ হয় না যে, আইনশৃঙ্খলার উন্নতি হচ্ছে। কেন উত্তরপ্রদেশে মহিলাদের উপর এত বর্বরোচিত আক্রমণ বাড়ছে? কবে পদক্ষেপ করবে এই সরকার?’’
প্রিয়ঙ্কার পাশাপাশি এই ঘটনায় বিজেপি সরকারকে আক্রমণ করেছেন রাহুল গাঁধীও। গুজরাতের বিলকিস বানোর দোষীদের মুক্তির প্রসঙ্গ টেনে প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি বলেছেন, ‘‘যারা ধর্ষকদের মুক্তি দিয়ে সম্মান জানায়, তাদের থেকে নারী-সুরক্ষা আশা করা যায় না।’’ বহুজন সমাজ পার্টির নেত্রী মায়াবতী বলেছেন, উত্তরপ্রদেশে অপরাধীরা স্বাধীন ভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
বিরোধীদের পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছেন বিজেপির অমিত মালবীয়। তিনি বলেছেন, এই ঘটনায় যাঁরা গ্রেফতার হয়েছেন, তাঁদের নাম পরিচয় জানার পরই বিরোধীরা চুপ করে গিয়েছে। নির্যাতিতাদের পরিবারকে ২৫ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছেন যোগী আদিত্যনাথ। পাশাপাশি নাবালিকাদের পাকা বাড়ি তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছেন। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এ-ও বলেছেন যে, তদন্তপ্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করে দোষীদের এক মাসের মধ্যে সাজা দেওয়া হোক।
লখিমপুর খেরিতে দুই নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগে ইতিমধ্যেই ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযুক্তরা হলেন, ছোটু, জুনেইদ, সোহেল, হাফিজুল করিমুদ্দিন এবং আরিফ। পুলিশ সুপার সঞ্জীব সুমন বলেছেন, ‘‘জেরায় অভিযুক্তদের দু'জন জানিয়েছেন, দুই বোন তাঁদের বিয়ে করার জন্য জোরাজুরি করছিল। তখন রাগের বশে গলা টিপে খুন করেন তাঁরা। তার পর ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে গাছে ঝুলিয়ে দেন।” পুলিশ সুপার আরও জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তের ভিডিয়োগ্রাফি করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই ঘটনার পর উত্তাল হয় লখিমপুর খেরি। প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন স্থানীয়রা।