তখনও বাঁচার চেষ্টা চালাচ্ছেন শক্তিভেল। ছবি: টুইটার
তামিলনাড়ুতে গণপিটুনির শিকার হলেন বছর চব্বিশের এক দলিত যুবক। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, অন্যের জমিতে মলত্যাগ করতে গিয়েই বেলাগাম হিংসার শিকার হতে হয় ওই যুবককে। ওই ঘটনার ছবি প্রকাশ্যে আসতেই দেশ জুড়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সাত জনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
তামিলনাড়ুর ভেল্লুপুরম এলাকার ওই গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছিল গত বুধবার। রবিবার সেই ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে। মাঝে কয়েকদিন কেটে গেলেও, তাতে ঘটনার গুরুত্ব বিন্দুমাত্র কমেনি।প্রকাশ্যে এসেছে নৃশংসতার নয়া নজির। ছবিতে দেখা গিয়েছে, শক্তিভেল নামে ওই যুবকের দু’পা বাঁধা। পিছমোড়া করে বাঁধা তাঁর দু’হাতও। এমন অসহায় অবস্থার মধ্যেই চারপাশ থেকে তাঁকে লক্ষ করে লাগাতার ধেয়ে আসছে কিল, চড়, লাথি বা ঘুসি। অথবা ভিড়ের মধ্যে থেকে চোরাগোপ্তা লাঠিসোঁটার আঘাত। গণপিটুনি যেমন হয়। ভিল্লুপুরমের এই ছবি দেখে শিউরে উঠছে গোটা দেশ।
এমন ভয়াবহ মারের পর মৃত্যু হয়েছে শক্তিভেলের। পুলিশ জানাচ্ছে, ঘটনাস্থলে গিয়ে শক্তিভেলকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পায় তারা। তাঁর মুখ দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছিল। পুলিশের দাবি, শক্তিভেলকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁর পরিবারের সদস্যদের বলেন তাঁরা। কিন্তু তা হয়নি। বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু হয় শক্তিভেলের।
আরও পড়ুন: পুলিশি হস্তক্ষেপে মাঝপথ থেকেই ফিরলেন শাহিন বাগের প্রতিবাদীরা
নিহতের বোন দাবি করেছেন, পেটের অসুখে ভুগছিলেন তাঁর দাদা। তাঁর বাইকে জ্বালানি ছিল না। সে সময় শক্তিভেল মাঠে মলত্যাগ করতে গেলে দলিত বলেই তাঁর উপর হামলা চালানো হয়। যদিও ‘দলিত বলে হামলা’ — এই যুক্তি মানছে না পুলিশ। তাদের দাবি, শক্তিভেল দলিত বলে হামলা চালানো হয়েছে এমনটা নয়। পুলিশের পাল্টা দাবি, শক্তিভেল মাঠে এক মহিলাকে যৌনাঙ্গ প্রদর্শন করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
আরও পড়ুন: ‘চাপে পিছোচ্ছি না, সিএএ চালু করবই’, বারাণসীতে হুঙ্কার মোদীর
ওই ঘটনায় তিন মহিলা-সহ সাত জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁরা সকলেই বানিয়ার বানিয়ার সম্প্রদায়ের। নিহতের পরিবারকে চার লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্যও করেছে তামিলনাড়ু সরকার। কিন্তু এই ঘটনায় বিতর্কের আগুন নিভছে না।