উত্তাল: ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় আমপান। তার আগে পুরীর সৈকতে সতর্ক মৎস্যজীবীরা। মঙ্গলবার। ছবি: পিটিআই।
ঘূর্ণিঝড়ের সরাসরি ছোবলের ঘা লাগার সম্ভাবনা নেই উৎকল উপকূলে। তবু সতর্কতায় আপস করছে না ঘরপোড়া গরু ওড়িশা প্রশাসন। উপকূলবর্তী বা পশ্চিমবঙ্গ লাগোয়া সব এলাকা থেকেই মঙ্গলবার দিনভর সমুদ্রতীরবর্তী বাসিন্দাদের সরানোর কাজ চলেছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পুরীর পুলিশ সুপার উমাশঙ্কর দাস বলেন, ‘‘মোটামুটি স্বাভাবিক সতর্কতা বজায় রাখছি। পশ্চিমবঙ্গে আমপান ধাক্কা মারার আগেই অষ্টরঙ্গ এলাকা থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের সরানো হবে। পুরী জেলার আরও কিছু এলাকায় নজরদারি বহাল রয়েছে।’’ এ ছাড়া বালেশ্বর, কেন্দ্রাপাড়া, ভদ্রকের মতো জেলাতেও উপকূল ঘিরে সতর্কতা। পুরী-সহ কোথাওই মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ার অনুমতি নেই আগামী তিন দিন। দিনভর পুরীতে ঝিরঝিরে বৃষ্টির আবহ। আজ, বুধবার ও বৃহস্পতিবার জগন্নাথ মন্দিরের বাইরে রথ তৈরির কাজ বন্ধ রাখা হতে পারে। সেই সঙ্গে পড়শি রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের জন্য উৎকণ্ঠাও কাজ করছে।
শ্রীমন্দিরের প্রবীণ সেবায়েত রামচন্দ্র দয়িতাপতির ফোনটা নাগাড়ে বেজে চলেছে। তিনি আবার প্রধানত মেদিনীপুর ও দুই ২৪ পরগনার যজমানেদের পান্ডা। রামচন্দ্রের কথায়, ‘‘মেদিনীপুর আর সুন্দরবন এলাকার অনেকেই ফোন করে বলছেন, প্রভুকে বলুন যাতে রক্ষা করেন। আমি তাই বলেওছি। জগন্নাথদেবকে বলেছি, তাঁর ভক্তদের শঙ্খের ভিতরে লুকিয়ে, চক্রে ঘিরে সুরক্ষিত রাখতে।’’ পুরীতে ভক্তদের আসার উপায় নেই! কিন্তু অনলাইনে দক্ষিণা পাঠিয়ে জগন্নাথদেবের কাছে বাংলা থেকে পুজোর হিড়িক পড়েছে। প্রবীণ সেবায়েতের বক্তব্য, প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘায়ে পুরীর জন্য বাংলার ক্ষয়ক্ষতিও কিছু কম নয়। বাংলার ভক্তেরা আসতে না-পারলে ওড়িশায় হোটেল ব্যবসা, দোকানপাট সব মার খাবে। পুরীর সব হোটেল বন্ধ দু’মাস ধরে। সমুদ্রপারের দু’টি নামী হোটেলের মালিক শঙ্করনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘জানি না, পুজোর আগে ব্যবসা শুরু হবে কি-না!’’ শঙ্করবাবু বা আর একটি নামী হোটেলের মালিক দেবাশিস কুমারের একটাই প্রার্থনা, জগন্নাথ করুন, দুর্যোগে হোটেলের সম্পত্তির যেন ক্ষতি না হয়!
আরও পড়ুন: শ্রমিক স্পেশালের জন্য বান্দ্রায় শ্রমিকদের ভিড়
আরও পড়ুন: সম্পত্তি ও জলকর রাজ্যকে বাড়াতে হবে, শর্ত কেন্দ্রের
সোমবার বেলা ১১টা নাগাদ জগন্নাথ মন্দিরের ধ্বজা হাওয়ায় উড়ে যাওযার ঘটনা নিয়ে আবার ভক্তমহলে উৎকণ্ঠা ছড়িয়েছিল। রামচন্দ্র দয়িতাপতি বলেন, ‘‘এ সবই স্বাভাবিক ঘটনা। এমন আগেও কয়েক বার হয়েছে। অযথা কুসংস্কারবশত ভয়ের কিছু নেই। প্রভুর পতাকা ফের যথাস্থানেই স্থাপিত।’’