ছবি এএফপি।
আমপানের ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখতে পশ্চিমবঙ্গে দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র। দলটি উপদ্রুত এলাকাগুলি ঘুরে দেখে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেবে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে। কিন্তু প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ হওয়ায় অতীতের ধাঁচে কেন্দ্র কেন অন্তর্বর্তী অনুদান ঘোষণা করছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শাসক দলেরই একাংশ। আমপানকে জাতীয় বিপর্যয় ঘোষণার দাবি প্রসঙ্গে কেন্দ্র নীরব থাকলেও আজ সরকারের শীর্ষ স্তর থেকে পশ্চিমবঙ্গের পাশে থাকার বার্তা দেওয়া হয়েছে।
আমপান প্রশ্নে আজ সকালেই জাতীয় সঙ্কট ব্যবস্থাপনা কমিটি (এনসিএমসি)-র বৈঠক ডাকেন ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবা। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার শীর্ষ আমলারা। বৈঠকে ক্যাবিনেট সচিবের পক্ষ থেকে দুই রাজ্যকেই সব ধাঁচের সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ)-র ডিজি এস এন প্রধানের কথায়, ‘‘ওড়িশা জানিয়েছে আগামী দু’দিনের মধ্যে রাজ্যের পরিস্থিতি প্রায় স্বাভাবিক হয়ে যাবে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের ক্ষয়ক্ষতি অনেক বেশি।’’ সকালে এনসিএমসি-র বৈঠকে ক্যাবিনেট সচিব জানান, পশ্চিমবঙ্গের ক্ষয়ক্ষতি দেখতে কেন্দ্রীয় দল দ্রুত ওই রাজ্যে যাবে। সরকারের দাবি ও কেন্দ্রীয় দলের রিপোর্টকে বিচার করে আর্থিক সাহায্য করা হবে রাজ্যকে। তার আগে রাজ্যের কী ধরনের সাহায্য প্রয়োজন, তা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিবের কাছে জানতে চাওয়া হয়। বিকেলে এস এন প্রধান বলেন, ‘‘রাজ্যের দাবি মতো এনডিআরএফ-এর দু’টি দল চেন্নাইয়ের রাজালা বেস ও দু’টি দল পুণে থেকে আজ রাতেই কলকাতা পৌঁছে যাবে।’’ কেন্দ্রের মতে, অতীতেও এ ধাঁচের বিপর্যয়ের পরে রাজ্যগুলিকে থোক টাকা সাহায্য হিসেবে দেওয়া হয়েছে। চূড়ান্ত সাহায্যের সময়ে ওই অর্থ বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। পশ্চিমবঙ্গের জন্য সেই পথে হাঁটার কথাই ভাবছে কেন্দ্র। সূত্রের মতে, নরেন্দ্র মোদী পশ্চিমবঙ্গের উপদ্রুত এলাকা ঘুরে ওই সাহায্যের বিষয়ে ঘোষণা করতে পারেন।
আমপানকে জাতীয় বিপর্যয় ঘোষণা করা নিয়ে একাধিক দল দাবি তুললেও পশ্চিমবঙ্গ সরকার এখনই তা করছে না। আজ প্রাথমিক ভাবে কেন্দ্রকে রাজ্য জানায়, আমপান ৪০০ কিমি এলাকা জুড়ে তাণ্ডব চালিয়েছে। তাতে সাত-আটটি জেলা ভীষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আরও চার-পাঁচটি জেলা বিপর্যস্ত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত তথ্য জোগাড় করতে প্রতিটি দফতরকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ তথ্য সংগ্রহ করতে কিছুটা সময় লাগবে।
আরও পড়ুন: বঙ্গ নিয়ে টুইট করতে ২৩ ঘণ্টা পার মোদীর
কেন্দ্র পাশে থাকার বার্তা দিলেও তাদের আর্থিক সাহায্যের প্রশ্নে সন্দিহান তৃণমূল। সম্প্রতি বুলবুল ঝড়ে কেন্দ্রের সাহায্যের উদাহরণ দেখিয়ে দল বলছে, প্রাথমিক ভাবে রাজ্য ১১ হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির হিসেব পাঠায়। চূড়ান্ত রিপোর্টে চাওয়া হয় সাত হাজার কোটি টাকা। কিন্তু দিল্লি মঞ্জুর করে মাত্র এক হাজার কোটি।