Sharad Pawar

এনসিপির যুযুধান দুই গোষ্ঠীরই ‘মুখ’ শরদ! কোনও বৈঠকের মঞ্চেই ‘ঠাঁই’ পেলেন না সুপ্রিয়া

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে যুযুধান দুই গোষ্ঠীর অধিবেশনের মঞ্চেই ‘হাজির ছিলেন শরদ’। ছবিতে এবং স্লোগানে। কিন্তু শরদ-কন্যা তথা এনসিপি সাংসদ সুপ্রিয়া সুলের ছবি ছিল না কোনও বৈঠকের মঞ্চেই।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

মুম্বই শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৩ ১৫:০৮
Share:

(বাঁ দিক থেকে) বান্দ্রায় অজিত গোষ্ঠীর বৈঠকের মঞ্চ এবং নরিম্যান পয়েন্টে শরদ শিবিরের সম্মেলন। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া।

মাত্র দু’মাস আগে মুম্বইয়ের এই নরিম্যান পয়েন্টে তাঁর রাজনৈতিক গুরু প্রয়াত যশবন্ত রাও চহ্বাণের নামাঙ্কিত প্রেক্ষাগৃহে এনসিপির বৈঠকে নাটকীয় ভাবে সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসরের ঘোষণা করেছিলেন তিনি। সে দিন দলের সাংসদ, বিধায়ক, পদাধিকারীরা একযোগে সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে তাঁর সামনে অনুনয় শুরু করেছিলেন। বুধবার সেই যশবন্ত রাও চহ্বাণ সেন্টার থেকে ‘বিদ্রোহী’ ভাইপো অজিত পওয়ারের বিরুদ্ধে ‘লড়াই’ শুরু করলেন শরদ। কিন্তু তাঁর মঞ্চে দেখা গেল এনসিপির মাত্র ১৩ বিধায়ককে!

Advertisement

শরদের বৈঠক শুরুর ঘণ্টা খানেক পরেই নরিম্যান পয়েন্টের ১৮ কিলোমিটার দূরে বান্দ্রার এমইটি কলেজ অডিটোরিয়ামে শুরু হয়েছিল অজিত শিবিরের সম্মেলন। সেখানে হাজির বিধায়কদের রীতিমতো ১০০ টাকার ‘স্ট্যাম্প পেপার’-এর হলফনামায় সই করিয়ে সমর্থনের অঙ্গীকার করতে হচ্ছিল। দুপুর পৌনে ১টা নাগাদ সম্মেলনের মঞ্চে আরও কিছু বিধায়ককে নিয়ে পৌঁছলেন অজিত। কিছু ক্ষণ পরে জানা গেল, এখনও পর্যন্ত দলের ৩১ জন বিধায়ক সই করেছেন হলফনামায়। যদিও অজিত গোষ্ঠীর দাবি, ৪০ জন বিধায়ক তাঁদের শিবিরে রয়েছেন।

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে যুযুধান দুই গোষ্ঠীর অধিবেশনের মঞ্চেই ‘হাজির ছিলেন শরদ’। ছবিতে এবং স্লোগানে। যশবন্ত রাও চহ্বাণ সেন্টারের মঞ্চে ছিল একমাত্র তাঁরই ছবি। অন্য দিকে, অজিত গোষ্ঠীর মঞ্চেও সবচেয়ে বড় ছবি ছিল শরদেরই। তার পর অপেক্ষাকৃত ছোট অবয়বে অজিত, প্রফুল্ল পটেল, ছগন ভুজবল এবং সুনীল তটকরে। অজিত শিবিরের অন্য মন্ত্রী এবং কয়েক জন বিধায়কের সারিবদ্ধ মুখের ছবিও দেখা গিয়েছে মঞ্চে। শরদের নামে জয়ধ্বনি করে মন্ত্রী ছগন বলেন, ‘‘শরদজি আমাদের গুরু। তাই আমরা গুরুদক্ষিণা দিয়েছি। ওঁর ভাইপোকে উপমুখ্যমন্ত্রী বানিয়েছি।’’ বক্তৃতায় অজিতের মন্তব্য, ‘‘শরদ পওয়ার আমাদের নেতা। আমাদের অনুপ্রেরণা।’’

Advertisement

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে কোনও মঞ্চেই ছিল না শরদ-কন্যা সুপ্রিয়া সুলের ছবি! গত ২৮ জুন মুম্বইয়ে এনসিপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকের মঞ্চে শরদের পাশাপাশি, দলের দুই সদ্য নিযুক্ত কার্যনির্বাহী সভাপতি সুপ্রিয়া সুলে এবং প্রফুল্ল পটেলের ছবি ছিল। কিন্তু বাদ পড়েছিলেন অজিত। গত সপ্তাহের ওই ঘটনাই এনসিপি এবং পওয়ার পরিবারের অন্দরের ফাটল আরও চওড়া করে বলে দলের একটি সূত্রের খবর। বারামতীর সাংসদ সুপ্রিয়াকে অবশ্য বুধবার শরদ-গোষ্ঠীর বৈঠকে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা গিয়েছে। সেই সঙ্গে শরদের নাতি তথা এনসিপি বিধায়ক রোহিত পওয়ারকেও দেখা গিয়েছে আয়োজকের ভূমিকায়।

মহারাষ্ট্র বিধানসভায় এনসিপির বিধায়ক সংখ্যা ৫৩। দলত্যাগ বিরোধী আইন এড়াতে অজিত গোষ্ঠীর প্রয়োজন ৩৬ জন বিধায়কের সমর্থন। তা এখনও তাঁদের রয়েছে কি না, তা নিয়ে জল্পনা চলছে। শরদ গোষ্ঠীর অভিযোগ, ইডি-সিবিআইয়ের ভয় দেখিয়ে বিধায়কদের বন্দি বানিয়েছে অজিত শিবির। ঘটনাচক্রে, মঙ্গলবার রাতে অজিতকে ছেড়ে শরদ শিবিরে ফিরে আসা দুই এনসিপি বিধায়ক কিরেন লহমাটে এবং অশোক পওয়ারও বুধবার ‘চাপ তৈরির’ অভিযোগ তুলেছেন বিজেপির বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে অজিত গোষ্ঠীকে যাতে একতরফা ভাবে এনসিপির নির্বাচনী প্রতীক ‘ঘড়ি’ দেওয়া না হয়, সে জন্য নির্বাচন কমিশনে হলফনামা দিয়েছে শরদ শিবির।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement