মহিলাদের উপর অত্যাচার ও অপরাধের পরিমাণ হু হু করে বেড়ে গিয়েছে। প্রতীকী ছবি।
২০২২ সালে মহিলাদের উপর অত্যাচার ও অপরাধের পরিমাণ হু হু করে বেড়ে গিয়েছে। জাতীয় মহিলা কমিশনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এই ধরনের অপরাধের সংখ্যা।
গত বছর জাতীয় মহিলা কমিশনে মহিলাদের বিরুদ্ধে হওয়া অপরাধের যত অভিযোগ জমা পড়েছে, তাতে অধিকাংশই গার্হস্থ্য হিংসা। মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বহু নারী। কমিশনের ‘গার্হস্থ্য হিংসার বিরুদ্ধে মহিলাদের সুরক্ষা’ আইনে শুধুমাত্র ২০২২ সালেই জমা পড়েছে সাড়ে ৬ হাজার অভিযোগ। এ ছাড়া, গত ১ বছরে সার্বিক ভাবে মহিলাদের উপর অপরাধের অভিযোগ জমা পড়েছে মোট ৩১ হাজার।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২১ সালে জাতীয় মহিলা কমিশনে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ জমা পড়েছিল ২৩ হাজার ৭০০টি। ২০২২ সালে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার ৮০০।
এই সমস্ত অভিযোগের মধ্যে অন্তত ৩০ হাজার ৭০০টি অভিযোগের ক্ষেত্রে মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন মেয়েরা। যা তাঁদের উপযুক্ত সম্মান এবং মর্যাদার সঙ্গে বাঁচার পরিপন্থী। এ ছাড়া, ৬ হাজার ৯৭০টি ক্ষেত্রে অভিযোগের কেন্দ্রে ছিল গার্হস্থ্য হিংসা এবং ৪ হাজার ৬০০টি ক্ষেত্রে অভিযোগের কেন্দ্রে ছিল পণের জন্য মহিলাদের হেনস্থা।
পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখা গিয়েছে, বেশির ভাগ অভিযোগ জমা পড়েছে উত্তরপ্রদেশ থেকে। সেখানে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ ১৬ হাজার ৮৭২টি (৫৪.৫ শতাংশ)। ৩ হাজার ৪টি অভিযোগ (১০ শতাংশ) নিয়ে এর পরেই রয়েছে রাজধানী দিল্লি। মহারাষ্ট্র, বিহার, হরিয়ানায় গত এক বছরে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ জমা পড়েছে যথাক্রমে ১৩৮১টি, ১৩৬৮টি এবং ১৩৬২টি।
২০২২ সালে মহিলাদের উপর অত্যাচারের দৃষ্টান্ত হিসাবে দিল্লির শ্রদ্ধা ওয়ালকর হত্যাকাণ্ডের উল্লেখ করা যায়। রাজধানীর বুকে প্রেমিকাকে খুন করার পর দেহ টুকরো টুকরো করে কেটেছিলেন অভিযুক্ত আফতাব। সেই দেহাংশ ছড়িয়ে দিয়েছিলেন জঙ্গলে। খুনের বীভৎসতায় শিউরে উঠেছিল গোটা দেশ।
বস্তুত, ২০২২ সালে জাতীয় মহিলা কমিশনে জমা পড়া মোট অভিযোগের সংখ্যাও রেকর্ড গড়েছে। মোট অভিযোগের সংখ্যা ৩৩ হাজার ৯০৬টি, ২০১৪ সালের পর যা সর্বোচ্চ। কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা বলেছেন, ‘‘আমরা এই সমস্ত অভিযোগের ভিত্তিতে পদক্ষেপের পাশাপাশি, সচেতনতামূলক প্রচারও চালাই। কিন্তু এ বিষয়ে জাতীয় স্তরে উদ্যোগ এবং প্রচারের প্রয়োজন রয়েছে।’’