রাজস্থানে আস্থা-জয় অশোক গহলৌতের। ছবি: পিটিআই
আস্থা ভোটের দিনেও আস্থার অভাব ফুটে উঠল।
প্রত্যাশা মাফিক রাজস্থানের বিধানসভায় আস্থা ভোটে জিতলেন অশোক গহলৌত। কিন্তু জয়ের দিনেও রাজস্থান কংগ্রেসে গহলৌত ও সচিন পাইলটের মধ্যে আস্থার অভাব প্রকাশ্যে চলে এল। দলের মধ্যে বিদ্রোহ ঘোষণার পরে উপমুখ্যমন্ত্রী ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ খুইয়েছিলেন সচিন। ফিরে আসার পরে শুক্রবার বিধানসভার অধিবেশনে গিয়ে সচিন দেখলেন, তাঁর আসন বদলে গিয়েছে। সরকারি বেঞ্চের প্রথম সারির বদলে তাঁর স্থান হয়েছে পিছনের সারিতে, বিরোধী শিবিরের বিজেপির বেঞ্চের কাছে। রাজস্থানে গহলৌত-পাইলট গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ধামাচাপা দিতে কংগ্রেস শীর্ষনেতৃত্বের নির্দেশ ছিল, সবাইকে মুখে কুলুপ এঁটে থাকতে হবে। কিন্তু সচিন মুখে তালা ঝুলিয়ে রাখেননি। আস্থা ভোটের বিতর্কে অংশ নিয়ে বলেন, “বিধানসভায় এসে আসন বদলে যেতে দেখে তার কারণ খুঁজছিলাম। যখন সরকারি বেঞ্চে বসতাম, নিরাপদে থাকতাম। এখন একেবারে বিরোধীদের পাশে।
তার পরে বুঝলাম, আমাকে সীমান্তে পাঠানো হয়েছে। সব থেকে শক্তিশালী ও সাহসী সৈনিককেই সীমান্তে পাঠানো হয়।”
আরও পড়ুন: অমিতের করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ
কংগ্রেস নেতারা বুঝে গিয়েছেন, সচিন আসলে গহলৌতকেই বার্তা দিতে চাইছেন। বোঝাতে চাইছেন, পদ কেড়ে নেওয়া হলেও তিনিই দলের সব থেকে শক্তিশালী নেতা। সচিন এ দিন ফের বলেছেন, তাঁর অভিযোগের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সমাধান হবে বলেই তাঁকে কথা দেওয়া হয়েছে। গহলৌতও ঠারেঠোরে ইঙ্গিত দিয়েছেন, সচিনের বিদ্রোহের পিছনে বিজেপির মদত ছিল।
সচিন ও তাঁর অনুগামীরা কংগ্রেসেই থেকে যাওয়ার পরে আস্থা ভোটে গহলৌত সরকারের জয় নিশ্চিত ছিল। তা সত্বেও কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আনতেই বিজেপি অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিল। গহলৌত নিজেই আস্থা ভোটের প্রস্তাব আনায় তাতেই ভোটাভুটি হয়। কিন্তু তার আগে গহলৌত-পাইলট দ্বন্দ্ব উসকে দিতে বিজেপি নেতা গুলাবচাঁদ কাটারিয়া বলেন, “সচিন পাইলট ১০০ দিনের প্রকল্পে ভাল কাজ করলেও তাঁকে দলের মধ্যে কোণঠাসা করা হয়েছে।”
সচিন তাঁকে থামিয়ে বলেন, কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ বিষয় কংগ্রেসের উপরে ছেড়ে দিন। গহলৌত বিজেপির মধ্যে বসুন্ধরা রাজের সঙ্গে অন্য নেতাদের বিরোধের প্রসঙ্গ তোলেন। বিজেপি-ই সরকার ফেলার চেষ্টা করছিল বলে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “বিজেপি নেতারা এখন এমন মুখ করে বসে রয়েছেন, যেন কিছুই জানে না!” বিধানসভায় ধ্বনি ভোটে জয়ের পরে গহলৌত বিজেপি নেতৃত্বকে নিশানা করে বলেন, “যাঁরা নির্বাচিত সরকারের গদি ওল্টাতে চান, এটা তাঁদের প্রতি বার্তা। নির্বাচিত সরকার ফেলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। দেশে এ কেমন গণতন্ত্র চলছে?”
আস্থা ভোটে জেতায় আপাতত ছ’মাসের জন্য গহলৌত সরকার নিশ্চিত। আগামী ছ’মাস সরকারকে সংখ্যাগরিষ্ঠতার পরীক্ষা দিতে হবে না। কিন্তু বিজেপি নেতৃত্বের আশা, গাঁধী পরিবার যতই চেষ্টা করুক, রাজস্থানে কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্ব বেশি দিন ধামাচাপা দিয়ে রাখা যাবে না।