ত্রিপুরায় সিপিএমের দৈনিক মুখপত্রের স্বীকৃতি বাতিল করার নির্দেশের উপরে স্থগিতাদেশ জারি করল রাজ্যের হাইকোর্ট। আদালতের নির্দেশ হাতে নেওয়ার পরে ১০ দিনের মাথায় আজ, বৃহস্পতিবার ফের প্রকাশিত হতে চলেছে ত্রিপুরার দ্বিতীয় বৃহত্তম ওই দৈনিক কাগজ।
মালিকানা এবং প্রকাশক সংক্রান্ত তথ্যের গরমিল আছে, এই অভিযোগের ভিত্তিতে সিপিএমের মুখপত্রের স্বীকৃতি বাতিল করেছিল আরএনআই। গত ১ অক্টোবর বিকেলে প্রকাশনার নতুন ট্রাস্টকে কাগজ প্রকাশের ছাড়পত্র দিয়েও বেশি রাতে তা প্রত্যাহার করা হয়েছিল। কারণ, পশ্চিম ত্রিপুরার জেলাশাসক তাঁর দেওয়া ছাড়পত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। ওই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ত্রিপুরা হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেছিল মুখপত্রের ট্রাস্ট। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে শুনানির পরে বুধবার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অজয় রাস্তোগি জেলাশাসকের নির্দেশের উপরে স্থগিতাদেশ দিয়েছেন। আবেদনকারীদের পক্ষে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ‘বেআইনি ও এক্তিয়ার বহির্ভূত’ কাজ করার অভিযোগে জেলাশাসকের বিরুদ্ধে তাঁরা আলাদা করে আইনি পদক্ষেপ করতে চান।
ত্রিপুরা সরকারের পক্ষে রাজ্যের অ্যা়ডভোকেট জেনারেল অরুণকান্তি ভৌমিক এ দিন আদালতে জানান, আরএনআই-এর সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আবেদন করার জন্য তাদেরই নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষ আছেন। সেখানেই আবেদন করতে পারে সিপিএমের মুখপত্রের ট্রাস্ট। কিন্তু বিকাশবাবু পাল্টা সওয়াল করেন, জেলাশাসক যে ভাবে ছাড়পত্র প্রত্যাহার করেছেন, সেই প্রক্রিয়া নিয়েই প্রশ্ন আছে। হাইকোর্ট প্রধান বিচারপতির এজলাসেই মামলার শুনানির সিদ্ধান্ত নেয়। স্থগিতাদেশ পাওয়ার পরে বিকাশবাবু বলেন, রাজ্য সরকার গোটা প্রক্রিয়া আরও বিলম্বিত করতে চাইছিল। যাতে মুখপত্র আরও কয়েক মাস বন্ধ থাকে। কিন্তু হাইকোর্ট তা হতে দেয়নি। আগরতলায় এ দিন তাঁর আরও অভিযোগ, জেলাশাসক ১ তারিখ এসডিএম-কে নিজের দফতরে তলব করেছিলেন, আরএনআই-কে ফোন করে জানিয়েছিলেন তিনি ছাড়পত্র প্রত্যাহার করছেন এবং তারাও যেন তা-ই করে। এর কোনওটাই করা যায় না বলে দাবি করে বিকাশবাবুর মন্তব্য, ‘‘এর জন্য এই জেলাশাসককে ফল ভুগতে হবে।’’
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গৌতম দাশ বলেন, ‘‘আদালতের রায়ে আপাতত স্বস্তি। রাত থেকেই ফের মুখপত্র ছাপার কাজ শুরু হয়েছে।’’ দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির মতে, ‘‘অতীতে জরুরি অবস্থার সময়ে গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধের বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করেছিলাম। এখনকার জরুরি অবস্থার বিরুদ্ধেও লড়ব।’’