—প্রতীকী ছবি।
দেশে একই সঙ্গে লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন করানোর বিষয়ে দেশবাসী ও রাজনৈতিক দলগুলি কী ভাবছে, তা জানতে চেয়ে নির্দেশিকা জারি করেছিল এই সংক্রান্ত উচ্চ পর্যায়ের কমিটি। আজ সিপিএমের পক্ষ থেকে চিঠি লিখে ওই পদক্ষেপের সমালোচনা করে বলা হয়, যে ভাবে দেশবাসীর উপরে ‘এক দেশ এক ভোট’ চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে তার বিরোধী সিপিএম।
প্রথম বার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই ‘এক দেশ এক ভোট’ নীতির পক্ষে সওয়াল করতে দেখা গিয়েছিল নরেন্দ্র মোদীকে। গোড়া থেকেই সরকারের যুক্তি, দেশে একই সঙ্গে লোকসভা ও বিধানসভার নির্বাচন হলে খরচ কম হবে। তা ছাড়া পৃথক নির্বাচনী আচরণবিধির কারণে পরিকাঠামোগত উন্নয়নের কাজ আটকে থাকবে না। একই দিনে ভোট হলে ভোট পরিচালনার ক্ষেত্রেও সুবিধা হবে। বাড়বে ভোটদানের হার।
উল্টো দিকে, একই সঙ্গে ভোট হলে স্থানীয় পর্যায়ের সমস্যাগুলি উপেক্ষিত থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে বলে, যুক্তি অধিকাংশ আঞ্চলিক দলগুলির। এ ছাড়া একসঙ্গে ভোট হলে বড় দলগুলি যে পরিমাণ অর্থ খরচ করতে পারবে, তার সামনে পাত্তা পাবে না ছোট দলগুলি। কেন্দ্রে বা রাজ্যে ভোটের কিছু দিন পরেই সরকার পড়ে যাওয়ার পরিস্থিতিতে বিকল্প কী ভাবা হয়েছে সেই বিষয়ে আইন কমিশন স্পষ্ট কোনও দিশা দেখাতে ব্যর্থ বলেও দাবি বেশির ভাগ আঞ্চলিক দলগুলির। এই আবহে ‘এক দেশ এক ভোট’-এর সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে গত ২ সেপ্টেম্বর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের এক কমিটি গঠন করেছে মোদী সরকার।
কমিটি এক নির্দেশিকা জারি করে ৫ জানুয়ারি এ প্রসঙ্গে দেশবাসীর মতামত জানতে চায়। যার উত্তরে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি চিঠিতে জানিয়েছেন, কমিটির শর্ত দেখে মনে হচ্ছে, ভোট করার বিষয়ে আগেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গিয়েছে। এখন কেবল তা রূপায়ণের পালা। তাই সিপিএম এমন কমিটি গঠনের বিরুদ্ধে।
সীতারাম আরও জানিয়েছেন, যবে থেকে লোকসভা ও রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনগুলির একসঙ্গে করার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে, তবে থেকেই এ নিয়ে নিজেদের দুশ্চিন্তা ও বিরোধিতা জানিয়ে এসেছে সিপিএম। তাঁর দাবি, গত ২০১৮ সালের ৪ জুলাই আইন কমিশনের এ বিষয়ে চাওয়া জবাবেও দেশে একসঙ্গে ভোট করার তীব্র বিরোধিতা করেছিল সিপিএম। দল এখনও সেই অবস্থানেই রয়েছে।