পশ্চিমবঙ্গ-সহ গোটা দেশে আত্মঘাতী কৃষকদের পরিবারদের নিয়ে দিল্লির যন্তর-মন্তরে ধর্নায় বসছে সিপিএম। ঘটনাচক্রে আগামী সপ্তাহে যখন এই ধর্না চলবে, সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লিতে আসার কথা রয়েছে।
কৃষক সংগঠনের নেতারা বলছেন, শুধু পশ্চিমবঙ্গে নয়, গোটা দেশেই কৃষক আত্মহত্যার সমস্যায় যে কেন্দ্রের নজর নেই, তা তুলে ধরতেই এই ধর্না। ১০ ও ১১ অগস্ট এই ধর্না হবে। মমতা ওই সময় দিল্লিতে থাকছেন। তাঁর সফরসূচি অবশ্য স্থির হয়েছে অনেক পরে। গোটা দেশের ২০০ জন আত্মঘাতী কৃষকের পরিবার এই ধর্নায় হাজির হবেন। তার মধ্যে ১৬টি পরিবার পশ্চিমবঙ্গের। বর্ধমান, মালদহ, হুগলি, হাওড়া জেলা থেকে এঁরা আসছেন।
এপ্রিলে আপের জনসভায় আত্মহত্যা করেছিলেন রাজস্থানের কৃষক গজেন্দ্র সিংহ। তাঁর পরিবারও ধর্নায় হাজির হবেন। কৃষক সভার সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হান্নান মোল্লা বলেন, ‘‘২০ বছরে ৩ লক্ষ ১৯ হাজার কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। গত বছরেই ৫,৬৫০ জন আত্মঘাতী হয়েছেন। তার পরেও সরকার এ বিষয়ে কোনও গুরুত্ব দেয়নি।’’ কেন আত্মহত্যা, তার কারণ খুঁজতে রাজ্যে রাজ্যে সমীক্ষা চালিয়েছে কৃষক সভা। হান্নান মোল্লার কথায়, ‘‘মোদী জমানায় সরকারি হিসেবে কৃষক আত্মহত্যা ২৬ শতাংশ বেড়েছে। আসলে আত্মহত্যা আরও বেশি। জাতীয় ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো ভাগচাষি ও কৃষিক্ষেত্রের শ্রমিকদের ‘স্বনিযুক্ত’ বলে উল্লেখ করে কৃষক আত্মহত্যা কম করে দেখাতে চাইছে।’’’
হান্নানের অভিযোগ, কেন্দ্রের প্রস্তাবিত জমি বিল পাশ হলে কৃষকদের দুরবস্থা আরও বাড়বে। মোদী সরকার অবশ্য এখন কেন্দ্রীয় স্তরে পিছিয়ে এসে রাজ্যগুলিকে নিজেদের আইন করে জমি অধিগ্রহণের পথ মসৃণ করতে বলছে। তারও বিরোধিতা করছে কৃষক সভা। তাদের যুক্তি, শিল্পমহলের পক্ষে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের তুলনায় রাজ্যের মন্ত্রীদের উপর প্রভাব খাটানো সহজ হবে। কাজেই কেন্দ্রীয় স্তরেই জমি সংক্রান্ত নীতি তৈরি করাটা জরুরি। আত্মঘাতী কৃষকদের জন্য পরিবার-পিছু ১০ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণের দাবি তুলেছে কৃষক সভা।