কান্নুরের সিপিএম জেলা সম্পাদক এম ভি জয়রাজনের বক্তব্য, ‘‘এই হত্যাকাণ্ড বিজেপি-আরএসএসের নৃশংসতা সামনে নিয়ে এল। এরা কান্নুরে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যেতে চায়। মন্দির নিয়ে সমস্যা মিটে গিয়েছিল।’’
প্রতীকী ছবি।
কেরলের কান্নুরে এক সিপিএম কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। গত কাল গভীর রাতে তিনি যখন বাড়ি ফিরছিলেন তখন তাঁকে এক দল দুষ্কৃতী ঘিরে ধরে এবং কুপিয়ে হত্যা করে। সিপিএমের অভিযোগ, এই হত্যাকাণ্ডের পিছনে রয়েছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ।
এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে আরএসএস কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি। সঙ্ঘের বিরুদ্ধে ওঠা ওই অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি। দলীয় কর্মীর হত্যার প্রতিবাদে আজ নিউ মাহে ও থালাসেরিতে বন্ধের ডাক নিহত সিপিএম কর্মীর নাম কোরাম্বিল হরিদাস। ৫৪ বছর বয়সি এই সিপিএম কর্মী পেশায় মৎস্যজীবী। পুলিশ জানিয়েছে, গত কাল রাত দেড়টা নাগাদ বাড়ি ফেরার পথে হরিদাস আক্রান্ত হন। বাড়ির কাছেই তাঁকে ঘিরে ধরে এক দল দুষ্কৃতী। তার পরে ওই সিপিএম কর্মীকে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে। তাঁর শরীরের বেশ কয়েক জায়গায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। দুষ্কৃতীরা কুপিয়ে হরিদাসের শরীর থেকে একটা পা আলাদা করে দিয়েছে। নিহতের পরিজন ও প্রতিবেশীরা তাঁকে থালাসেরি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ওই সিপিএম কর্মীর পরিজন জানিয়েছে, হামলার পরে দু’টি মোটরবাইকে করে চার জনকে পালাতে দেখেছেন তাঁরা।
এই খুনের পিছনে সঙ্ঘ পরিবারের হাত রয়েছে বলে সরব সিপিএম। তাদের অভিযোগ, থালাসেরি পুরসভার বিজেপি কাউন্সিলর লিজেশের প্ররোচনামূলক বক্তৃতার পরেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। ওই বিজেপি কাউন্সিলরের বক্তৃতা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। তাতে লিজেশকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘সিপিএমের দুষ্কৃতীরা আমাদের দু’জন কর্মীর উপর হামলা করেছে। আরএসএস বিষয়টি ভাল ভাবে নেয়নি। সিপিএমকে জানিয়ে দিতে চাই, ওই হামলার মোকাবিলা কী ভাবে করতে হয়, তা আমরা জানি।’’ থালাসেরিতে সম্প্রতি মন্দির উৎসব ঘিরে সিপিএম এবং সঙ্ঘের বিবাদ চলছিল।
সিপিএমের অভিযোগ, ওই উস্কানিমূলক বক্তৃতার পরেই থালাসেরিতে দলীয় কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। কান্নুরের সিপিএম জেলা সম্পাদক এম ভি জয়রাজনের বক্তব্য, ‘‘এই হত্যাকাণ্ড বিজেপি-আরএসএসের নৃশংসতা সামনে নিয়ে এল। এরা কান্নুরে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যেতে চায়। মন্দির নিয়ে সমস্যা মিটে গিয়েছিল।’’
সঙ্ঘের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে কান্নুরের বিজেপি সভাপতি এন হরিদাস বলেন, ‘‘ওই খুনের সঙ্গে বিজেপি-সঙ্ঘের সম্পর্ক নেই। সিপিএম নেতাদের পুলিশের কাজ করতে হবে না। আগে তদন্ত হতে দিন।’’ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক কোডিয়ারি বালাকৃষ্ণনের অভিযোগ, ‘‘মাস দুয়েক আগে কেরলে ৩ হাজার লোককে প্রশিক্ষণ দিয়েছে বিজেপি। যারা ওই শিবিরে প্রশিক্ষণ নিয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডের পিছনে তারাই রয়েছে। এই খুন বিজেপি-আরএসএস নেতৃত্বের নির্দেশেই।’’