কোভ্যাকসিন এবং কোভিশিল্ড, দু’টি প্রতিষেধকই ছাড়পত্র পেয়েছে।
করোনার টিকাকরণ শুরু হওয়ার প্রথম দিনেই ধাক্কা। ভারত বায়োটেকের তৈরি কোভ্যাকসিন নিতে বেঁকে বসলেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁদের দাবি, কোভিশিল্ড পরীক্ষার তিনটি ধাপই উতরে গিয়েছে। সে ক্ষেত্রে এখনও পিছিয়ে কোভ্যাকসিন। তাই কোভিশিল্ডের উপরেই আস্থা তাঁদের। টিকাকরণে কোভ্যাকসিন ব্যবহার করা হলে তাতে অংশ নেবেন না তাঁরা।
হায়দরাবাদের ভারত বায়োটেকের তৈরি করোনা প্রতিষেধক কোভ্যাকসিনকে ছাড়পত্র দেওয়া নিয়ে শুরু থেকেই বিতর্ক। এ বার তাতে শামিল হলেন দিল্লির অন্যতম বৃহত্তম চিকিৎসা কেন্দ্র রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসকরা। হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপারিন্টেন্ডেন্টকে চিঠি লিখে কোভ্যাকসিন নিয়ে সংশয়ের কথা জানিয়েছেন তাঁরা।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসকদের সংগঠনের তরফে ওই চিঠিতে লেখা হয়, ‘ভারত বায়োটেকের তৈরি কোভ্যাকসিনের তুলনায় সিরাম ইনস্টিটিউটের কোভিশিল্ডেই আমাদের আস্থা বেশি। কোভ্যাকসিন পরীক্ষার সব ক’টি ধাপ এখনও সম্পূর্ণ করতে পারেনি। সে ক্ষেত্রে টিকাকরণের লক্ষ্যই অধরা থাকে। তাই টিকাকরণে আমাদের সার্বিক যোগদান না-ও দেখা যেতে পারে। কোভিশিল্ড পরীক্ষার সব ক’টি ধাপে উতরে গিয়েছে। টিকাকরণের ক্ষেত্রে সেটি ব্যবহার করতে অনুরোধ জানাচ্ছি’।
আরও পড়ুন: টিকাকরণের শুরুতে রাজ্যে ফেল কেন্দ্রের অ্যাপ, তথ্য হাতেকলমে
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক সংগঠনের ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্মাল্য মহাপাত্র জানিয়েছেন, হাসপাতালের বহু চিকিৎসকই টিকাকরণের জন্য নাম নথিভুক্ত করেননি। তিনি বলেন, ‘‘কোভ্যাকসিন নিয়ে সংশয় রয়েছে আমাদের। পরীক্ষাই সম্পূর্ণ হয়নি। তার চেয়ে কোভিশিল্ডের উপর আমাদের আস্থা বেশি।’’
ব্রিটিশ-সুইডিশ সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি কোভিশিল্ড প্রতিষেধকটি তৈরি করেছে। তাদের প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে ভারতে ওই প্রতিষেধকটি উৎপাদনের দায়িত্বে রয়েছে সিরাম ইনস্টিটিউট। অন্য দিকে, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর সঙ্গে হাত মিলিয়ে কোভ্যাকসিন তৈরি করেছে ভারত বায়োটেক। জরুরি ভিত্তিতে টিকাকরণ শুরু করতে এই দু’টি প্রতিষেধককেই ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ন্যাতা-বালতি ধরা হাতে ডাক্তারদের আগেই টিকা পেলেন মুন্না-সঞ্জয়-চন্দনরা
কিন্তু তিনটি ধাপে পরীক্ষা সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই কোন যুক্তিতে কোভ্যাকসিন-কে ছাড়পত্র দেওয়া হল, তা নিয়ে শুরু থেকেই প্রশ্ন উঠছে। বিরোধী শিবিরের রাজনীতিকরা তো বটেই, দেশের তাবড় চিকিৎসক এবং গবেষকরাও কোভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। যদিও সরকারের তরফে বার বার ‘গুজব’-এ কান না দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।