দেশের মোট আক্রান্ত হলেন ৩৩ লক্ষ ১০ হাজার ২৩৪ জন। গ্রাফিক- তিয়াসা দাস।
বেশ কিছুদিন পর ফের লাফিয়ে বাড়ল দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২০ দিন দৈনিক সংক্রমণ ৬০ হাজারের ঘরেই ঘোরাফেরা করছিল। কোনওদিন তা ৬৮-৬৯ হচ্ছিল, তো কোনওদিন ৬০-৬১ হাজার। কিন্তু গত ২৪ ঘণ্টায় তা ৭৫ হাজার ছাড়িয়ে গেল। এই বৃদ্ধি এখনও অবধি সর্বোচ্চ। গত কালের তুলনায় করোনা পরীক্ষা বেড়েছে লক্ষাধিক। তবে সংক্রমণ হার আট শতাংশেই আটকে রয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৭৫ হাজার ৭৬০ জন নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। এক দিনে এত সংখ্যক মানুষ এর আগে কখনও আক্রান্ত হননি। যার জেরে দেশের মোট আক্রান্ত হলেন ৩৩ লক্ষ ১০ হাজার ২৩৪ জন। ওই সময়ের মধ্যে আমেরিকা ও ব্রাজিলে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৪৩ হাজার ৯১৮ ও ৪৭ হাজার ১৬১ জন। অর্থাৎ আমেরিকা ও ব্রাজিলের তুলনায় ভারতে এখন প্রতি দিনই বেশি লোক নতুন করে করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। বিশ্বে প্রথম স্থানে থাকা আমেরিকাতে মোট আক্রান্ত ৫৮ লক্ষ ২১ হাজার ও দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে ৩৭ লক্ষ ১৭ হাজার।
প্রতি দিন যে সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা হচ্ছে তার মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে সেটাকেই বলা হচ্ছে পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সংক্রমণ হার ৮.১৯ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষা হয়েছে ৯ লক্ষ ২৪ হাজার ৯৯৮ জনের। যা বুধবারের তুলনায় প্রায় এক লক্ষ বেশি।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
আক্রান্তের সংখ্যা যেমন রোজ বাড়ছে, তেমনই প্রচুর মানুষ সুস্থও হয়ে উঠছেন। দেশে কোভিড রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার পরিসংখ্যান শুরু থেকেই আশাব্যাঞ্জক। এখনও পর্যন্ত মোট ২৫ লক্ষ ২৩ হাজার ৭৭১ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন। অর্থাৎ দেশে মোট আক্রান্তের তিন চতুর্থাংশেরও বেশি সুস্থ হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৫৬ হাজার ১৩ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
স্পেন, ফ্রান্স, ইটালি, ব্রিটে
কোভিডে আক্রান্ত ও মৃত্যু দু’টি তালিকাতেই শুরু থেকেই শীর্ষে মহারাষ্ট্র। সেখানে মোট আক্রান্ত ৭ লক্ষ ১৮ হাজার ৭১১ জন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে মোট আক্রান্ত তিন লক্ষ ৯৭ হাজার ২৬১। অন্ধ্রপ্রদেশেও রোজ উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। সেখানে এখনও অবধি আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লক্ষ ৮২ হাজার ৪৬৯ জন। চতুর্থ স্থানে থাকা কর্নাটকে সংখ্যাটা তিন লক্ষ পার করল। উত্তরপ্রদেশও মোট আক্রান্ত দু’লক্ষ ছাড়িয়েছে। দিল্লি (১,৬৫,৭৬৪) ও পশ্চিমবঙ্গ (১,৪৭,৭৭৫), বিহার (১,২৬,৭১৪) ও তেলঙ্গানাতে (১,১৪,৪৮৩) মোট আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
অসমে মোট আক্রান্ত এক লক্ষ ছুঁইছুঁই। গুজরাত ও ওড়িশাতে মোট আক্রান্ত ৮০ হাজারের ঘরে। রাজস্থানে সংখ্যাটা সাড়ে ৭৪ হাজার। কেরল, হরিয়ানা ও মধ্যপ্রদেশে মোট আক্রান্ত ৫০ হাজার পেরিয়েছে। পঞ্জাবে ৪৬ হাজার ও জম্ম ও কাশ্মীরে মোট আক্রান্ত ৩৪ হাজার। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে, ঝাড়খণ্ড, ছত্তীসগঢ়, উত্তরাখণ্ড, গোয়া, পুদুচেরী। ত্রিপুরা, মণিপুর, হিমাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড, অরুণাচল প্রদেশের মতো রাজ্যে মোট আক্রান্ত ১০ হাজারের কম।
পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণ তিন হাজারের আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে। মঙ্গলবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুসারে, নতুন করে ২ হাজার ৯৭৪ জনের দেহে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন ১ লক্ষ ৪৭ হাজার ৭৭৫ জন। এর মধ্যে ১ লক্ষ ১৭ হাজার ৮৫৭ জন সুস্থও হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫৫ জনের। করোনার কবলে এ রাজ্যে এখনও অবধি প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজার ৯৬৪ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)