স্ত্রীর আবেদনে সাড়া দিয়ে খুনের আসামিকে জেল থেকে ছুটি দিন আদালত। প্রতীকী ছবি।
স্ত্রীর আবেদনে সাড়া দিয়ে জেলবন্দি স্বামীকে সাময়িক মুক্তি দিল আদালত। স্ত্রীর সঙ্গে থাকার জন্য ওই ‘ছুটি’ পেয়েছেন তিনি। ৯০ দিনের ‘ছুটি’ শেষ হলে আবার কয়েদিকে জেলে ফিরে যেতে হবে।
ঘটনাটি বিহারের। পটনা হাই কোর্ট সম্প্রতি জেলের ওই কয়েদিকে স্ত্রীর সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য ৯০ দিনের জন্য মুক্তি দিয়েছেন। আসামির বিরুদ্ধে এক যুবককে খুনের অভিযোগ ছিল, যা আদালতে প্রমাণিত। তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। স্ত্রীর আবেদনে সাড়া দিয়ে কিছু দিনের জন্য মুক্তি দেওয়া হয়েছে কয়েদিকে।
স্বামীর মুক্তির আবেদন জানিয়ে পটনা হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন রঞ্জিতা পটেল। তাঁর স্বামী ভিকি আনন্দ পটেল সাত বছর আগে এক যুবককে বেধড়ক পিটিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। দীর্ঘ দিন অসুস্থ থাকার পর সেই যুবকের মৃত্যু হয়। ভিকির উপরেও ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা প্রযুক্ত হয় এবং তিনি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ পান। রঞ্জিতার সঙ্গে বিয়ের মাত্র পাঁচ মাসের মধ্যেই এত কাণ্ড ঘটে যায়। ফলে স্ত্রীর সঙ্গে পাঁচ মাসের বেশি সময় কাটাতে পারেননি তিনি।
রঞ্জিতা আদালতে জানান, তাঁর স্বামী দীর্ঘ সাত বছর ধরে জেল খাটছেন। বিয়ের পাঁচ মাস পর থেকেই তিনি জেলে। এর ফলে স্বামীর সঙ্গে তিনি পর্যাপ্ত সময় কাটাতে পারেননি। তিনি আগামী দিনে বন্ধ্যা হয়ে যেতে পারেন বলেও আদালতে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কয়েদির স্ত্রী। মানবিকতার খাতিরে স্বামীকে কিছু দিনের জন্য মুক্তি দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে রঞ্জিতা আদালতে এ-ও জানান, তাঁদের বিবাহ ছিল সম্পূর্ণ বৈধ।
পটনা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজীব রঞ্জন সিংহ এই আবেদন মঞ্জুর করেছেন। ৯০ দিন তিনি আসামিকে সময় দিয়েছেন। আদালতের এই নির্দেশে খুশি মামলাকারী।
জেলের নিয়ম অনুযায়ী, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় কোনও মহিলা অপরাধ করলে তাঁকে হাজতে পাঠানো যায় না। কারণ, তিনি অপরাধ করেছেন। তাঁর গর্ভের সন্তান নির্দোষ। মায়ের দোষের সাজা তাকে দেওয়ার নিয়ম নেই। সেই একই ভাবে পটনা হাই কোর্ট এ ক্ষেত্রেও স্বামীর অপরাধের সাজা তাঁর স্ত্রীকে দিতে চায়নি। তাই আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে।
আদালতের পর্যবেক্ষণ, জেলবন্দি যে কোনও কয়েদিকেই বিয়ে বা পরিবারের কোনও সদস্য অসুস্থ হলে সাময়িক মুক্তি দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রেও সেই নিয়ম মেনেই ‘ছুটি’ মঞ্জুর করা হয়েছে।