মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ফিরহাদ হাকিম। ফাইল চিত্র।
ক’দিন আগেই বীরভূমে এসে ‘সব পঞ্চায়েতে’ জেতার কথা বলেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার, বোলপুরে তৃণমূলের জেলা কমিটির বৈঠকে সেই সুরই শোনা গেল রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের গলায়। বিরোধীদের ক্ষোভ, জেলবন্দি জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের মতোই বীরভূমকে ‘বিরোধী শূন্য’ করতে চাইছে তৃণমূল।
রবিবার বিকেলে জেলায় আসেন দলের তরফে বীরভূমের পর্যবেক্ষক, পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। বোলপুরে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে কোর কমিটির বৈঠক সেরে জেলা কমিটির বৈঠকে যোগ দেন পুরমন্ত্রী। দল সূত্রে দাবি, সেখানেই ফিরহাদ বলেন, “সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। ১০০ শতাংশ রেজাল্ট করতে হবে জেলায়। যাতে আমরা সব পঞ্চায়েত দখল করতে পারি।’’ বৈঠকে উপস্থিত নেতাদের সূত্রে জানা গিয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে বীরভূম দেখছেন বলে তার বাড়তি গুরুত্ব রয়েছে বলে বার্তা দেন ফিরহাদ। তৃণমূল সূত্রে দাবি, ফিরহাদ বলেন, ‘‘জেলা সভাপতি নেই, আমরা বা আমি যদি দায়িত্ব থাকতাম তাহলে ৮০ শতাংশ হলেও কোনও ব্যাপার ছিল না। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেখানে দায়িত্বে সেখানে ১০০ শতাংশ আসনই পেতে হবে।’’
পুরমন্ত্রীর এই বক্তব্যেই বিরোধীরা পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সন্ত্রাসের আশঙ্কা করছেন। বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডলের অভিযোগ, “উনি যখন বলছেন ১০০ শতাংশ রেজাল্ট করতে হবে, তার মানে বিরোধীদের ভোটে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না। উনি সন্ত্রাসের ইঙ্গিত দিচ্ছেন। তবে তাঁদের এই প্রচেষ্টা কখনওই সফল হবে না।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষের দাবি, “১০০ শতাংশ আসনে জিততে হবে মানে তাঁরা যে পদ্ধতিতে ভোট করতে অভ্যস্ত সেই পদ্ধতিতেই পঞ্চায়েত ভোট করার কথা ভাবছেন। কিন্তু সালটা ২০১৮ নয়, ২০২৩। তাই এটা সম্ভব নয়।” যদিও সিউড়ির বিধায়ক তথা তৃণমূলের জেলা কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, “সন্ত্রাসকে আমরা প্রশ্রয় দিই না, মানুষের মন জয় করে বিধানসভার মতো পঞ্চায়েতও আমরা জিততে চাই। উনি সে কথাই বলেছেন।”
পুরমন্ত্রী ছাড়াও বৈঠকে ছিলেন ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, সাংসদ শতাব্দী রায়, অসিত মাল-সহ জেলার সমস্ত বিধায়ক, পুরপ্রধান, উপ-পুরপ্রধান, ব্লক সভাপতিরা। নির্দল-কাঁটা নিয়েও এ দিন বৈঠকে উপস্থিত সকলকে সতর্ক করেন ফিরহাদ। সূত্রের দাবি, তিনি বলেন, ‘‘টিকিট না পেয়ে যাতে কেউ বিরোধী হিসেবে না দাঁড়ায় সেটা আপনাদেরই দায়িত্ব নিতে হবে।”