নারায়ণ ত্রিপাঠি। —ফাইল চিত্র।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-এরপক্ষে জনসমর্থন জোগাড়ে নামতে হয়েছে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের। এমন পরিস্থিতিতে বিতর্কিত এই আইন নিয়ে এ বার দলের অন্দরেই অন্য সুরশোনা গেল। মধ্যপ্রদেশের বিজেপি বিধায়ক নারায়ণ ত্রিপাঠি জানিয়ে দিলেন, ধর্মের নিরিখে দেশভাগ করা একেবারেই উচিত নয়। এই পদক্ষেপ সংবিধানের পরিপন্থী।
মঙ্গলবার দিল্লিতে ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর-এর একটি সভা থেকে সিএএ-র পক্ষে সওয়াল করেন নরেন্দ্র মোদী। ‘ঐতিহাসিক অন্যায়’ সংশোধন করতে এবং প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সংখ্যালঘুদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতেই সিএএ আনা হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।কিন্তু তাঁর সঙ্গে একমত নন নারায়ণ ত্রিপাঠি। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘বাবাসাহেব অম্বেডকর প্রণেত সংবিধান মেনে চলব, না সেটা কুটি কুটি করে ছিঁড়ে ফেলে দেব, আগে তা ঠিক হওয়া দরকার। সংবিধানে বলা রয়েছে, ধর্ম নিরপেক্ষ দেশে ধর্মের নিরিখে কোনও বিভাজন চলবে না। তার পরেও এ সব চলছে। এতে একটা জিনিসই বোঝায়, হয় আপনি সংবিধানের পক্ষে, নইলে বিপক্ষে।’’
কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে এই মুহূর্তে হিন্দু-মুসলিম সৌহার্দ্যও তলানিতে এসে ঠেকেছে বলে মন্তব্য করেন নারায়ণ ত্রিপাঠি। তিনি বলেন, ‘‘একে অপরের দিকে তাকানো বন্ধ করে দিয়েছে মানুষ। আমাদের গ্রামে মুসলিমরা আগে দেখলেই কুশল বিনিময় করতে এগিয়ে আসতেন। কিন্তু আজকাল আমাদের দিকে তাকাতেও পছন্দ করেন না ওঁরা। এমন পরিস্থিতিতে শান্তি স্থাপন করা কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। মুখে বলি, গোটা বিশ্বই আমার আত্মীয়। তার পরে ধর্মের নিরিখে মানুষের মধ্যে বিভাজন তৈরি করলে দেশ চালানোই দায় হয়ে দাঁড়াবে। গ্রামের দিকে আধার কার্ড পেতেই কালঘাম ছুটে যায় দরিদ্র মানুষের। নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে যাবতীয় নথিপত্র কীভাবে জোগাড় করবেন তাঁরা?’’
আরও পড়ুন: ফাঁসি হচ্ছেই, মুকেশের শেষ আর্জি খারিজ সুপ্রিম কোর্টে
আরও পড়ুন: ফাঁসির তিন দিন আগে ফের সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ নির্ভয়াকাণ্ডে দণ্ডিত অক্ষয়
সিএএ-র বিরুদ্ধে মুখ খুললেই আজকাল ‘দেশদ্রোহী’ বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে দলের বিরাগভাজন হতে হবে না তো তাঁকে? জবাবে ত্রিপাঠি বলেন, ‘‘সিএএ-র বিরুদ্ধে কথা বলছি। তাতে কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছি, এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই। কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার কোনও ইচ্ছাই নেই আমার। বিজেপি ছেড়ে কোথাও যাচ্ছি না। ভোটব্যাঙ্কের কথা মাথায় রেখেই সিএএ আনা হয়েছে। এতে বিজেপি লাভবান হচ্ছে বটে, কিন্তু দেশের কোনও লাভ হচ্ছে না।’’