নীতীশ কুমার। ছবি পিটিআই।
থ্রিলার ছবিতে ‘কার চেজ়িং’-এর মতোই উত্তেজনা! ফল বদলাচ্ছে ঘনঘন, একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল কে, বদলে যাচ্ছে তা-ও। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পাঁচ দিন ধরে চলা শ্লথ গণনা, গণনা নিয়ে দাবি-পাল্টা দাবি ও উত্তেজনার পর রাতে দিল্লিতে রসিকতা ঘুরছে— ‘পেনসিলভেনিয়ায় এগিয়ে নীতীশ!’ আমেরিকায় নির্বাচনের ফল, ডোনাল্ড ট্রাম্পের তরফে বার বার ‘ভোটচুরি ও জোচ্চুরির’ অভিযোগ, বাইডেন শিবিরের পাল্টা হুঙ্কার, সব মিলিয়ে কেউ কেউ আমেরিকার নির্বাচনে ছায়া দেখেছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের। আজ গণনায় দেরি, তৎসহ উত্তেজনায় আবার ফিরে এল আমেরিকারই উদাহরণ।
কিন্তু হচ্ছেটা কী? সম্পূর্ণ ফল প্রকাশে এত দেরি কেন? গণনা তো শুরু হয়েছে সকাল ৮টা থেকে। গণনা শেষ হতে রাত গড়িয়ে যাবে বলে জানিয়েছে খোদ নির্বাচন কমিশন। কিন্তু বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্রে (ইভিএম) গণনায় এত সময় লাগছে কেন? দুপুরেই সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করার পরে ব্যাখ্যা দিতে আসরে নেমে নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিল, করোনার নিয়মবিধি মানতে গিয়েই ফলপ্রকাশে দেরি হচ্ছে। তাই চূড়ান্ত ফলপ্রকাশ হতে রাত গড়িয়ে যাবে বলে মনে করেন ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার চন্দ্রভূষণ কুমার।
করোনা-কালে বিহারেই দেশের মধ্যে প্রথম ভোটগ্রহণ হল। অতিমারির কারণে সেখানে একাধিক বিধিনিষেধ মেনেই হয়েছে প্রচার থেকে শুরু করে গণনা। কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে, এ বারে বিহারে ভোট দিয়েছেন প্রায় ৪ কোটি ১৬ লক্ষ ভোটার। কিন্তু অন্য বার নির্বাচনে যেখানে বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ফল সম্পূর্ণ ঘোষণা হয়ে যেত, আজ সেই সময়ে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট গণনা হয়েছিল, আর অন্তত ১৮টি আসনে দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর ভোটের ফারাক ছিল ১০০০ এরও কম।
কারণ, করোনা বিধির কারণে বুথ পিছু ভোটারের সংখ্যা ১৫০০-র বদলে ১০০০ রাখা হয়েছিল, ফলে বুথের সংখ্যা ৬৩ শতাংশ বেড়েছিল গত ভোটের তুলনায়। বেড়েছে ইভিএমের সংখ্যা। নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুসারে, ২০১৫ সালে ৩৮টি ভোট গণনাকেন্দ্র ছিল। এ বার তা বেড়ে হয়েছে ৫৫টি। কিন্তু শারীরিক দূরত্ব বিধি মানতে গিয়ে গণনাকেন্দ্রে একটি কাউন্টিং হলে ১৪টি টেবিলের বদলে ৭টি করা হয়েছে। সব মিলিয়ে আগে এক-একটি কেন্দ্রের গণনা সম্পূর্ণ করতে ২৫-২৬ রাউন্ড গণনা করতে হত। এ বার তা বেড়ে হয়েছে ৩৫ রাউন্ড। স্বাভাবিক কারণে ফল পুরোপুরি জানতে অনেকটা বেশি সময় লাগবে বলেই জানিয়ে দিয়েছে কমিশন।