মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠক প্রধানমন্ত্রীর। ছবি: টুইটার থেকে
১৪ এপ্রিলের পর লকডাউনের সময়সীমা আরও বাড়ছে বলে গুজব ছড়িয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্র সেই গুজব উড়িয়ে দিয়েছিল। আজ বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সেও করোনাভাইরাস নিয়ে বৈঠকে তেমনই ইঙ্গিতই দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যদিও তার জন্য লকডাউনের পরের পরস্থিতি মোকাবিলার জন্য কেন্দ্র ও রাজ্যকে একমুখী নির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছকে রাখার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। ফের যাতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে না পড়ে তার জন্য ‘যুদ্ধকালীন তৎপরতা’য় কাজ করার কথাও মোদী মুখ্যমন্ত্রীদের বলেছেন বলে প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রে খবর। আলোচনা হয়েছে নিজামউদ্দিনের পরিস্থিতি নিয়েও। তবে কেন্দ্রীয় অনুদান বাড়ানোর আর্জি জানালেও তাতে কর্ণপাত করা হয়নি বলে অভিযোগ কয়েক জন মুখ্যমন্ত্রীর।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে গত ২৪ মার্চ সারা দেশে তিন সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তার মধ্যে এক সপ্তাহ পার হয়েছে। এখনও সংক্রমণ বাড়ছে। তার জেরে সারা দেশে উদ্বেগ ছড়িয়েছে যে লকডাউনের মেয়াদ আরও বাড়তে পারে। এই পরিস্থিতিতেই আজ মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিয়ো-বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দিয়েছেন ৯ জন মুখ্যমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও বৈঠকে ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ-সহ কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকগুলির শীর্ষ আমলারা। তবে সেখানেও নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখেই হয়েছে বৈঠক।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেশে ছড়িয়ে পড়ার পর এই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে দ্বিতীয়বার বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী। এ দিনের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মুখ্যমন্ত্রীদের বলেছেন, ‘‘(লকাডউনের পরে) করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যাতে ফের ছড়িয়ে না পড়ে তার জন্য কেন্দ্র ও রাজ্যের সমন্বয়ের মাধ্যমে একটি যৌথ পরিকল্পনা তৈরি করা জরুরি।’’ বৈঠক সূত্রে খবর, মোদী বলেছেন, লকডাউন উঠে যাওয়ার পরেই আগেকার মতো সব কিছু গতানুগতিক চলতে শুরু করল, এমনটা হতে দেওয়া যায় না। বরং তার পরেও কিছু নিয়ন্ত্রণ বা সতর্কতা নিতে হবে।
আরও পড়ুন: নিজামউদ্দিন থেকে ফিরেই পর পর ধর্মসভা, সংস্পর্শে কত জন? হিসেব নেই এখনও
লকডাউনের জেরে প্রায় সব রাজ্যেই রসদ, ওষুধের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীতে টান পড়ছে। সেই বিষয়টি নিয়ে গত রবিবার ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। দেশবাসীকে সমস্যায় ফেলার জন্য ক্ষমা চেয়ে নিয়েও বলেছিলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শৃঙ্খল ভাঙার জন্য এ ছাড়া আর বিকল্প কোনও পথ নেই। এ দিনের বৈঠকেও সেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। খাদ্যসামগ্রী, ওষুধ সরবরাহ ও সেগুলি উৎপাদনের কাঁচামালের জোগানে যাতে ঘাটতি না হয়, তার জন্য মুখ্যমন্ত্রীদের নিশ্চিত করতে বলেছন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: এক সপ্তাহে মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে, কোভিড-১৯ নিয়ে উদ্বেগে হু
বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২০০০। প্রতিদিন লাফিয়ে বাড়ার অন্যতম কারণ হিসেবে উঠে আসছে দিল্লির নিজামউদ্দিন মসজিদের জামাত। মৃতের সংখ্যা ৫০। ওই জামাতে যোগ দেওয়া হাজার দু’য়েক মানুষ ছড়িয়ে পড়েছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। তাঁদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ আগেই দিয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। বৃহস্পতিবারের বৈঠকেও সেই বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে। নিজামউদ্দিনে যোগ দেওয়া এবং তাঁদের সংস্পর্শে আসা লোকজনকে যাতে দ্রুত চিহ্নিত করে কোয়রান্টিন, স্ক্রিনিং বা টেস্টের ব্যবস্থা করা যায়, সেটা নিশ্চিত করার জন্যও বলেছেন নরেন্দ্র মোদী।
অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।