প্রতীকী ছবি।
চারটি সংস্থা আগেই ভারতের বাজারে বাণিজ্যিক ভাবে বিক্রি করছিল। এ বার পঞ্চম সংস্থা হিসেবে সবচেয়ে সস্তায় করোনাভাইরাসের জেনেরিক ওষুধ রেমডেসিভির নিয়ে এল জাইডাস ক্যাডিলা। অন্যান্য সংস্থাগুলির এই ওষুধের ১০০ মিলিগ্রামের দাম যেখানে ৪ হাজার টাকা বা তার বেশি, ক্যাডিলা সেখানে দাম নির্ধারণ করেছে ২৮০০ টাকা। এর ফলে ভারতের বাজারে এক দিকে যেমন করোনার ওষুধের অপ্রতুলতা যেমন কমবে, তেমনই চিকিৎসার খরচও কমবে বলেই মনে করছেন চিকিৎসক-বিশেষজ্ঞরা।
বিশ্বের মধ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যায় তৃতীয় স্থানে ভারত। মার্কিন সংস্থা জিলিয়াড সায়েন্সেস-এর তৈরি করোনাভাইরাসের ওষুধ রেমডেসিভির দেশের বাজারে এনেছে চারটি সংস্থা— হেটেরো ল্যাবস, সিপলা, মাইল্যান এনভি এবং জুবিল্যান্ট লাইফ সায়েন্সেস। কিন্তু তাতেও সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে এই ওষুধের জোগান প্রয়োজনের তুলনায় কম বলে বিভিন্ন রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি চিকিৎসক ও চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত অনেকেই ওই ওষুধের অভাবের কথা জানিয়েছেন।
সেই কথা মাথায় রেখেই বৃহস্পতিবার এই রেমডেসিভির-এর জেনেরিক ওষুধ রেমড্যাক বাজারে আনল পঞ্চম ভারতীয় ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা ক্যাডিলা। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, কোভিড-১৯ আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য রেমডেসিভির-এর ভার্সন রেমড্যাক নামে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বিক্রি করা হবে। ১০০ মিলিগ্রামের এক একটি শিশির দাম ধার্য করা হয়েছে ২৮০০ টাকা।
আরও পড়ুন: করোনা আক্রান্ত রাম জন্মভূমি ট্রাস্টের প্রধান পুরোহিত, ভূমিপূজনে মোদীর সঙ্গে ছিলেন একমঞ্চে
আর এক ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা সিপলা রেমডেসিভির বাজারে আসার আগে জানিয়েছিল, ভারতের বাজারে ১০০ মিলিগ্রামের দাম পড়বে ৫০০০ টাকার মতো। তবে বাজারে আনার সময় সেই দাম হয় ৪০০০ টাকা। এখনও সেই দামেই বিক্রি হচ্ছে। অন্য দিকে হায়দরাবাদের সংস্থা মাইলান এনভি এই ওষুধ বিক্রি করছে ৪৮০০ টাকা। সেখানে ক্যাডিলার নির্ধারিত দাম অনেকটাই সস্তা।
করোনার চিকিৎসায় দেশের বহু বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে অত্যধিক বিল ধার্য করার অভিযোগ উঠেছে। চিকিৎসা সংক্রান্ত নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলির বহু নির্দেশিকার পরেও অনেক হাসপাতালই তা মানছে না বলে অভিযোগ উঠছে প্রায় প্রতিদিন। বিপুল অঙ্কের টাকা অগ্রিম জমা না দেওয়ায় রোগীকে ভর্তি না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কলকাতাতেও। অ্যাম্বুল্যান্সেই ওই রোগীর মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ। বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ঘিরে সরগরম রাজ্যের স্বাস্থ্যমহল। এ রাজ্য-সহ দেশের অন্যান্য প্রান্তেও এমন অভিযোগের অন্ত নেই। এমন পরিস্থিতিতে তুলনায় সস্তা ওষুধ বাজারে আনায় করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার খরচ কিছুটা কমবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যদিও এক শ্রেণির বেসরকারি হাসপাতালের ফায়দা লোটার চেষ্টা তাতেও কমবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান চিকিৎসক-বিশেষজ্ঞদেরই একাংশ।
আরও পড়ুন: মৃত্যুর নিরিখে ব্রিটেনকে টপকালেও আশা জাগাচ্ছে সংক্রমণ ও সুস্থ হওয়ার হার
অন্য দিকে, শুধু ভারতে নয়, বিশ্বের প্রায় ১২৭টি দেশে রেমডেসিভির সরাসরি সরবরাহের জন্য সংশ্লিষ্ট দেশের ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির সঙ্গে চুক্তি করেছে এই ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা জিলিয়াড সায়েন্সেস। ভারতে সেই তালিকায় রয়েছে ডক্টর রেড্ডির ল্যাব এবং সিনার্জি ইন্টারন্যাশনাল।