দেশে করোনা আক্রান্তের মোট সংখ্যা দু’লক্ষ ছুঁই ছুঁই। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
রোজই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। মোট আক্রান্তের হিসাবে জার্মানি ও ফ্রান্সকে পিছনে ফেলে সোমবার ভারত উঠে এসেছিল বিশ্বের সপ্তম স্থানে। সেই বৃদ্ধির ধারা মঙ্গলবারও অব্যাহত। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন আট হাজার ১৭১ জন। এই বৃদ্ধির জেরে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা হল এক লক্ষ ৯৮ হাজার ৭০৬ জন। আক্রান্তের নিরিখে রাজ্যগুলির মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, দিল্লি ও গুজরাত।
আক্রান্তের পাশাপাশি মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে দেশে। মোট মৃত্যুর নিরিখে চিন ও রাশিয়াকে আগেই টপকে গিয়েছিল ভারত। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার থাবায় দেশে মৃত্যু হয়েছে ২০৪ জনের। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, কোভিড-১৯-এর কারণে দেশে মোট মৃত্যু হল পাঁচ হাজার ৫৯৮ জনের। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মৃত্যু হয়েছে দু’হাজার ৩৬২ জনের। গুজরাতে এক হাজার ৬৩ জনের। এর পর রয়েছে রাজধানী দিল্লি। সেখানে মোট ৫২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। শতাধিক মৃত্যুর তালিকায় রয়েছে মধ্যপ্রদেশ (৩৫৮), পশ্চিমবঙ্গ (৩২৫), উত্তরপ্রদেশ (২১৭), রাজস্থান (১৯৮), তামিলনাড়ু (১৮৪)।
দেশে আক্রান্তের সংখ্যা সব থেকে বেশি মহারাষ্ট্রে। সেখানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৭০ হাজার ছাড়াল। গত ২৪ ঘণ্টায় দু’হাজার ৩৫৮ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন সেখানে। এ নিয়ে সে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন ৭০ হাজার ১৩ জন। এর পরই তামিলনাড়ু। সেখানে মোট আক্রান্ত ২৩ হাজার ৪৯৫ জন। রাজধানী দিল্লিতে মোট ২০ হাজার ৮৩৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৯০ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন দিল্লিতে। গুজরাতে মোট আক্রান্ত ১৭ হাজার ২০০ জন। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে রাজস্থান (৮,৯৮০), মধ্যপ্রদেশ (৮,২৮৩), উত্তরপ্রদেশ (৮, ০৭৫), পশ্চিমবঙ্গ (৫,৭৭২), বিহার (৩,৯২৬), অন্ধ্রপ্রদেশ (৩,৭৮৩), কর্নাটক (৩,৪০৮), তেলঙ্গানা (২,৭৯২), জম্মু ও কাশ্মীর (২,৬০১), হরিয়ানা (২,৩৫৬), পঞ্জাব (২,৩০১), ওড়িশা (২,১০৪), আসাম (১,৩৯০), কেরল (১,৩২৬), উত্তরাখণ্ড (৯৫৮)।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
আরও পড়ুন: আনলক ওয়ান-এ ছন্দে ফেরার চেষ্টা
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় পশ্চিমবঙ্গে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৭১ জন। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন পাঁচ হাজার ৭৭২ জন। এ রাজ্যে মোট মৃত্যু হয়েছে ৩২৫ জনের। যদিও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের হিসাব অনুসারে, সরাসরি করোনার কারণে রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৫৩ জনের। ৭২ জনের মৃত্যু হয়েছে কোমর্বিটিডিতে। করোনার কারণে গত ২৪ ঘণ্টায় আট জনের মৃত্যু হয়েছে রাজ্যে।
আরও পড়ুন: ‘মিত্রোঁ’ তো পাক অ্যাপ! নেট দুনিয়ায় কটাক্ষ
করোনা আক্রান্তের সংখ্যা রোজদিন উল্লেখযোগ্য হারে বাড়লেও, আক্রান্তদের সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যাটাও কম না। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে এটাই কিছুটা আশার আলো। কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর এখনও অবধি ৯৫ হাজার ৫২৭ জন সুস্থ হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন তিন হাজার ৭০৮ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)