গ্রাফিক-শৌভিক দেবনাথ।
লাফ দিয়ে বেড়ে চলেছে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। প্রতিদিন দশ হাজারেরও বেশি নতুন সংক্রমণ হওয়া নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছে। বৃহস্পতিবারও তার অন্যথা হল না। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুসারে গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ হাজার ৮৮১ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। এক দিনে আক্রান্তের হিসাবে এখনও অবধি এটাই সর্বোচ্চ। এই বৃদ্ধির জেরে দেশে মোট কোভিডে আক্রান্ত হলেন তিন লক্ষ ৬৬ হাজার ৯৪৬ জন।
আক্রান্তের পাশাপাশি মৃত্যু সংখ্যাও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। এক লাফে দু’হাজার বেড়ে বুধবার দেশে ১০ হাজারের গণ্ডি পেরিয়েছে মৃত্যু সংখ্যা। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার থাবায় মৃত্যু হয়েছে ৩৩৪ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট মৃত্যু হল ১২ হাজার ২৩৭ জনের। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মৃত্যু হয়েছে পাঁচ হাজার ৬৫১ জনের। ধারাবাহিকভাবে বেড়ে রাজধানী দিল্লিতে মৃত্যু সংখ্যা দাঁড়াল এক হাজার ৯০৪-এ। তৃতীয় স্থানে থাকা গুজরাতে মারা গিয়েছেন এক হাজার ৫৬০ জন। এর পর তালিকায় রয়েছে তামিলনাড়ু (৫৭৬), পশ্চিমবঙ্গ (৫০৬), মধ্যপ্রদেশ (৪৮২), উত্তরপ্রদেশ (৪৩৫), রাজস্থান (৩১৩), তেলঙ্গানা (১৯২) ও হরিয়ানা (১৩০) ও কর্নাটক (১০২)।
এক লক্ষ পার করে দেশের মধ্যে আক্রান্তের শীর্ষে সেই মহারাষ্ট্র। গত ২৪ ঘণ্টায় তিন হাজার ৩০৭ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। সে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন এক লক্ষ ১৬ হাজার ৭৫২ জন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুর আক্রান্ত সংখ্যা ৫০ হাজার পেরলো। সেখানে মোট আক্রান্ত ৫০ হাজার ১৯৩ জন। তৃতীয় স্থানে থাকা দিল্লিতে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৪৭ হাজার ১০২ জন। চতুর্থ স্থানে থাকা গুজরাতে মোট করোনা আক্রান্ত ২৫ হাজার ৯৩ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, পশ্চিমবঙ্গ ও মধ্যপ্রদেশ ১০ হাজারের গণ্ডি পার করে এগিয়ে চলেছে। উত্তরপ্রদেশে (১৪,৫৯৮), রাজস্থানে (১৩,৫৪২), পশ্চিমবঙ্গে (১২,৩০০) ও মধ্যপ্রদেশে (১১,২৪৪) জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে, হরিয়ানা (৮,৮৩২), কর্নাটক (৭,৭৩৪), অন্ধ্রপ্রদেশ (৭,০৭১), বিহার (৬,৯৪২), তেলঙ্গানা (৫,৬৭৫) ও জম্মু ও কাশ্মীর (৫,৪০৬)। সংক্রমিতের সংখ্যা পাঁচ হাজারের নীচে রয়েছে অসম (৪,৬০৫), ওড়িশা (৪,৩৩৮) পঞ্জাব (৩,৪৯৭), কেরল (২,৬৯৭), উত্তরাখণ্ড (২,০২৩), ঝাড়খণ্ড (১,৮৯৫), ছত্তীসগঢ় (১,৮৬৪) ও ত্রিপুরা (১,১৩৫)-র মতো রাজ্যগুলির।
পশ্চিমবঙ্গে মৃত্যু ছাড়িয়েছে ৫০০-র গণ্ডি। করোনার কবলে পড়ে ৫০৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন এ রাজ্যে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় পশ্চিমবঙ্গে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৯১ জন। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন ১২ হাজার ৩০০ জন। কলকাতা ও দুই ২৪ পরগনা ছাড়িয়ে পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য জেলাগুলিতেও রোজদিন বাড়ছে সংক্রমণ।
করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি, আক্রান্তদের সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যাটাও উল্লেখযোগ্যহারে বাড়ছে। দেশে অ্যক্টিভ রোগীর থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যাটা এখন বেশি। কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর এখনও অবধি এক লক্ষ ৯৪ হাজার ৩২৫ জন সুস্থ হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন সাত হাজার ৩৯০ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)