মহারাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়াল। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
চিনকে টপকে ছিল আগেই। এ বার করোনাভাইরাসে আক্রান্তের মোট সংখ্যায় ইরানকেও টপকে গেল ভারত। ঢুকে পড়ল বিশ্বে করোনা আক্রান্ত দেশগুলির মধ্যে প্রথম দশে। কোভিডে-১৯এ আক্রান্তের হিসাবে আমেরিকা, ব্রাজিল, রাশিয়া, ব্রিটেন, স্পেন, ইটালি, ফ্রান্স, জার্মানি, তুরস্কের পরই এখন ভারত।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় এ দেশে আক্রান্ত হয়েছেন ছ’হাজার ৯৭৭ জন। এই বৃদ্ধির জেরে করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্ত এক লক্ষ ৩৮ হাজার ৮৪৫ জন। আক্রান্তের সংখ্যা সব থেকে বেশি মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, গুজরাত ও দিল্লি— এই চারটি রাজ্যে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের হিসেবে, গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ১৫৪ জনের। এই নিয়ে দেশে কোভিডের কারণে মৃত্যু হয়েছে মোট চার হাজার ২১ জনের। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৬৩৫ জনের। ৮৫৮ জন মারা গিয়েছেন গুজরাতে। মধ্যপ্রদেশে মৃতের সংখ্যা ২৯০, পশ্চিমবঙ্গে ২৭২। শতাধিক মৃত্যুর তালিকায় রয়েছে দিল্লি (২৬১), রাজস্থান (১৬৩), উত্তরপ্রদেশ (১৬১) ও তামিলনাড়ু (১১১)।
দেশের মধ্যে প্রথম করোনা সংক্রমণের সন্ধান মিলেছিল কেরলে। তার কয়েক দিনের মধ্যেই আক্রান্তের সংখ্যায় শীর্ষ উঠেছিল মহারাষ্ট্র। তার পর থেকে মহারাষ্ট্রের চেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়নি অন্য কোনও রাজ্যে। সেই মহারাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেল ৫০ হাজারের গণ্ডি। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন তিন হাজার ৪১ জন। এ নিয়ে সে রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৫০ হাজার ২৩১ জন।
লেখচিত্র-১
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
আক্রান্তের হিসাবে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে তামিলনাড়ু। সে রাজ্যে মোট কোভিড-১৯ আক্রান্ত ১৬ হাজার ২৭৭ জন। এর পরে রয়েছে গুজরাত। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ হাজার ৫৬ জন। রাজধানী দিল্লিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ হাজার ৪১৮ জন। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে রাজস্থান (৭,০২৮), মধ্যপ্রদেশ (৬,৬৬৫), উত্তরপ্রদেশ (৬,২৬৮), পশ্চিমবঙ্গ (৩,৬৬৭), অন্ধ্রপ্রদেশ (২,৮২৩), বিহার (২,৫৮৭), কর্নাটক (২,০৮৯), পঞ্জাব (২,০৬০), তেলঙ্গানা (১,৮৫৪), জম্মু-কাশ্মীর (১,৬২১), ওড়িশা (১,৩৩৬) ও হরিয়ানা (১,১৮৪)।
আরও পড়ুন: আরও সহায়তা চাই, মোদীকে চিঠি অধীরের
আরও পড়ুন: বারাসু, এলিফ্যান্ট আপেল, ড্রাগন ফ্রুট... দুর্লভ ফল চাষ করে স্বনির্ভরতার নতুন পথ দেখাচ্ছেন এঁরা
পশ্চিমবঙ্গে করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩,৬৬৭ জন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের হিসেবে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২০৮ জন। রাজ্যে মোট মৃত্যু হয়েছে ২৭২ জনের। যদিও রাজ্য সরকারের হিসেবে, করোনাভাইরাসের জেরে মৃতের সংখ্যা ২০০। বাকি ৭২ জনের মৃত্যু হয়েছে কোমর্বিডিটির কারণে।
করোনাভাইরাসে যেমন মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন, তেমন সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যাটাও নেহাত কম না। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে এটাই যেন আশার আলো। কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর এখনও অবধি সুস্থ হয়েছেন ৫৭ হাজার ৭২১ জন। তার মধ্যে তিন হাজার ২৮০ জন সুস্থ হয়েছেন গত ২৪ ঘণ্টায়।
লেখচিত্র-২
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)