করোনাভাইরাসে দেশে আক্রান্তের সংখ্য়া এক লক্ষ ৯০ হাজারের গন্ডি পেরিয়ে গেল। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
রোজই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। শনিবারের আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি ছাপিয়ে গিয়েছিল রবিবার। সেই সংখ্যাকে ফের ছাপিয়ে গেল সোমবার। এই বৃদ্ধির জেরে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক লক্ষ ৯০ হাজারের গন্ডি পেরিয়ে গেল। পাশাপাশি বিশ্বে মোট আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে ভারত চলে এল নবম থেকে সপ্তম স্থানে। টপকে গেল জার্মানি ও ফ্রান্সকে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন আট হাজার ৩৯২ জন। এই বৃদ্ধির জেরে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা হল এক লক্ষ ৯০ হাজার ৫৩৫ জন। আক্রান্তের নিরিখে রাজ্যগুলির মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, দিল্লি ও গুজরাত।
আক্রান্তের পাশাপাশি মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে। মোট মৃত্যুর নিরিখে চিনকে আগেই পিছনে ফেলেছিল ভারত। জন্স হপকিন্স ইউনিভার্সিটি ও মেডিসিনের তথ্য অনুসারে, এ বার রাশিয়াকেও মৃত্যু সংখ্যায় পিছনে ফেলল ভারত। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার থাবায় দেশে মৃত্যু হয়েছে ২৩০ জনের। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, কোভিড-১৯-এর কারণে দেশে মোট মৃত্যু হল পাঁচ হাজার ৩৯৪ জনের। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মৃত্যু হয়েছে দু’হাজার ২৮৬ জনের। গুজরাতে এক হাজার ৩৮ জনের। এর পর রয়েছে রাজধানী দিল্লি। সেখানে মোট ৪৭৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। শতাধিক মৃত্যুর তালিকায় রয়েছে মধ্যপ্রদেশ (৩৫০), পশ্চিমবঙ্গ (৩১৭), উত্তরপ্রদেশ (২১৩), রাজস্থান (১৯৪), তামিলনাড়ু (১৭৩)।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
দেশে আক্রান্তের সংখ্যা সব থেকে বেশি মহারাষ্ট্রে। গত ২৪ ঘণ্টায় দু’হাজার ৪৮৭ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন সেখানে। এ নিয়ে সে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন ৬৭ হাজার ৬৫৫ জন। এর পরই তামিলনাড়ু। সেখানে মোট আক্রান্ত ২২ হাজার ৩৩৩ জন। রাজধানী দিল্লিতে ১৯ হাজার ৮৪৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। গুজরাতে ১৬ হাজার ৭৭৯ জন। এর ক্রমান্বয়ে রয়েছে রাজস্থান (৮,৮৩১), মধ্যপ্রদেশ (৮,০৮৯), উত্তরপ্রদেশ (৭,৮২৩), পশ্চিমবঙ্গ (৫,৫০১), বিহার (৩,৮১৫), অন্ধ্রপ্রদেশ (৩,৬৭৯), কর্নাটক (৩,২২১), তেলঙ্গানা (২,৬৯৮), জম্মু ও কাশ্মীর (২,৪৪৬), পঞ্জাব (২,২৬৩), হরিয়ানা (২,০৯১), ওড়িশা (১,৯৪৮), আসাম (১,২৭২), কেরল (১,২৬৯), উত্তরাখণ্ড (৯০৭)।
আরও পড়ুন: দুঃখে দুঃখী, কিন্তু হাত উপুড় নয় মোদীর
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় পশ্চিমবঙ্গে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩৭১ জন। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন পাঁচ হাজার ৫০১ জন। এ রাজ্যে মোট মৃত্যু হয়েছে ৩১৭ জনের। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের হিসাব অনুসারে সরাসরি করোনার কারণে রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৪৫ জনের। ৭২ জনের মৃত্যু হয়েছে কোমর্বিটিডিতে।
আরও পড়ুন: কড়া লকডাউনেও কেন বাড়ছে করোনা-সংক্রমণ? প্রশ্নের মুখে অস্বস্তিতে কেন্দ্র
করোনা আক্রান্তের সংখ্যা রোজদিন উল্লেখযোগ্য হারে বাড়লেও, আক্রান্তদের সুস্থ হওয়ার সংখ্যাটাও কম না। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে এটাই কিছুটা আশার আলো। কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর এখনও অবধি ৯১ হাজার ৮১৯ জন সুস্থ হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন চার হাজার ৮৩৫ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)