দেশের কোভিড পরিসংখ্যান। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
পর পর তিন দিন দেশের দৈনিক সংক্রমণ ১ লক্ষ ছাড়াল। রোজই তা বাড়তে থাকল। বুধবার ১.১৫ লক্ষ, বৃহস্পতিবার ১.২৬ লক্ষের পর শুক্রবার দেশে আক্রান্ত হলেন ১ লক্ষ ৩১ হাজার ৯৬৮ জন। দৈনিক মৃত্যুও বাড়ল। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হল ৭৮০ জনের। দেশের সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৯ লক্ষ ৭৯ হাজার ছাড়িয়ে গেল।
দেশের দৈনিক আক্রান্তের শীর্ষে সেই মহারাষ্ট্র। সেখানে নতুন আক্রান্ত ৫৬ হাজার ২৮৬। দৈনিক মৃত্যুও বাড়ছে সে রাজ্যে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে মহারাষ্ট্রে। ছত্তীসগঢ়ে শুক্রবার আক্রান্ত ১০ হাজারের বেশি। অল্প সময়ে লাগামছাড়া হল উত্তরপ্রদেশও। একদিনে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় সাড়ে ৮ হাজার। দিল্লিতেও তা প্রায় সাড়ে ৭ হাজার। কর্নাটকে সাড়ে ৬ হাজার। কেরল, তামিলনাড়ু, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশে একদিনে আক্রান্ত ৪ হাজারের বেশি। রাজস্থানে সাড়ে ৩ হাজার, পঞ্জাবে ৩ হাজার জন আক্রান্ত হয়েছেন গত ২৪ ঘণ্টায়। দেশের মোট আক্রান্তের অধিকাংশই এই ক’টি রাজ্য থেকে। এ ছাড়া হরিয়ানা, পশ্চিমবঙ্গ, তেলঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ডে দৈনিক আক্রান্ত দেড় থেকে আড়াই হাজারের আশপাশে।
করোনা সংক্রমণের বৃদ্ধি রুখতে রাজ্যগুলিকে ‘কড়া’ হওয়ার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। রাত্রিকালীন কার্ফু জারির পাশাপাশি টিকাকরণের বিষয়ে জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এর পরই কর্নাটকে বেঙ্গালুরু এবং আর ৬টি শহরে জারি হল রাত্রিকালীন কার্ফু। ২০ এপ্রিল পর্যন্ত রাত ১০ থেকে শুরু হয়ে ভোর ৫টা অবধি চলবে এই কার্ফু। নয়ডাতেও জারি হয়েছে লকডাউন। মধ্যপ্রদেশে শনিবার সন্ধ্যা থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত লকডাউন জারির কথা ঘোষণা করেছেন। মহারাষ্ট্রে রাত্রিকালীন কার্ফু চলছিলই। কিন্তু আজ, শুক্রবার থেকে সেখানে শুরু হবে সপ্তাহান্তের লকডাউন।
এই আংশিক লকডাউনের প্রয়োজনের কথা বৃহস্পতিবার উঠে এসেছিল প্রধানমন্ত্রীর কথাতেও। মোদী বলেছিলেন, “রাত্রিকালীন কার্ফুর উপযোগিতা মেনে নিয়েছে গোটা পৃথিবী। কার্ফু থাকলে মনে থাকবে যে আমরা করোনা পরিস্থিতিতে রয়েছি।” পাশাপাশি বেশি সংখ্যক মানুষকে টিকা নেওয়ার আবেদন করেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে টিকা দেওয়া হয়েছে ৪১ লক্ষ ৩৫ হাজার মানুষকে। এখন অবধি দেশে মোট টিকার ডোজ দেওয়া হয়েছে ৯ কোটি ৪৩ লক্ষ ৩৪ হাজার ২৬২।
বিভিন্ন জায়গায় আংশিক লকডাউন, রাত্রিকালীন কার্ফু হলেও হাটে বাজারে, রাস্তা-ঘাটে জনসচেতনতার অভাব দেশজুড়েই স্পষ্ট। যে সব রাজ্যে নির্বাচন চলছিল সেখানে রাজনৈতিক জনসভাগুলিতে করোনাবিধি ভয়াবহ ভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে। শুক্রবার সকালে মুম্বইয়ের বাজারগুলিতে ভিড় এই পরিস্থিতিতে ভয় বাড়াচ্ছে। কেন্দ্রও জানিয়েছে, জনসভা, বিয়েবাড়ির মতো অনুষ্ঠানগুলি থেকে বেশি ছড়াচ্ছে করোনা। এই পরিস্থিতিতে টিকা নেওয়ার পাশাপাশি মাস্ক পরা এবং ভিড় এড়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।