গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮ হাজার ৫২২ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
লাফ দিয়ে বাড়তে বাড়তে ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে পাঁচ লক্ষ ছাড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮ হাজার ৫২২ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হলেন পাঁচ লক্ষ ৬৬ হাজার ৮৪০ জন। মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু ও দিল্লি— দেশের মোট আক্রান্তের ৬০ শতাংশই এই তিনটি রাজ্য থেকে। তবে, দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যার ৫৯ শতাংশই সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
আক্রান্তের পাশাপাশি বাড়ছে মৃত্যুও। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৪১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট ১৬ হাজার ৮৯৩ জন প্রাণ হারালেন করোনার কারণে। এর মধ্যে সাত হাজার ৬১০ জন মারা গিয়েছেন মহারাষ্ট্রে। রাজধানী দিল্লিতে দু’হাজার ৬৮০ জন। তৃতীয় স্থানে থাকা গুজরাতে এক হাজার ৮২৭ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনা। হাজার পেরনোর তালিকায় ঢুকে পড়েছে তামিলনাড়ুও। সেখানে মৃতের সংখ্যা এক হাজার ১৪১। উত্তরপ্রদেশ (৬৭২), পশ্চিমবঙ্গ (৬৫৩), মধ্যপ্রদেশ (৫৬৪), রাজস্থান (৪০৫)-এ মৃত্যুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া শতাধিক মৃত্যুর তালিকায় রয়েছে তেলঙ্গানা (২৫৩), হরিয়ানা (২৩২), কর্নাটক (২২৬), অন্ধ্রপ্রদেশ (১৮০), পঞ্জাব (১৩৮)।
আক্রান্তের তালিকায় দেশের শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্র। সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এক লক্ষ ৬৯ হাজার ৮৮৩ জন। এর মধ্যে পাঁচ হাজার ২৫৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন গত ২৪ ঘণ্টায়। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তামিলনাড়ু ও দিল্লির আক্রান্তের সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় চার হাজার জন আক্রান্ত হওয়ায় তালিকার দ্বিতীয় স্থানে উঠে এল তামিলনাড়ু। সেখানে মোট আক্রান্ত ৮৬ হাজার ২২৪ জন। দিল্লিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৮৫ হাজার ১৬১ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
আক্রান্তের নিরিখে চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে রয়েছে গুজরাত (৩১,৯৩৮) ও উত্তরপ্রদেশ (২২,৮২৮)। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ (১৭,৯০৭), রাজস্থান (১৭,৬৬০), তেলঙ্গানা (১৫,৩৯৪), হরিয়ানা (১৪,২১০), অন্ধ্রপ্রদেশ (১৩,৮৯১), কর্নাটক (১৪,২৯৫), মধ্যপ্রদেশ (১৩,৩৭০)। এর পর আছে বিহার, অসম, জম্মু ও কাশ্মীর, ওড়িশা ও পঞ্জাবের মতো রাজ্য, যেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এখনও দশ হাজারের কম।
গত তিন চার দিন ধরে পশ্চিমবঙ্গে রোজ ৫০০ জনেরও বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন করোনায়। রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ৬২৪ জন। এই বৃদ্ধির জেরে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন ১৭ হাজার ৯০৭ জন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে রাজ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ৬৫৩ জন।
আক্রান্তের সংখ্যা রোজদিন বাড়লেও, করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যাও স্বস্তি দিচ্ছে দেশবাসীকে। এমনিতেই করোনা অ্যাক্টিভ রোগীর থেকে সুস্থ হয়ে উঠে ওঠার সংখ্যা এক লাখেরও বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩ হাজার ৯৯ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে মোট ৩ লক্ষ ৩৪ হাজার ৮২২ জন করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হলেন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)