রোজ দিন দেশে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। গ্রাফিক -শৌভিক দেবনাথ।
লাফ দিয়ে দিয়ে বাড়ছে ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১৯ হাজার ৪৫৯ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন কোভিডে। যার জেরে মোট আক্রান্তের সংখ্যা হল পাঁচ লক্ষ ৪৮ হাজার ৩১৮ জন। এ ভাবে রোজদিন আক্রান্ত বৃদ্ধি চিন্তা বাড়াচ্ছে চিকিৎসক-বিশেষজ্ঞ থেকে প্রশাসনের আধিকারিকদের।
আক্রান্তের পাশাপাশি বাড়ছে মৃত্যুও। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট ১৬ হাজার ৪৭৫ জন প্রাণ হারালেন করোনার কারণে। এর মধ্যে সাত হাজার ৪২৯ জন মারা গিয়েছেন মহারাষ্ট্রে। রাজধানী দিল্লিতে দু’হাজার ৬২৩ জন। তৃতীয় স্থানে থাকা গুজরাতে এক হাজার ৮০৮ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনা। হাজার পেরনোর তালিকায় ঢুকে পড়েছে তামিলনাড়ুও। সেখানে মৃতের সংখ্যা এক হাজার ৭৯ ছুঁয়েছে। উত্তরপ্রদেশ (৬৬০), পশ্চিমবঙ্গ (৬৩৯), মধ্যপ্রদেশ (৫৫৭), রাজস্থান (৩৯৯)-এ মৃত্যুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া শতাধিক মৃত্যুর তালিকায় রয়েছে তেলঙ্গানা (২৪৭), হরিয়ানা (২২৩), কর্নাটক (২০৭), অন্ধ্রপ্রদেশ (১৬৯), পঞ্জাব (১৩৩)।
আক্রান্তের নিরিখে সবার উপরে সেই মহারাষ্ট্র। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন সেখানে। সে রাজ্যে মোট আক্রান্তের সংখ্যা হল এক লক্ষ ৬৪ হাজার ৬২৬ জন। এর পরই দিল্লি ও তামিলনাড়ু। সেই দুই রাজ্যেই আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ছাড়িয়ে ছুটে চলেছে। দিল্লিতে মোট আক্রান্ত ৮৩ হাজার ৭৭ জন ও তামিলনাড়ুতে ৮২ হাজার ২৭৫ জন। আক্রান্তের নিরিখে চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে রয়েছে গুজরাত (৩১,৩২০) ও উত্তরপ্রদেশ (২২,১৪৭)। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ (১৭,২৮৩), রাজস্থান (১৭,২৭১), তেলঙ্গানা (১৪,৪১৯), হরিয়ানা (১৩,৮২৯), অন্ধ্রপ্রদেশ (১৩,২৪১), কর্নাটক (১৩,১৯০), মধ্যপ্রদেশ (১৩,১৯৬)। এর পর আছে বিহার, অসম, জম্মু ও কাশ্মীর, ওড়িশা ও পঞ্জাবের মতো রাজ্য, যেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এখনও দশ হাজারের কম।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
গত তিন চার দিন ধরে পশ্চিমবঙ্গেও গড়ে ৫০০ জন করে আক্রান্ত হচ্ছেন করোনায়। রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫৭২ জন। এই বৃদ্ধির জেরে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন ১৭ হাজার ২৮৩ জন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে রাজ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ৬৩৯ জন।
আক্রান্তের সংখ্যা যেমন রোজদিন বাড়লেও, করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যাও স্বস্তি দিচ্ছে দেশবাসীকে। এমনিতেই করোনা অ্যাক্টিভ রোগীর থেকে সুস্থ হয়ে উঠে হঠার সংখ্যাটা লক্ষাধিক বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ হাজার ১০ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে মোট ৩ লক্ষ ২১ হাজার ৭২৩ জন করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হলেন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)