ভারতে যে ভাবে করোনা-সংক্রমণের সংখ্যা বেড়ে চলেছে, তাতে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে দেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো। এই লড়াইয়ে চিকিত্সক, নার্সদের মতো প্রথম সারির যোদ্ধাদের জন্য অপরিহার্য হল পিপিই কিট বা বর্মবস্ত্র।
কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণে সেই কিট যোগান দেওয়াই এখন বড় চ্যালেঞ্জ। অনুন্নত মানের প্রচুর পিপিই কিট বাজারে থাকার যেমন অভিযোগ উঠছে, তেমনই উন্নত মানের পিপিই কিটের দাম যে অনেকটাই বেশি, সেটাও বলছেন অনেকে।
এই অবস্থায় বাজারের প্রায় অর্ধেক দামে উন্নত মানের পিপিই কিট বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিলেন উত্তরপ্রদেশের এক আইএএস অফিসার, অরবিন্দ সিংহ।
উত্তরপ্রদেশের একটি জেলা লখিমপুর খেরির স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা বিশ্বমানের বর্মবস্ত্র বানিয়ে সরবরাহ করছেন উত্তরপ্রদেশ এবং মধ্যপ্রদেশে নিযুক্ত ভারতীয় সেনাদের। এই কিট বানানো থেকে শুরু করে সরবরাহ, পুরোটাই তদারকি করছেন ওই আইএএস অফিসার।
গ্রামের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা কী ভাবে বিশ্বমানের পিপিই কিট বানাতে পারছেন? লখিমপুর খেরির চিফ ডেভেলপমেন্ট অফিসার অরবিন্দ সিংহ জানিয়েছেন সেই কথা।
তিনি এর নাম দিয়েছেন ‘অপারেশন কবচ’। অরবিন্দ সিংহ এর আগে দক্ষিণ কোরিয়া এবং হংকং-য়ে টেকনিক্যাল রিসার্চার-এর কাজ করতেন। সেই অভিজ্ঞতাই কাজে লাগিয়েছেন তিনি।
প্রথমে কাঁচামাল কেনা হয়। কাঁচামাল যথাযথ পরিমাণে মজুত হওয়ার পর এই কিট তৈরির জন্য প্রত্যেক মহিলাকে বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
‘অপারেশন কবচ’-এর অধীনে এই মুহূর্তে ছ’টা ব্লকের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর অধীনে ১৭৫ জন মহিলা রয়েছেন। তাঁরাই প্রস্তুত করে চলেছেন এই কিট। চাহিদা বাড়লে আরও কর্মী নিযুক্ত করার পরিকল্পনা করছেন তিনি।
যে ছ’টা ব্লকের মহিলারা পিপিই কিট বানাচ্ছেন, সেগুলো হল লখিমপুর খেরি, ইসানগর, নিঘাসান, পালিয়া, গোলা এবং মোহাম্মাদি।
রোজ এই ব্লকগুলোতে পৌঁছে যান অরবিন্দ। ঘুরে দেখেন প্রতিটা বর্মবস্ত্রের মান।
প্রতিটা পিপিই কিটের দাম পড়েছে ৪৯০ টাকা। লখনউয়ের সেনা হাসপাতাল ইতিমধ্যে দুই হাজার পিপিই কিট অর্ডার দিয়েছে।
তেমনই, লখনউ ক্যান্টনমেন্ট ৫২টি, কুমায়ুন ইন্ডোর ডিভিশন ২০টি এবং সশস্ত্র সীমা বল ৩০টি কিটের অর্ডার দিয়েছে।