নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।
করোনাভাইরাস অদৃশ্য শত্রু হতে পারে, কিন্তু এর বিরুদ্ধে যাঁরা লড়াই চালাচ্ছেন তাঁরাও কম কোনও অংশে কম নন। এই অদৃশ্য শত্রুকে হারিয়ে জয় হবে তাঁদেরই। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামিল স্বাস্থ্যকর্মী থেকে শুরু করে সকলের উদ্দেশে সোমবার এমনই বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এ দিন দেশের করোনা যোদ্ধাদের উদ্দেশে ভিডিয়ো কনফারেন্সে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী। করোনার বিরুদ্ধে যে ভাবে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন এই সৈনিকরা তার প্রশংসা করেন মোদী। তাঁদের উদ্দেশে মোদী বলেন, “অদৃশ্য বনাম অপরাজেয়দের লড়াই শুরু হয়েছে দেশে। করোনা অদৃশ্য শত্রু ঠিকই, কিন্তু আমাদের যোদ্ধারা, স্বাস্থ্যকর্মীরাও অপরাজেয়। এই যুদ্ধে নিশ্চিত ভাবে জয়ী হবেন তাঁরাই।”
কর্নাটকের রাজীব গাঁধী ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সেস-এর রজত জয়ন্তী উপলক্ষে ভাষণ দেন মোদী। করোনা পরিস্থিতি সামলাতে দেশের স্বাস্থ্যকর্মীরা কী ভাবে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন এই ভাষণেই তা তুলে ধরেন তিনি। করোনা মোকাবিলায় কর্নাটক সরকার যে পদক্ষেপ করেছে তারও প্রশংসা করেছেন মোদী। তিনি বলেন, “করোনা অতিমারিকে যে ভাবে কর্নাটক সরকার সামলাচ্ছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়।”
দেশের এই যোদ্ধাদের উপর কোনও রকম অন্যায় হলে তা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মোদী। তিনি বলেন, “আমি স্পষ্ট বলে দিতে চাই, করোনার বিরুদ্ধে যাঁরা সামনে দাঁড়িয়ে লড়াই করছেন, তাঁদের উপর কোনও রকম হিংসা, দুর্ব্যবহার বা হেনস্থার মতো ঘটনা ঘটলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” মোদী আরও বলেন, “কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে যাঁরা শুরু থেকেই নির্ভীক ভাবে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন সেই সব চিকিত্সক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা দেশের সেনাদের মতোই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন, শুধু সেনার ইউনিফর্মটা নেই ওঁদের!”
আরও পড়ুন: আক্রান্তে জার্মানি, ফ্রান্সকে টপকালো ভারত, মৃত্যুতে রাশিয়াকে
আরও পড়ুন: অজস্র ছাড় পঞ্চম দফায়, কিন্তু কলকাতা সচেতন আছে তো?
দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে আরও মজবুত করতে সরকার বেশ কয়েকটি বিষয়ের উপর জোর দিচ্ছে বলেও এ দিন জানান মোদী। তার মধ্যে রয়েছে— প্রিভেনটিভ হেলথ কেয়ার(প্রতিরোধী স্বাস্থ্য ব্যবস্থা), অ্যাফর্ডেবল হেলথ কেয়ার (সাধ্যের মধ্যে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা), ইমপ্রুভমেন্ট অন দ্যা সাপ্লাই সাইড ( সরবরাহের উন্নতি) এবং মিশন মোড ইমপ্লিমেন্টেশন ( লক্ষ্য নির্ভর রূপায়ণ)। প্যারা মেডিক্যাল কর্মীদের ঘাটতি পূরণের জন্য নতুন আইনও আনা হবে বলে জানিয়েছেন মোদী।
দেশে পঞ্চম দফার লকডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে। তার মধ্যে অনেক ক্ষেত্রেই ছাড় দেওয়া হয়েছে। নানা রকম পদক্ষেপের পরেও করোনা সংক্রমণের দিকে থকে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবিত ১০টি দেশের মধ্যে ৭ নম্বরে উঠে এসেছে ভারত। প্রতি দিনই সংক্রমণে নতুন রেকর্ড তৈরি করছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুও। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশে মোট আক্রান্ত এক লক্ষ ৯০ হাজার ৫৩৫। আক্রান্তের দিক থেকে জার্মানি এবং ফ্রান্সকেও টপকে গিয়েছে। মৃত্যুর নিরিখে ছাড়িয়ে গিয়েছে রাশিয়াকেও।