Coronavirus Lockdown

তিন জ়োনে ভেঙেই কি নতুন নীতিতে হবে লকডাউন?

সর্বত্র লকডাউন না-তুলে সংক্রমণ ও হট স্পটের নিরিখে গোটা দেশকে তিন বা তার বেশি জ়োনে ভাগ করা হোক। মত বিশেষজ্ঞদের।

Advertisement

অগ্নি রায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২০ ০৪:১৬
Share:

ছবি: পিটিআই।

কী হবে ১৪ এপ্রিলের পরে? লকডাউন কি উঠবে? না চালু থাকবে? করোনা নিয়ে উদ্বেগের পাশাপাশি এই প্রশ্নগুলোর উত্তর পেতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে ভারত। গত কাল মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে ধাপে ধাপে লকডাউন তোলার ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে এ-ও বলেছেন, সামনে কঠিন লড়াই অপেক্ষা করে রয়েছে।

Advertisement

বিশেষজ্ঞদের অনেকেই বিদেশের উদাহরণ দিয়ে বলছেন, সর্বত্র লকডাউন না-তুলে সংক্রমণ ও হট স্পটের নিরিখে গোটা দেশকে তিন বা তার বেশি জ়োনে ভাগ করা হোক। একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর প্রতিটি জ়োনের অবস্থা খতিয়ে দেখে লকডাউন তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক আলাদা আলাদা করে।

কাল বৈঠকে ধাপে ধাপে লকডাউন তোলার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও কিন্তু ইতিমধ্যেই লকডাউন আরও দু’সপ্তাহ বাড়ানোর জন্য অনুরোধ করেছেন। আজ রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌতও জানান, ‘‘১৪ এপ্রিল রাজ্যে লকডাউন তোলা সম্ভব নয় বলেই মনে হচ্ছে। আমার মনে হয় ভাগে ভাগে তা তুলতে হবে।’’ প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা কমিটির প্রাক্তন সদস্য শমিকা রবিও মনে করেন, বিভিন্ন জ়োনে ঢালাও পরীক্ষা করে দেখে সংক্রমণ নেই নিশ্চিত হওয়ার পরেই এক-এক করে জ়োনগুলি খুলে দেওয়া ভাল। তাতে ধীরে ধীরে জ়োনগুলিতে আর্থিক সচলতা তৈরি হবে। তবে আন্তঃরাজ্য যাতায়াত, ট্রেন চলাচলে বাড়তি সতর্কতার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। আজ এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের যুগ্মসচিব লব আগরওয়াল বলেন, এ নিয়ে আগাম জল্পনা করা উচিত নয়। সরকার কোনও সিদ্ধান্ত নিলে তা জানিয়ে দেওয়া হবে।

Advertisement

আরও পড়ুন: রোগী রাখতে ৩ ধরনের কেন্দ্র চাইছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বহু দেশই পরিস্থিতি দেখে ধাপে ধাপে লকডাউন তুলেছে। ভারতেরও সেই ভাবে এগোনো উচিত। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রথম যে জ়োনটি চিহ্নিত করা উচিত, সেটি হল অরুণাচলপ্রদেশ, মণিপুর, মিজোরাম, মণিপুর, পুদুচেরি, ঝাড়খণ্ড, গোয়া, হিমাচলপ্রদেশ, লাদাখ, ছত্তীসগড়, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের মতো ছোট রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি। এই এলাকাগুলিতে দেশের বাকি অংশের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা কম। আক্রান্তের সংখ্যাও সেখানে ২০ ছাড়ায়নি। এই জ়োনটিকে ১৫ তারিখ লকডাউন থেকে অনেকটাই শিথিলতা দিয়ে প্রায় স্বাভাবিক বাণিজ্যিক কাজকর্মে ফেরানোর কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

দ্বিতীয় যে জ়োনটি ওঁরা চিহ্নিত করতে চাইছেন, সেটি হল— পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, বিহার, পঞ্জাব, হরিয়ানা, অসম, চণ্ডীগড় এবং জম্মু ও কাশ্মীর। এই জ়োনে সংক্রমিতের সংখ্যা কোথাও ২৫০ ছাড়ায়নি। মৃতের সংখ্যাও দুই অঙ্কে পৌঁছয়নি। ওই জ়োনটিতে লকডাউন আংশিক শিথিল করার কথা ভাবা হচ্ছে। আর তৃতীয় জ়োনে রাখার কথা ভাবা হচ্ছে মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, গুজরাত, কেরল, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, তামিলনাড়ু, তেলঙ্গানা ও কর্নাটকের মতো রাজ্যগুলি। যা ভারতের বাণিজ্যিক হাবও বটে। এই রাজ্যগুলিতে সংক্রমণ এবং মৃত্যুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। সেখানে লকডাউনের কড়াকড়ি আপাতত বজায় রাখার পক্ষে সওয়াল করছেন বিশেষজ্ঞরা। ১৪ এপ্রিলের কাছাকাছি তারিখে ঠিক হবে লকডাউনের ভবিষ্যৎ।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement