ছবি: সংগৃহীত।
শুধু ব্যবসার কথা ভাবলে চলবে না, লকডাউনের সময়ে মানুষের আর্থিক সঙ্কটের দিকেও নজর দিতে হবে— বিভিন্ন ঋণের উপর সুদ মকুবের আর্জি নিয়ে করা মামলায় কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশে আজ এই মন্তব্য করেছে সুপ্রিম কোর্ট। কার্যত সমালোচনার সুরে শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিয়েছে, এই বিষয় নিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়াকে (আরবিআই) ঢাল করা ঠিক হবে না নরেন্দ্র মোদী সরকারের।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নির্দেশ ছিল, করোনা পরিস্থিতিতে চাইলে ছ’মাসের (মার্চ থেকে অগস্ট) কিস্তি না-ও দিতে পারেন ঋণগ্রহীতা। তবে যে ক’মাস ঋণশোধ স্থগিত থাকবে, তত দিন সুদ-সহ টাকা তো দিতে হবেই, সেই সঙ্গে ওই মাসগুলির সুদের উপরেও সুদ মেটাতে হবে। এতে গ্রাহকের উপর বাড়তি বোঝা চাপার
অভিযোগ ওঠে। ভয়ে অনেকে মোরাটোরিয়ামের সুযোগ নেননি। আরবিআইয়ের নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়। মামলাকারী আর্জি জানান, ওই সময়ের পুরো সুদ মকুব করা হোক। যদিও সুপ্রিম কোর্ট পুরো সুদ ছাড় নয়, সুদের উপরে সুদ নিয়ে কেন্দ্র ও আরবিআইয়ের অবস্থান জানতে চেয়েছিল।
আরবিআই আগেই জানিয়েছে, ঋণশোধ স্থগিতের সময়ে সুদ মকুব সম্ভব নয়। আজ কেন্দ্রের তরফেও বলা হয়, সুদ মকুবের সিদ্ধান্তে ব্যাঙ্কগুলির ও ব্যবসার ক্ষতি হবে। তখনই শীর্ষ আদালতের মন্তব্য, ‘‘এ সব হয়েছে, কারণ লকডাউন আপনারাই ঘোষণা করেছেন।’’
আগামী ১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কেন্দ্রকে অবস্থান জানাতে বলেছে শীর্ষ আদালত। কোর্ট বলেছে, দুর্যোগ মোকাবিলা আইন অনুযায়ী ছাড় দেওয়ার সুযোগ থাকলেও নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেনি কেন্দ্র। বিচারপতি অশোক ভূষণ কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, ‘‘আপনাদের ঘোষণা করা লকডাউনের জন্যই সমস্যা হয়েছে। আর এটা শুধু ব্যবসার কথা ভাবার সময় নয়। মানুষের দুর্দশার কথাও ভাবতে হবে। আপনাদের দু’টো বিষয় জানাতে হবে। এক, দুর্যোগ মোকাবিলা আইনের বিষয়টি। আর সুদের উপর সুদ নেওয়া হবে কিনা, সে কথাও জানাতে হবে।’’
আরবিআইকে ঢাল করতে পারবে না সরকার, কোর্টের তরফে এমন মন্তব্য আসায় জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেটা। বলেন, ‘‘শীর্ষ আদালত এ কথা বলছে ঠিকই, কিন্তু আমরা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সঙ্গে সমন্বয় রেখেই কাজ করছি।’’ আবেদনকারীর আইনজীবী কপিল সিব্বল বলেন, ৩১ অগস্ট ঋণশোধে স্থগিতাদেশের সময়সীমা শেষ হচ্ছে। সেই সীমা আরও বাড়ানো হোক।