চতুর্থ দফায় লকডাউনে নিয়ন্ত্রণ শিথিল হতে পারে অনেকটাই।—ফাইল চিত্র।
দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে। এমন পরিস্থিতিতে এখনই যে লকডাউন থেকে নিষ্কৃতি মিলছে না, তা আগেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। সোমবার থেকে দেশে চতুর্থ দফার লকডাউন শুরু হচ্ছে। তবে এ বার বেশ কিছু ক্ষেত্রে ছাড় পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। রবিবার দুপুর পর্যন্ত এ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কোনও নির্দেশিকা সামনে আসেনি। তবে দিল্লি সূত্রে খবর, চতুর্থ দফায় ৩১মে পর্যন্ত লকডাউন চললেও, নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই শিথিল করা হবে।
দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরাতে ইতিমধ্যেই একাধিক ‘শ্রমিক স্পেশাল’ ট্রেন চালিয়েছে রেলমন্ত্রক। গত সপ্তাহে দিল্লি থেকে বেশ কিছু প্যাসেঞ্জার ট্রেনও চলেছে। তবে চতুর্থ দফার লকডাউনে গণ পরিবহণে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে বলে কেন্দ্রীয় সরকারের একটি সূত্র জানিয়েছে। বলা হয়েছে, এ বার দেশের মধ্যে বিমান পরিবহণ চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। সড়ক পরিবহণের উপর থেকেও বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হতে পারে। চালু করা হতে পারে মেট্রো পরিষেবাও। তবে সব ক্ষেত্রেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা বাধ্যতামূলক হবে।
বিচ্ছিন্ন দোকানগুলিকে আগেই খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, এ বার শপিং মলগুলিকেও আংশিক ভাবে খোলার অনুমতি দেওয়া হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে জোড়-বিজোড় নিয়ম মেনে এগোতে পারে সরকার। কনটেনমেন্ট এলাকাগুলি বাদে শহরাঞ্চলে নির্মাণকাজেও অনুমতি দেওয়া হতে পারে।
আরও পড়ুন: শঙ্কা বাড়াচ্ছে সংক্রমণ, ৩১ মে পর্যন্ত লকডাউনের মেয়াদ বাড়াল মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু
নোভেল করোনাভাইরাসের প্রকোপে গত ২৫ মার্চ থেকে একটানা লকডাউন চলছে দেশে। মাঝে ২০ এপ্রিল গ্রিন ও অরেঞ্জ জোনগুলিতে নিয়ন্ত্রণ খানিকটা শিথিল করা হলেও, প্রায় দু’মাস হতে চলল জনজীবন একেবারে থমকে গিয়ছে। চতুর্থ দফাতেও বেশ কিছু নিয়ম কানুন চালু থাকবে বলে জানা গিয়েছে, তবে এ বারের লকডাউন যে একেবারেই অন্যরকম হতে চলেছে, গত সপ্তাহেই তা জানিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
আরও পড়ুন: ভোর থেকে কাশ্মীরের ডোডায় সঙ্ঘর্ষ, মৃত্যু ১ জওয়ানের, নিহত ১ জঙ্গিও
জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাস এখনও কিছুদিন আমাদের সঙ্গে থাকবে। কিন্তু তাই বলে এই ভাইরাস আমাদের জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করুক, তা তো হতে দিতে পারি না। এই ভাইরাসকে নিয়েই বাঁচতে হবে আমাদের। আমরা মাস্ক পরব, পরস্পরের থেকে ছ’ফুট দূরত্ব বজায় রাখব। কিন্তু কিছুতেই লক্ষ্যভ্রষ্ট হব না।’’
চতুর্থ দফায় লকডাউন কার্যকর করতে কী কী পদক্ষেপ করা যায়, এবং ধীরে ধীরে লকডাউন থেকে কী ভাবে বেরিয়ে আসা যায়, রাজ্যগুলিকে তার একটি ব্লুপ্রিন্টও তৈরি করতে বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেই মতো একাধিক রাজ্য নিজেদের মতামত কেন্দ্রকে জানিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তাদের মতামত নিয়েই চতুর্থ দফার লকডাউনের রূপরেখা তৈরি হয়েছে।
তবে দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা যে ভাবে বেড়ে চলেছে, তাতে কতটা ছাড় মিলবে তা নিয়ে সংশয়ও রয়েছে।কারণ রবিবারই দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৯০ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের নিরিখেও এ দিন নয়া রেকর্ড তৈরি হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া হিসাবে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশ ৪,৯৮৭ জন নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।