Coronavirus

থমকে গেল রেল-সাইট, বিঘ্ন টিকিটে

রেল রাতে ফের জানায়,  প্রযুক্তিগত কিছু ত্রুটি ঠিক করার কাজ চলছে। তার মধ্যেও রাত ৯টা পর্যন্ত ৩০ হাজার পিএনআরে প্রায় ৫৪ হাজার যাত্রীর টিকিট কাটা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২০ ০৫:০১
Share:

প্রায় দু’মাস বন্ধ থাকার পরে সীমিত আকারে পরিষেবা চালু করতে গিয়ে লেজেগোবরে অবস্থা রেলের। ভোগান্তি যাত্রীদের।

Advertisement

লকডাউনের শর্ত শিথিল হওয়ায় কাল দেশের ১৫টি গন্তব্যের উদ্দেশে ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় রেল। প্রথমে ঠিক ছিল আপাতত এক জোড়া ট্রেনই দৌড়বে একটি গন্তব্যে। কিন্তু আজ দুপুরে সিদ্ধান্ত বদলাল রেল। ঠিক হল আপাতত প্রতিটি গন্তব্যে আগামী এক সপ্তাহ ধরে ট্রেন চালানো হবে। সেই অনুযায়ী প্রস্তুত হতে বলা হয় টিকিট বিক্রির দায়িত্বে থাকা আইআরসিটিসি-কে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, এই মুহূর্তে যত মানুষ বিভিন্ন স্থানে আটকে রয়েছেন, তাঁদের ঘরে পৌঁছে দিতে বস্তুত সাত দিনের পরিষেবাও যথেষ্ট নয়। আরও বেশি দিনও ট্রেন চালাতে হতে পারে।

এ দিন ৪টেয় আইআরসিটিসি-র ওয়েবসাইট খোলা মাত্র তা বসে যায়। পরে রেলের পক্ষে টুইট করে জানানো হয়, সন্ধ্যা ৬ টা থেকে টিকিট কাটা যাবে ওই সাইটে। কিন্তু তাতেও বাধে বিপত্তি। অভিযোগ ওঠে, হাওড়া থেকে দিল্লিগামী টিকিট কাটা গেলেও, দিল্লি থেকে হাওড়ার টিকিট কাটতে পারছেন না যাত্রীরা। একই অভিযোগ দিল্লি থেকে ভুবনেশ্বরগামী ট্রেনের ক্ষেত্রেও। অস্বাভাবিক তাড়াতাড়ি টিকিট ফুরিয়েছে বলেও অভিযোগ কারও কারও। রেল রাতে ফের জানায়, প্রযুক্তিগত কিছু ত্রুটি ঠিক করার কাজ চলছে। তার মধ্যেও রাত ৯টা পর্যন্ত ৩০ হাজার পিএনআরে প্রায় ৫৪ হাজার যাত্রীর টিকিট কাটা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইটে দাবি করেছেন, অর্থনীতির চাকা গড়াতেই ট্রেন চালু করার সিদ্ধান্ত। তবে এখনই সব রুটে ট্রেন চালানো সম্ভব নয়।

Advertisement

যাত্রীদের শারীরিক পরীক্ষা হবে। তাই ট্রেন ছাড়ার দেড় থেকে দু’ঘণ্টা আগে স্টেশনে পৌঁছতে বলা হয়েছে। খাবারের দায়িত্বও যাত্রীর। তবে কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, মানুষের হাতে টাকা নেই। তাঁরা কোনও রকমে টিকিট কাটছেন। উচিত জল ও খাবার দেওয়া। বিছানার চাদরও নিয়ে আসতে বলা হয়েছে যাত্রীদের। কারণ রেলকর্তাদের একাংশ যাত্রীদের কম্বল দেওয়ার বিপক্ষে। কারণ এতে সংক্রমণ ছড়ানোর ভয় রয়েছে। তবে বন্ধ এসি কামরায় সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকির কথা মেনেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রকও।

মানতে হবে এই সব নিয়ম

• টিকিট বুকিং শুধু https://www.irctc.co.in এই সাইটে

• প্ল্যাটফর্ম টিকিট-সহ কোনও টিকিটই কাউন্টার থেকে পাওয়া যাবে না, সব কাউন্টার বন্ধ থাকবে

• কোনও তৎকাল বুকিং হবে না, আরএসি, ওয়েটিং লিস্ট থাকবে না

• ট্রেনের ২৪ ঘণ্টা আগে পর্যন্ত টিকিট ফেরত দেওয়া যাবে, টিকিটের দামের ৫০ শতাংশ ফেরত দেওয়া হবে

• ট্রেন ছাড়ার অন্তত ৯০ মিনিট আগে স্টেশনে পৌঁছতে হবে

• ট্রেনে ওঠার আগে যাত্রীদের স্ক্রিনিং করা হবে, করোনা-লক্ষণ থাকলে ট্রেনে উঠতে দেওয়া হবে না

• খাবারের ব্যবস্থা যাত্রীদেরই করতে হবে, প্যান্ট্রি কার থাকবে না, তবে শুকনো খাবার ও জলের বোতল বিক্রি করা হবে

• কম্বল, চাদর বা বালিশ দেওয়া হবে না

• সাধারণ সীমার থেকে বেশি রাখা হবে তাপমাত্রা, যতটা সম্ভব টাটকা বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করে শীতাতপ ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা হবে

• যাঁদের টিকিট রয়েছে, তাঁরাই স্টেশনে প্রবেশ করতে পারবেন

• বাড়ি থেকে স্টেশন পৌঁছনো যাত্রীর দায়

• যাত্রার সময়ে প্রত্যেক যাত্রীর মুখে মাস্ক বাধ্যতামূলক

• গন্তব্যস্থলে পৌঁছে সেই রাজ্যের নিয়ম মানতে বাধ্য থাকবেন যাত্রী

০২৩০১/২ হাওড়া-নয়াদিল্লি: স্টেশন

• আসানসোল জংশন

• ধানবাদ জংশন

• গয়া জংশন

• পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়

• প্রয়াগরাজ জংশন

• কানপুর সেন্ট্রাল

আরও পড়ুন: ১৮ই চালু হতে পারে ঘরোয়া উড়ান

কিন্তু প্রশ্ন হল, ট্রেন তো না-হয় চলবে। কিন্তু স্টেশন যদি রেড জ়োন হয় বা যাত্রী যদি রেড জ়োনের বাসিন্দা হন, তা হলে স্টেশনে পৌঁছবেন কী ভাবে? স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের যুগ্মসচিব পু্ণ্যসলিলা শ্রীবাস্তব বলেন, প্রতিটি জ়োনে যান চলাচলের নিয়ম যা, তা মেনে চলতে হবে। যাত্রীদের টিকিট তাঁদের পাস হিসেবে গণ্য হবে।

শুরুতে কেবল আইআরসিটিসি-র সাইটে টিকিট বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু আজ নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, যেখান থেকে ট্রেন ছাড়ছে সেখানে এবং গন্তব্য স্টেশনের সংরক্ষণ কাউন্টার খুলে রাখা হবে। কারণ অনেকের কাছে কাগজের টিকিট রয়েছে, যা কাউন্টারে বাতিল করতে হবে। এ ছাড়া সংরক্ষণ কাউন্টারের মাধ্যমে রেলকর্তা, বর্তমান ও প্রাক্তন সাংসদ-বিধায়ক এবং স্বাধীনতা সংগ্রামীরা যাতে টিকিট কাটতে পারেন, সেই জন্য তা খুলে রাখা হচ্ছে। প্রতিবন্ধী ও রেলকর্মীরা নিয়মানুযায়ী ছাড় পাবেন।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement