লকডাউনে কাজ হারিয়ে বাড়ি ফিরে এসেছেন লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক। ছবি: এএফপি।
উত্তরপ্রদেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগ করতে হলে এ বার থেকে আগে রাজ্য সরকারের অনুমতি নিতে হবে। করোনা পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরাতে হিমশিম খেতে হয়েছে। তার জেরে এ বার এমনই সিদ্ধান্ত নিল উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথের সরকার। কাজের সন্ধানে কাউকে যাতে বাইরে যেতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে পরিযায়ী শ্রমিক কমিশন গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
আগামী ৩১ মে চতুর্থ দফার লকডাউনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তার পর লকডাউন আর বাড়বে কিনা, তা নিয়ে এখনও কিছু পরিষ্কার ভাবে জানায়নি কেন্দ্রীয় সরকার। তবে লকডাউনের মধ্যেই দেশের অর্থনীতিতে গতি আনার চেষ্টা চলছে সর্বত্র। সেই নিয়ে সোমবার ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে সাংবাদিক বৈঠক করছিলেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। সেখানেই পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে রাজ্যের চিন্তা ভাবনার কথা জানান তিনি।
এ দিন যোগী বলেন, ‘‘শ্রমিকদের জন্য রাজ্যের মধ্যেই যাতে কর্মসংস্থান করা যায়, তার জন্য অফিসারদের একটি কমিশন গড়তে নির্দেশ দিয়েছি। অন্য রাজ্য এখান থেকে লোক নিতে চাইলে, সকলকে সামাজিক নিরাপত্তা এবং বিমার ব্যবস্থা করে দেব আমরা। কিন্তু সম্প্রতি পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, এ বার থেকে আমাদের অনুমতি ছাড়া এখান থেকে কারোকে অন্য রাজ্যে নিয়ে যাওয়া যাবে না।’’
আরও পড়ুন: বিমানে মাঝের আসনে যাত্রী কেন? সুপ্রিম কোর্টে তিরস্কৃত কেন্দ্র
গত ২৫ মার্চ থেকে একটানা লকডাউনের জেরে ব্যবসাপাতি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তার জেরে এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে যাওয়া লক্ষ লক্ষ মানুষ কাজ হারিয়েছেন। দু’বেলা দু’মুঠো খাবারটুকুও জোগাড় করতে পারছিলেন না অনেকেই। এমন পরিস্থিতিতে হেঁটে বাড়ি ফিরতে গিয়েও রাস্তায় প্রাণ হারিয়েছেন অনেকে। আবার সরকারের ব্যবস্থা করে দেওয়া বাসে-ট্রেনে চেপেও বাড়ি ফিরেছেন বহু মানুষ।
যদিও কর্নাটক এবং তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যগুলি বরাবরই পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরার বিপক্ষে ছিল। লকডাউন মিটলে নির্মাণ ও শিল্প সংস্থাগুলির কাজ শুরু হবে। সেই সময় শ্রমিকের প্রয়োজন পড়বে। তাই পরিযায়ী শ্রমিকদের রাজ্যে রেখে দেওয়ার পক্ষেই ছিল তারা। কিন্তু যে সংস্থার অধীনে কর্মরত ছিলেন পরিযায়ী শ্রমিকরা, সেখান থেকে বেতন পাচ্ছিলেন না তাঁরা। তাই বাড়ি ফিরতে বাধ্য হন অনেকে।
আরও পড়ুন: গাড়ি বিক্রি নেই, উৎপাদন বন্ধ, শুধু গুরুগ্রামের অটো হাবেই ছাঁটাই হতে পারেন ৩০ লক্ষ কর্মী
ভবিষ্যতে এরকম পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয়, তার জন্যই পরিযায়ী শ্রমিক সংগঠন গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন যোগী। তবে কী ভাবে রাজ্যর মধ্যেই পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজের বন্দোবস্ত করা হবে, অন্য রাজ্যগুলি কী ভাবে অনুমতি সংগ্রহ করবে, সে ব্যাপারে এখনও সবিস্তার কিছু জাননি তিনি। লকডাউন জারি হওয়ার পর গত দু’মাসে সব মিলিয়ে ২০ লক্ষের বেশি পরিযায়ী শ্রমিক উত্তরপ্রদেশে ফিরেছেন।