গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
ঘরমুখী পরিযায়ী শ্রমিকদের আটকানো বা তাঁদের উপরে নজরদারি সুপ্রিম কোর্টের পক্ষে অসম্ভব। আজ এক মামলার প্রেক্ষিতে এ কথা জানাল শীর্ষ আদালত। পথে পরিযায়ী শ্রমিকদের যাতে খাবার ও জলের সমস্যা না-হয়, সে ব্যাপারে কেন্দ্রকে নির্দেশ দেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন আইনজীবী আলখ আলোক শ্রীবাস্তব। তাঁর আবেদন খারিজ করে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে রাজ্য সরকারগুলিকে।
লকডাউন ঘোষণার কিছু দিন পরেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পরিযায়ী শ্রমিকেরা হেঁটে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। আইনজীবী শ্রীবাস্তব তাঁর আবেদনে জানিয়েছেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের চিহ্নিত করে তাঁদের খাবার ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করতে সুপ্রিম কোর্ট যেন কেন্দ্রকে নির্দেশ দেয়। ওই মামলায় বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাওয়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ বলেছে, ‘‘রাস্তায় পরিযায়ী শ্রমিকেরা হাঁটছেন, তাঁরা থামছেন না— কী করে তাঁদের থামাব? কে হাঁটছেন আর কে হাঁটছেন না, নজরদারি করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।’’ আবেদনে উল্লিখিত মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গাবাদে ট্রেন-দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে বেঞ্চ বলেছে, ‘‘কেউ যদি রেললাইনের উপরে ঘুমিয়ে পড়েন, সেটা কী ভাবে সুপ্রিম কোর্ট নজর রাখবে!’’
সংবাদপত্র পড়ে আইনজীবী শ্রীবাস্তব আবেদন করেছেন বলে তাঁকে কার্যত ভর্ৎসনা করেছে সুপ্রিম কোর্ট। বেঞ্চ বলেছে, ‘‘প্রত্যেক আইনজীবী খবরের কাগজে ঘটনাগুলি পড়ছেন এবং সব বিষয়ে জ্ঞানী হয়ে যাচ্ছেন। আপনি সব কিছু জানছেন ওই খবরের কাগজের মাধ্যমে এবং আপনি চাইছেন আদালত সিদ্ধান্ত নিক। এ ব্যাপারে রাজ্যগুলিকেই সিদ্ধান্ত নিতে দিন।’’ শ্রীবাস্তবকে আদালতের প্রশ্ন, ‘‘আমরা আপনাকে বিশেষ পাস দেব। দেশ ঘুরে আপনি সরকারের নির্দেশ কার্যকর করতে পারবেন?’’
আরও পড়ুন: ফেসবুক-সুন্দরীদের দিয়ে ফাঁদ পেতে নৌসেনার গোপন তথ্য পাচার, ধৃত পাক গুপ্তচর
এই মামলায় কেন্দ্রের তরফে হাজির ছিলেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। তিনি জানান, শ্রমিকদের ঘরে ফেরার জন্য ইতিমধ্যেই ব্যবস্থা করা হয়েছে। তুষার বলেন, ‘‘কেউ (পরিযায়ী শ্রমিক) যদি গাড়ির জন্য অপেক্ষা না-করেন, তা হলে সরকার কী করবে? প্রত্যেকে ঘরে ফেরার সুযোগ পাবেন।’’ আজ উত্তরপ্রদেশের কয়েকটি পথদুর্ঘটনায় ঘরমুখী ছ’জন শ্রমিক মারা গিয়েছেন। আহত ৯৫ জন। ক্লান্ত সন্তান সুটকেসের উপরে ঘুমিয়ে পড়েছে। সন্তান-সহ সেই সুটকেস টেনে নিয়ে চলেছেন এক পরিযায়ী মহিলা শ্রমিক। পঞ্জাব থেকে ঝাঁসি যাচ্ছিলেন তিনি। সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয় ভিডিয়োটি। ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে উত্তরপ্রদেশ ও পঞ্জাব সরকারকে নোটিস পাঠাল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। ওই ঘটনায় মন্তব্য করে বিতর্কে জড়ান আগরার জেলাশাসক প্রভুনারায়ণ সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘আমরা যখন ছোট ছিলাম, তখন বাবার সুটকেসের উপরে চেপে বসতাম।’’
দিল্লির এক আদালত আজ নির্দেশ দিয়েছে, সংবাদমাধ্যমে কী দেখানো হবে, তা কেউই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না। দিল্লির একটি বেসরকারি হাসপাতাল মানহানিকর বিষয় পরিবেশনের অভিযোগ তুলেছিল একটি হিন্দি চ্যানেলের বিরুদ্ধে। বিচারক মনমোহন শর্মা চ্যানেলটিকে জানান, তাদের কাছে থাকা তথ্যের পাশাপাশি, ওই হাসপাতালের বয়ানও তুলে ধরতে হবে।