ছবি: পিটিআই।
লকডাউনের সময়ে শ্রমিকদের বাধ্যতামূলক ভাবে মজুরি দেওয়ার নির্দেশ কার্যত প্রত্যাহার করল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। চতুর্থ দফার লকডাউনের জন্য জারি করা নির্দেশিকায় এই সংক্রান্ত নির্দেশ আর েনই। আগেই সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, লকডাউনের মধ্যে মজুরি দিতে না পারলে কোনও ছোট-মাঝারি সংস্থার বিরুদ্ধে এখনই শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা যাবে না। চলতি সপ্তাহে ফের এই মামলার শুনানি হবে।
গত কাল চতুর্থ দফার লকডাউনের নির্দেশিকা ঘোষণা করে কেন্দ্র। তাতে জানানো হয়, ওই নির্দেশিকার সংযোজনীতে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের অধীনে যে সব নির্দেশ রয়েছে, সেগুলিই ১৮ মে থেকে কার্যকর হবে। এর আগে ওই আইনে যে নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছিল, সেগুলি খারিজ হচ্ছে। ২৯ মার্চ জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে সংস্থা বন্ধ থাকলেও শ্রমিকদের মজুরি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্র। গত কালের সংযোজনীতে সেই নির্দেশ নেই।
আইনজীবী পূজা রামচন্দানির মতে, ১৭ মে পর্যন্ত সময়কালের জন্য কেন্দ্রের আগের নির্দেশিকাই বহাল থাকবে। তবে সুপ্রিম কোর্ট তা নিয়ে অন্য কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তবে শ্রমের বিষয়টি সংবিধানে কেন্দ্র-রাজ্যের যুগ্ম তালিকার অন্তর্ভুক্ত। ফলে রাজ্যগুলি এ নিয়ে আলাদা বিধি তৈরি করতে পারে।
আরও পড়ুন: সংক্রমণ লক্ষ ছুঁইছুঁই, কেন্দ্র তা-ও সন্তুষ্ট
আরও পড়ুন: লকডাউন বিধি মানা নিয়ে রাজ্যগুলোকে সতর্ক করল কেন্দ্র
সরকারের এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছে ট্রেড ইউনিয়নগুলি। এআইটিউসি-র সাধারণ সম্পাদক অমরজিৎ কউরের বক্তব্য, ‘‘গত কাল যখন আগের নির্দেশিকা বাতিল করছে সরকার তখন অর্থমন্ত্রী ত্রাণ প্রকল্পের শেষ কিস্তি ঘোষণা করছেন। যদি মজুরি দেওয়ার দায় সংস্থাগুলির উপরে চাপাতে সরকারের আপত্তি থাকে, তবে সেই দায় সরকার নিল না কেন? অর্থমন্ত্রী শেষ দফায় এ নিয়ে কোনও ঘোষণা করতে পারতেন না কি?’’ নিউ ট্রেড ইউনিয়ন ইনিশিয়েটিভের সাধারণ সম্পাদক গৌতম মোদীর বক্তব্য, ‘‘এই নির্দেশিকার ফলে মালিকেরা লকডাউনের সময়ে মজুরি দেওয়ার হাত থেকে বেঁচে গেলেন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘কোনও শ্রমিক কন্টেনমেন্ট জ়োন, রেড জ়োন, এমনকি অরেঞ্জ বা গ্রিন জ়োনে থাকলেও গণপরিবহণের অভাবে কাজে যোগ না দিতে পারতে পারেন। তাঁর দায়িত্ব কে নেবেন?’’
অন্য দিকে এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে শিল্পমহল। বণিকসভা সিআইআইয়ের শিল্প সম্পর্ক সংক্রান্ত কমিটির চেয়ারম্যান এম এস উন্নিকৃষ্ণনের মতে, ‘‘সরকার মজুরি খাতে পাওনা মেটানোর জন্য আর্থিক সাহায্য দেয়নি। ফলে আমাদেরও কাজ না হলে মজুরি নয়, এই নীতি নিতে হচ্ছে। আমরা সঙ্কটের সময়ে ন্যূনতম টাকা দেওয়ার পক্ষপাতী। কিন্তু সেই টাকা দেওয়ার মতো আয় কোথায়? অনেক দেশেই মজুরি খাতে পাওনা মেটাতে আর্থিক সাহায্য করেছে সরকার।’’