দেশের মধ্যে ঝাড়খণ্ডই প্রথম রাজ্য, যা করোনা রুখতে এতটা কড়া পদক্ষেপের করল। —ফাইল চিত্র।
লকডাউনের বিধিনিষেধ নিয়ে কড়াকড়ি হলেও বহু মানুষ এখনও বেপরোয়া। তবে এ নিয়ে কোনও রাজ্যই কড়া শাস্তির কথা ঘোষণা করেনি এখনও। এ বার সে রাস্তায় হাঁটল ঝাড়খণ্ড। ওই রাজ্যের হেমন্ত সোরেনের সরকারের ঘোষণা, লকডাউনের বিধিনিধেষ অগ্রাহ্য করলে দোষীর দু’বছর পর্যন্ত জেল বা ১ লক্ষ টাকা জরিমানা হবে। দেশের মধ্যে ঝাড়খণ্ডই প্রথম রাজ্য, যা করোনা রুখতে এতটা কড়া পদক্ষেপের করল।
লকডাউন অগ্রাহ্য করলে শাস্তির বিষয়ে একটি অধ্যাদেশের অনুমোদন করেছে ঝাড়খণ্ড ক্যাবিনেট। হেমন্ত সোরেনের সরকার জানিয়েছে, রাজ্যে করোনা রুখতে যে সমস্ত বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে, তা ভঙ্গ করলে শাস্তি হিসেবে ‘ঝাড়খণ্ড সংক্রামক রোগ অধ্যাদেশ ২০২০’ তৈরি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে একটি নোটে বলা হয়েছে বলা হয়েছে, ‘‘এই মুহূর্তে কোভিড-১৯-এর মোকাবিলায় মানুষজনের যাতায়াত, মাস্ক না পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখা, প্রকাশ্যে থুতু ফেলা এবং বিয়েবাড়ি বা অন্যান্য অনুষ্ঠানে জমায়েতের বিরুদ্ধে কোনও আইন নেই। এই অধ্যাদেশের ফলে সেগুলি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে। যে হেতু ঝাড়খণ্ড বিধানসভার অধিবেশন চলছে না, সে হেতু অধ্যাদেশের মাধ্যমে এই আইন করা হয়েছে।’’
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, করোনা-পরিস্থিতি মোকাবিলার পাশাপাশি এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে যে কোনও রোগকে ছোঁয়াচে বলেও আখ্যা দিতে পারবে ঝাড়খণ্ড সরকার। তবে এই অধ্যাদেশের আইনি স্বীকৃতি মিললেও এর প্রয়োগ কোন দফতরের মাধ্যমে করা হবে, তা এখনও নোটিসে জানানো হয়নি।
আরও পড়ুন: গণতন্ত্রে বিরুদ্ধ স্বরকে দমিয়ে দেওয়া যায় না, সুপ্রিম কোর্টে প্রাথমিক জয় পাইলট শিবিরের
আরও পড়ুন: চিন্তা বাড়াচ্ছে করোনা, ২৪ ঘণ্টায় ৪৫৭২০ নতুন সংক্রমণ, মৃত্যু ১১২৯
ঝাড়খণ্ডে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা দেশের অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় কম হলেও গত কয়েক দিন তা বেশ দ্রুত গতিতে বাড়ছে। এ দিন সকালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, ওই রাজ্যে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৬ হাজার ৪৯৫ জন। তার মধ্যে ৩ হাজার ৩৯৭ জন সক্রিয় করোনা রোগী। এঁদের মধ্যে সেরে উঠেছেন ৩ হাজার ২৪ জন। পাশাপাশি, ৬৪ জন সংক্রমিতের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘ভারতের শক্তি চিনকে বোঝানোর দরকার ছিল’, ফের মোদীকে বিঁধলেন রাহুল
আরও পড়ুন: কোন মাস্ক কতটা সুরক্ষিত, মাস্ক পরার সময় কী কী বিষয় খেয়াল রাখতেই হবে
সাড়ে তিন কোটি জনসংখ্যার রাজ্যের রাজধানী রাঁচী এবং জামশেদপুরের অবস্থাই সবচেয়ে সঙ্গীণ। রাঁচীতে প্রতি দিন একশো জন করে আক্রান্ত হচ্ছেন। রাজ্যবাসীর পাশাপাশি চলতি মাসে রাজ্যের দুই বিধায়ক-সহ এক মন্ত্রীও কোভিড পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজ্যে আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত কড়া লকডাউনের বিধিনিষেধ জারি করলেও গত ২৪ ঘণ্টায় ৫১৮টি কোভিড রোগীর সন্ধান মিলেছে। রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপকে স্বৈরতান্ত্রিক বলে সমালোচনা করেছে বিরোধী দল বিজেপি। তবে এ দিন ক্যাবিনেট বৈঠকের পর ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন বলেন, ‘‘মাঝেমধ্যে কড়া পদক্ষেপ করতে হয়।’’